Samakal:
2025-05-01@14:01:41 GMT

জীবনের বাঁকে বাঁকে

Published: 17th, February 2025 GMT

জীবনের বাঁকে বাঁকে

রিকশার হর্নের শব্দে ভাবনার জগতে হঠাৎ ছেদ পড়লে পেছনে ফিরে তাকালাম। একটা জলজ্যান্ত যুবকের ভাবনার জগতে খেই হারিয়ে ফেলার অপরাধে বেশ কর্কশ ভাষায় কটু কথা শুনিয়ে দিল চালক। দোষ যখন নিজের তখন কিছু না বলেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নিয়ন্ত্রিত মস্তিষ্কে রাস্তার বাম পাশ ধরে হাঁটছি। ইদানীং বাবার ডায়াবেটিস বেড়েছে। ইনসুলিনের টাকা পাঠাতে হবে। এদিকে আমার ফরম ফিলাপও করা হয়নি। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে এই আশায় ছুটে চলছি। সেই শৈশব থেকে কৈশোর কত কিছুর সঙ্গেই না যুদ্ধ করে চলেছি। 
পরিবারে অভাব-অনটন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কোনোদিন খাবার জুটত, কোনোদিন জুটত না। পেটে খেলে তো পিঠে সয়। অগত্যা হক বাড়িতে গিয়ে গরুর ঘাস কেটে দিতাম। শীতের কনকনে ঠান্ডায় শুকিয়ে যাওয়া পুকুরের নোংরা জলে সাঁতার কেটে কাদা ঘেঁটে ঘেঁটে হরেক রকমের মাছ ধরতাম। বিনিময়ে পাতিলের গায়ে লেপ্টে থাকা এক প্লেট সাদা ভাত পেতাম। অভুক্ত পেটে সেটাই যেন আমার কাছে অমৃতের মতো ছিল। পাতিলের শেষের ভাত হওয়ায় মাঝেমধ্যে সাদা পাথরও পেতাম। অভাবী সংসারে যাদের জন্ম তাদের পাথর খুব একটা ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না।
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল হলুদ বিকেলে হৈহুল্লোড় করা শৈশব আর আত্মসম্মানের আত্মাহুতিতে লেখা হচ্ছিল একেকটা বিসর্জনের গল্প। হতাশাকে পাশ কাটিয়ে দূরের আকাশে দৃষ্টি রাখতাম। যেমন করে একজন স্নাইপার তার লক্ষ্যে অবিচল থাকে ঠিক তেমনি। শৈশব থেকে যৌবনের দীর্ঘ পথচলায় স্বর্ণলতার মতো আঁকড়ে ধরেছিলাম কৈশোর।
গাধার পিঠে সওয়ার হয়েছে বৈপ্লবিক সময়। পেছনে ফেলে এসেছি সাপের খোলস পাল্টানো জীবন। ভোঁতা কাস্তের আড়াই কোপে কেটেছি দূর্বাঘাসের মাথা.

..। নাটাইয়ের সুতার মতো কেটে কেটে কতবার যে কেটে গেল শরীর তার কোনো হিসাব রাখতে পারিনি কোনোদিন।
ভাগ্য ফেরাতে শহরের বুকে পা রেখেছি অনেকদিন হলো। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি মেনে চিংড়ির মতো পুড়ে পুড়ে লাল হলো যৌবন। তবু বদলায়নি কোনো কিছু। আজও ছাইয়ে পোড়া আলুর বুক চিড়ে মেখে দেওয়া লবণে একটা আস্ত সাগর খেয়ে ফেলি। স্বভাবী সংসারে আজও অভাবী আমার দিনলিপি। আজও দেখি রাতের শরীরে রাত নামে। শুধু আমার ভাগ্যের শরীরে কতগুলো ক্ষত নিয়ে পড়ে আছি, শুধুই বেঁচে থাকার ভান ধরে। তবু মনে হয় আমার সব আছে, শুধু নেই পান্তা ভাতে সাঁতার কাটা মায়ের ক’টা আঙুল। 
সুহৃদ ঢাকা

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩ 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় মঞ্জু টেক্সটাইলে এন্ড ডাইং কারখানায় গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে কারখানার দুই নিরাপত্তাকর্মীসহ তিন জন দগ্ধ হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুল হান্নান, গার্ড কবির হোসেন ও সিনিয়র অফিসার সাইফুল ইসলাম।

কারখানার সুপারভাইজার মিজানুর জানান, নাইট ডিউটি শেষে সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা চলে যাওয়ার ঠিক পরপরই তিতাস গ্যাস সংযোগের আরএমএস রুমে গ্যাসের অতিরিক্ত চাপে বিকট শব্দে একটি দেয়াল ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীসহ তিনজন দগ্ধ হন। বিস্ফোরণ ও আগুনের তীব্রতায় আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ, সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক

মাইক্রোবাসে বিস্ফোরণ, অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ৫ ছাত্রনেতা

তিনি জানান, কারখানায় দায়িত্বে থাকা টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত গ্যাসের চাবি বন্ধ করে নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দগ্ধ তিনজনকে দ্রুত রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। আগুনে কারখানার কিছু কাপড় ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ইউনিট সেখানে যায়। তবে তার আগেই কারখানার লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। বিস্ফোরণ ও আগুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি তিনজন দগ্ধ হয়েছেন এবং তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/অনিক/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ