রাতে মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে এএসআই, স্থানীয়দের লাঠিপেটা
Published: 19th, February 2025 GMT
রাজশাহীতে এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) পেয়ে লাঠিপেটা করা হয়েছে। এ সময় স্থানীয়দের জেরার মুখে এএসআই বলেছেন, তিনি কলমা পড়ে বিয়ে করেছেন। তবে ওই নারীর স্বামী দাবি করেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়নি। জবাবে স্ত্রী বলেন, মুখে মুখে তিনি তালাক দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাতবাড়িয়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই এএসআইকে নগরের মতিহার থানার পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।
এএসআইয়ের নাম সোহেল রানা। তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত।
এদিকে এ ঘটনায় একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন ওই নারী ও এএসআইকে নানা জেরা করছেন। জেরার ফাঁকে ফাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানোও হচ্ছে। ওই নারীকেও মারধর করা হয়। এ সময় নারীকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রচুর মেরেছে, প্রচুর।’ জেরার মুখে এএসআই বলেন, তার স্ত্রী-সন্তান আছে। এই নারীকে তিনি কলমা পড়ে বিয়ে করেছেন। তবে ঘরে উপস্থিত ওই নারীর স্বামী বলতে থাকেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদই হয়নি। ওই নারী বলতে থাকেন, স্বামীকে তিনি মুখে মুখে তালাক দিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। তাকে ঘরে আটকে রেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার আগে অল্প বয়সী কয়েকজন লাঠি দিয়ে এএসআইকে পেটায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, এএসআই সোহেল রানার ডিউটি ছিল রাতে। তিনি একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ডিউটি করতে মতিহার থানা এলাকায় গিয়েছিলেন। তারপর রাত একটার দিকে আটক হওয়ার খবর পেয়েছি। এখন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই হবে।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারি। তার বাড়ি নগরের ডাসমারী মধ্যপাড়ায়। তিনি মাদক মামলায় বছর দেড়েক জেলে ছিলেন। এই সময়ে ওই নারী বাবার বাড়ি চলে যান। স্বামী জামিনে বের হলেও তিনি তার বাড়ি আসছিলেন না।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এএসআই সোহেল এখনও মতিহার থানাতেই আছেন। পরিস্থিতি খারাপ দেখেই তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। থানা থেকে বলা হচ্ছে, তিনি ওই নারীকে অটোরিকশা কিনে দিয়েছিলেন। তার ভাড়া নিতে গিয়েছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মত হ র থ ন ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে মাদক মামলার আসামিকে ধরতে গিয়ে হামলায় এএসআইসহ আহত ৩
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় মাদক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে ধরতে গিয়ে পুলিশের দুই সদস্যসহ তিনজন হামলার শিকার হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ওমর ফারুক, কনস্টেবল নাজমুল আহসান ও স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন মিয়া।
এদিকে হামলার ঘটনায় করা মামলায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ি এলাকার হাবিবুর রহমান (৫৫) ও জোহরা বেগম (৪৫)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ি গ্রামের মাজম আলীর (৪০) বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। গতকাল বিকেল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে যায় নালিতাবাড়ী থানা-পুলিশের একটি দল। এ সময় মাজম আলীসহ কয়েকজন পোড়াবাড়ি এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়ির রান্নাঘরে বসে ইয়াবা কেনাবেচা করছিলেন। তখন দলটি অভিযানে গেলে আসামির স্বজনেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এতে ওই এএসআই ও কনস্টেবল আহত হন। আসামির স্বজনদের ঠেকাতে গিয়ে হামলার শিকার হন স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন মিয়া। পরে তাঁদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ওমর ফারুক ও শাহীন মিয়া।
পুলিশ জানায়, হামলার ঘটনার পর গত রাতেই অভিযান চালিয়ে জড়িত সন্দেহে হাবিবুর ও জোহরাকে আটক করা হয়। পরে রাতে মামলার পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।