Samakal:
2025-08-02@04:00:01 GMT

জীবনের বাঁকে বাঁকে

Published: 17th, February 2025 GMT

জীবনের বাঁকে বাঁকে

রিকশার হর্নের শব্দে ভাবনার জগতে হঠাৎ ছেদ পড়লে পেছনে ফিরে তাকালাম। একটা জলজ্যান্ত যুবকের ভাবনার জগতে খেই হারিয়ে ফেলার অপরাধে বেশ কর্কশ ভাষায় কটু কথা শুনিয়ে দিল চালক। দোষ যখন নিজের তখন কিছু না বলেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নিয়ন্ত্রিত মস্তিষ্কে রাস্তার বাম পাশ ধরে হাঁটছি। ইদানীং বাবার ডায়াবেটিস বেড়েছে। ইনসুলিনের টাকা পাঠাতে হবে। এদিকে আমার ফরম ফিলাপও করা হয়নি। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে এই আশায় ছুটে চলছি। সেই শৈশব থেকে কৈশোর কত কিছুর সঙ্গেই না যুদ্ধ করে চলেছি। 
পরিবারে অভাব-অনটন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কোনোদিন খাবার জুটত, কোনোদিন জুটত না। পেটে খেলে তো পিঠে সয়। অগত্যা হক বাড়িতে গিয়ে গরুর ঘাস কেটে দিতাম। শীতের কনকনে ঠান্ডায় শুকিয়ে যাওয়া পুকুরের নোংরা জলে সাঁতার কেটে কাদা ঘেঁটে ঘেঁটে হরেক রকমের মাছ ধরতাম। বিনিময়ে পাতিলের গায়ে লেপ্টে থাকা এক প্লেট সাদা ভাত পেতাম। অভুক্ত পেটে সেটাই যেন আমার কাছে অমৃতের মতো ছিল। পাতিলের শেষের ভাত হওয়ায় মাঝেমধ্যে সাদা পাথরও পেতাম। অভাবী সংসারে যাদের জন্ম তাদের পাথর খুব একটা ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না।
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল হলুদ বিকেলে হৈহুল্লোড় করা শৈশব আর আত্মসম্মানের আত্মাহুতিতে লেখা হচ্ছিল একেকটা বিসর্জনের গল্প। হতাশাকে পাশ কাটিয়ে দূরের আকাশে দৃষ্টি রাখতাম। যেমন করে একজন স্নাইপার তার লক্ষ্যে অবিচল থাকে ঠিক তেমনি। শৈশব থেকে যৌবনের দীর্ঘ পথচলায় স্বর্ণলতার মতো আঁকড়ে ধরেছিলাম কৈশোর।
গাধার পিঠে সওয়ার হয়েছে বৈপ্লবিক সময়। পেছনে ফেলে এসেছি সাপের খোলস পাল্টানো জীবন। ভোঁতা কাস্তের আড়াই কোপে কেটেছি দূর্বাঘাসের মাথা.

..। নাটাইয়ের সুতার মতো কেটে কেটে কতবার যে কেটে গেল শরীর তার কোনো হিসাব রাখতে পারিনি কোনোদিন।
ভাগ্য ফেরাতে শহরের বুকে পা রেখেছি অনেকদিন হলো। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি মেনে চিংড়ির মতো পুড়ে পুড়ে লাল হলো যৌবন। তবু বদলায়নি কোনো কিছু। আজও ছাইয়ে পোড়া আলুর বুক চিড়ে মেখে দেওয়া লবণে একটা আস্ত সাগর খেয়ে ফেলি। স্বভাবী সংসারে আজও অভাবী আমার দিনলিপি। আজও দেখি রাতের শরীরে রাত নামে। শুধু আমার ভাগ্যের শরীরে কতগুলো ক্ষত নিয়ে পড়ে আছি, শুধুই বেঁচে থাকার ভান ধরে। তবু মনে হয় আমার সব আছে, শুধু নেই পান্তা ভাতে সাঁতার কাটা মায়ের ক’টা আঙুল। 
সুহৃদ ঢাকা

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়ার কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘অত্যন্ত উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন ‘যথাযথ অঞ্চলে মোতায়েন’ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

শুক্রবার (১ আগস্ট) ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “ওই মন্তব্য় যদি নেহাতই বোকামি ও উস্কানিমূলক বক্তব্য না হয়ে, তার থেকে বেশি কিছু হয়, তাই আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।” খবর বিবিসির।

ট্রাম্প আরো লিখেছেন যে, “শব্দগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাবও অপ্রত্যাশিত হতে পারে। তবে আশা করি এই বিবৃতি তেমন কিছু ঘটাবে না।” 

আরো পড়ুন:

পুতিনকে এবার ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প

পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প

মার্কিন সামরিক প্রোটোকল মেনে দুটি সাবমেরিন কোথায় মোতায়েন করা হচ্ছে, তা তিনি বলেননি।

একদিন আগেই ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে মস্কোকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপরই প্রতিক্রিয়া দেন মেদভেদেভ।

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ, যিনি বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, তার অত্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্যের ভিত্তিতে, আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে উপযুক্ত অঞ্চলে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।”

ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক চালিত নাকি পারমাণবিক অস্ত্রধারী সাবমেরিনের মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন, তা খোলাসা করেননি। 

রাশিয়া এবং আমেরিকার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে এবং উভয় দেশেরই পারমাণবিক সাবমেরিনের বহর রয়েছে।

শুক্রবার পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “একটি হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা এটিকে উপযুক্ত মনে করিনি। তাই আমাকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “আমি মার্কিন জনগণের নিরাপত্তার ভিত্তিতে এটি করেছি। রাশিয়ার একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছিলেন। এবং আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করব।”

ক্রেমলিন এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেনি, তবে ট্রাম্পের বক্তব্যের পর মস্কোর শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে।

সম্প্রতি ট্রাম্প এবং মেদভেদেভ সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তিগত আক্রমণে জড়িয়ে পড়েছেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দুই দফায় নতুন করে সময় বেধে দিয়েছেন, তবে যুদ্ধ থামানোর কোনো লক্ষণ পুতিন এখনও দেখাননি।

মেদভেদেভ- যিনি ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন- এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘রাশিয়ার সঙ্গে আল্টিমেটাম খেলা’ খেলার অভিযোগ করেছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে মেদভেদেভ বলেছিলেন, “প্রতিটি নতুন আল্টিমেটাম একটি হুমকি এবং যুদ্ধের দিকে একটি পদক্ষেপ।”

এর আগে, তিনি জুলাইয়ের শুরুতে তিনি ট্রাম্পের আল্টিমেটামকে ‘নাটকীয়’ বলে অভিহিত করে বলেছিলেন, “রাশিয়া এসবের পরোয়া করে না।”

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) টেলিগ্রামে একটি পোস্টে মেদভেদেভ ট্রাম্পকে রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ সম্পর্কে সতর্ক করেন। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘ডেড হ্যান্ড’ হলো রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক পারমাণবিক হামলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কোডনাম।

এরপরই শুক্রবার ট্রাম্প মেদভেদেভের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি  মেদভেদেভকে ‘রাশিয়ার ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট, নিজেকে এখনো প্রেসিডেন্ট বলে ভাবেন’ বলে কটাক্ষ করেন। 

ট্রাম্প মেদভেদেভকে ‘তার কথার দিকে নজর রাখার’ বিষয়ে সতর্কও করে বলেন, “তিনি খুব বিপজ্জনক অঞ্চলে প্রবেশ করছেন!”

মেদভেদেভ ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণকে সমর্থন করেন এবং পশ্চিমাদের একজন স্পষ্ট সমালোচক।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ