সংস্কারে ঐকমত্য হয়ে তারপর নির্বাচন: জামায়াত
Published: 15th, February 2025 GMT
সংস্কারে ঐকমত্য হওয়ার পরই জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘আমরা বলেছি যে সংস্কার প্রয়োজন। সেই সংস্কারে আমরা ঐকমত্য হই, তারপর যথাশিগগির সম্ভব নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা তো বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ওনারা করবেন। আমরা সেটা দেখছি।’
আজ শনিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি থেকে বেরিয়ে এ কথা বলেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে দলটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, সব ইতিবাচক সিদ্ধান্তে জামায়াতে ইসলামী সমর্থন জানাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি এই সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার পর যাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যথাসম্ভব সেই প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য।’
ঐকমত্য কমিশন সংস্কার নিয়ে বিস্তারিত বই আকারে দেবেন উল্লেখ করে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সেটা পর্যালোচনা করে জামায়াতে ইসলামী এবং যে টিম (সংস্কার কমিশনগুলো) আছে সরকারের, তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক হবে, মতবিনিময় হবে। সেখানেই জামায়াতের মূল সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঐকমত য
এছাড়াও পড়ুন:
উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে একমত হলেও বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় এনসিপি
সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) বিষয়ে একমত পোষণ করলেও এটি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঐকমত্যের বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন, যার পদ্ধতি এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। ফলে একটি অস্পষ্টতা থেকেই গেছে।’
আজ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আখতার হোসেন।
উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সেই রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনকে কার্যকর আলোচনা জন্য আহ্বান জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এনসিপির পক্ষ থেকে উচ্চকক্ষে সংবিধান সংশোধনের জন্য ‘টু-থার্ডস মেজরিটি’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিতরা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন—এমন কথা বলা হলেও, বিশ্বজুড়ে এফপিটিপি (যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান) ও পিআর উভয় পদ্ধতিতেই বৈধতা রয়েছে। পিআর পদ্ধতিতেও জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।
কমিশনের প্রস্তাবিত বাস্তবায়ন সময়সীমাকে এনসিপি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানান দলটির সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সিদ্ধান্তগুলো তৎক্ষণাৎ কার্যকর হোক।’ তিনি বলেন, ‘১ শতাংশ ভোট পেলেও যেন একটি দল একজন করে প্রতিনিধি উচ্চকক্ষে পাঠাতে পারে—এটি বহু মতের ও বহু দলের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। আইন পাসের আগে যদি উচ্চকক্ষে আলোচনা হয়, তাহলে ভুলত্রুটি ধরার সুযোগ তৈরি হবে এবং সংসদের বাইরে জনপরিসরেও আইন নিয়ে আলোচনা গড়ে উঠবে।’
‘বর্তমানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যেভাবে দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে, সেটা যেন না হয়’ উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব থাকলে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।’
উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘অনেকে বলছেন, পিআর পদ্ধতিতে হলে তাঁরা উচ্চকক্ষ চান না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—তাঁরা আদৌ উচ্চকক্ষ চান কি না। আমরা বিশ্বাস করি, ১০০ আসনের এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশ একদল বা দুই দলের কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে বহু দলের অংশগ্রহণে পরিচালিত হবে। এতে গণতন্ত্রচর্চার নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।’
আলোচনার সময় সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক নিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আখতার হোসেন। যদিও কিছু দল ভিন্নমত পোষণ করেছে, তবে সার্বিকভাবে একটি ঐকমত্যের জায়গায় কমিশন পৌঁছেছে বলেও তিনি দাবি করেন।
আলোচনার শেষভাগে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে, যেখানে প্রতিনিধিরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। এ কক্ষে নিম্নকক্ষ থেকে পাঠানো বিল সর্বোচ্চ দুই মাস আটকে রাখা যাবে এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ‘সিম্পল মেজরিটি’র কথা বলা হয়েছে।