বিদ্রোহী ১৮ জনকে বাদ দিয়ে নারী ফুটবল দল ঘোষণা
Published: 20th, February 2025 GMT
ঝামেলাটা শুরু হয়েছিল ২০২৪ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালিন। এরপর সময় যতো গড়িয়েছে ততো সেটা বেড়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত জাতীয় নারী দলের বিপক্ষের দুটি প্রীতি ম্যাচকে সামনে রেখে কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন সাবিনা খাতুনসহ ১৮ ফুটবলার। তারা ব্রিটিশ কোচের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করতে অস্বীকৃতি জানান।
বিষয়টি নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার আরব আমিরাত সফরের জন্য ২৩ সদস্যের নারী ফুটবল দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অনুমিতভাবেই সেই দল থেকে বাদ পড়েছেন বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলার। তবে অক্টোবরে সাফজয়ী দলের ৮ ফুটবলার সুযোগ পেয়েছেন দলে। তারা হলেন- মিলি আক্তার, ইয়ারজান বেগম, আফঈদা খন্দকার, কোহাতি কিসকু, আইরিন খাতুন, শাহেদা আক্তার রিপা ও স্বপ্না রানী।
এছাড়া প্রথমবারের মতো দলে জায়গা পেয়েছেন ১০ ফুটবলার। আর বাকি ১৩ জন হলেন শুরু থেকেই ক্যাম্পে থাকা।
আরো পড়ুন:
টানাপোড়ন শেষে বিদ্রোহের অবসান
হামজাকে রেখে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
তারুণ্য নির্ভর দলটির বিষয়ে কোচ বাটলার বলেছেন, ‘‘এটি ২৩ জন খেলোয়াড়ের মিশ্রিত দল, যারা সফরে যাচ্ছে। কিছু খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞ। কিছু একেবারেই নতুন। তরুণ্য নির্ভর একটি দল। তাদের সময় দিতে হবে। তাদের নিয়ে ধৈর্য্য ধরতে হবে। তারা ভুল করবে। আমরা সবাই ভুল করি। আর এভাবেই আমরা শিখি।’’
‘‘তাদেরকে সময় দেওয়া হবে। দুই দলে ভাগ করে খেলানো হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- তারা সেখানে যাবে, কঠোর পরিশ্রম করবে, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ভালো পারফরম্যান্স করার চেষ্টা করবে।’’ যোগ করেন কোচ।
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ২ মার্চ খেলবে দ্বিতীয় ম্যাচ।
২৩ সদস্যের বাংলাদেশ দল:
গোলরক্ষক:
ইয়ারজান বেগম, মিলি আক্তার ও মেঘলা রায়।
রক্ষণভাগ:
সুরমা জান্নাত, কোহাতি কিসকু, আফিদা খন্দকার, অর্পিতা বিশ্বাস, জয়নব বিবি, মরিয়ম বিনতে ও কানোম আক্তার।
মধ্যমাঠ:
হালিমা আক্তার, স্বপ্না রানী, ঐশী খাতুন, মুনকি আক্তার, তনিমা বিশ্বাস, বন্যা খাতুন, অয়ন্ত বালা, শাহেদা আক্তার রিপা ও আইরিন খাতুন।
আক্রমণ ভাগ:
মোসাম্মৎ সুলতানা, সুরভী আকন্দ প্রীতি, নবীরণ খাতুন ও আকলিমা খাতুন।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।