বালু উত্তোলনে বাধা, জেলেকে পিটিয়ে সাগরে নিক্ষেপ
Published: 17th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে সন্দ্বীপ চ্যানেলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় বাধা দেওয়ায় রাম জলদাস (৩২) নামের এক জেলেকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাঁর ছোট ভাই লিটন জলদাসকে (২৭) অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশ, কুমিরা নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের শরণাপন্ন হন। নিখোঁজ রাম জলদাসের বাড়ি বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নে।
ওই এলাকার জেলে প্রদীপ জলদাস প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে রাম জলদাস ও তাঁর ভাই লিটন জলদাস মাছ ধরার জন্য সন্দ্বীপ চ্যানেলে যান। তাঁদের জাল যেখানে বসানো রয়েছে, সেখানে দখলদার একদল লোক বালু উত্তোলন করছিলেন। ফলে জালের খুঁটি ভেঙে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। এতে বাধা দেন রাম জলদাস। এরপর শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি। এ সময় বালু উত্তোলন করতে থাকা লোকজন একটি লোহার রড দিয়ে রাম জলদাসের মাথায় আঘাত করে সাগরে ফেলে দেন। ভাইকে সাগরে ফেলে দেওয়ার পর চিৎকার করতে থাকেন লিটন জলদাস। এ সময় তাঁকে নৌকা থেকে একটি বাল্কহেডের তুলে নিয়ে নোয়াখালীর দিকে চলে যায় দুষ্কৃতকারীরা। পরে বাল্কহেড থেকে লিটন জলদাস তাঁর এক বন্ধুকে ফোন করেন। এরপর খবরটি জানাজানি হয়।
প্রদীপ জলদাস প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের এলাকায় বালু উত্তোলনকারী বাল্কহেড চলাচলের জন্য সাগরে বসানো জাল কেটে দিচ্ছিল দুষ্কৃতকারীরা। তাঁরা বাধা দিলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তাঁরা বিষয়টি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কিছু হয়নি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী লোকজন জেলেদের জাল কেটে দেওয়ার অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তিনি মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও করেছেন। কিন্তু বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। কয়েক দিন আগে তিনজন বালু উত্তোলনকারীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। এলাকার জেলে সর্দার তাঁকে জানান, বালু উত্তোলনকারী লোকজন তাঁদের এলাকার এক জেলেকে রোড দিয়ে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর এক ভাইকে অপহরণ করেছেন। তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলায় ইউএনওকে জানান।
ইউএনও ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এক জেলেকে মারধর করে সাগরে ফেলে দেওয়ার খবর পেয়ে তিনি কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ এবং থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এ নিয়ে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ এবং সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশ কাজ করছে বলে জানান। উদ্ধারে অংশ নিয়েছেন সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরাও।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।