বরফঠান্ডায় ফুটবল: একটি ‘মেসি–পদ্ধতি’
Published: 21st, February 2025 GMT
‘মাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আপনার গোল দরকার, মেসি আছে না!’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে এ কথা।কানসাসের চিলড্রেনস মার্কি পার্কের দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ায় খেলতে নামাটাই যেখানে দুঃসাধ্য ছিল, সেখানে মাঠে নেমে গোলও করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।তবে প্রথম লেগে দলকে ১–০ গোলে জেতাতে শুধু প্রতিপক্ষ নিয়ে প্রস্তুতিই যথেষ্ট ছিল না, পাশাপাশি ঠান্ডাকে হারানোর প্রস্তুতিও নিতে হয়েছিল মেসিকে।
বিরূপ পরিবেশে মেসিদের খেলা নিয়ে অবশ্য কদিন ধরেই কথা হয়েছে অনেক। এমনকি ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি উচ্চতার তুষারপাতের আশঙ্কায় ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল ২৪ ঘণ্টা। খুব একটা লাভ অবশ্য হয়নি। কাল মেসিরা যখন মাঠে নামছিলেন, তখন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা পরে নেমে আসে মাইনাস ১৭–তে।
এমন পরিস্থিতিতে ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মেসি পরে ছিলেন লম্বা স্লিভসের জার্সি, থার্মাল লেগিংস (আঁটসাঁট প্যান্ট, যা পা ও শরীরের নিম্নাঙ্গকে উষ্ণ রাখে) এবং লোমের তৈরি গলাবন্ধনী। এটুকুও যথেষ্ট ছিল না, ঠান্ডা থেকে বাঁচতে স্পনসর অ্যাডিডাসের লোগো–সংবলিত গ্লাভসও পরে ছিলেন মেসি। ম্যাচ শুরুর আগে অবশ্য উলের তৈরি হ্যাটও পরে থাকতে দেখা গেছে তাঁকে। খেলা শুরুর আগে সেটি খুলে রাখেন।
আরও পড়ুনমাইনাস ১৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফুটবল, মেসিদের জন্য মায়া হচ্ছে মাচেরানোর ১৮ ঘণ্টা আগেএমন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেও শীতকে মেসি পুরোপুরি বশ করতে পেরেছিলেন তা নয়। খেলা চলাকালে বিভিন্ন সময় মেসির হাত ও মুখের অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল কাজটা কতটা কঠিন। এরপর ম্যাচের শেষে সাইড বেঞ্চের দিকে গিয়ে মেসিকে গ্লাভসের ভেতর কিছু নিতে দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, মেসি হয়তো সে সময় তাঁর গ্লাভসের ভেতর হাত উষ্ণ রাখার জন্য বিশেষ জেল লাগিয়ে নিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ছবি ছড়িয়ে পড়ায় সেটি বেশ আলোচনারও জন্ম দিয়েছে। একজন লিখেছেন, ‘অবিশ্বাস্য। আমি এটা ভাবতেই পারি না। সে আসলেই একজন গোট (গ্রেটেস্ট অব অল টাইম)।’
আরও পড়ুনমাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মেসির গোলে জিতল মায়ামি২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫স্পোর্টিং কানসাস সিটির বিপক্ষে প্রথম লেগ জয়ের পর মেসিদের সামনে এখন ফিরতি লেগ। ফ্লোরিডায় ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ফিরতি লেগে স্পোর্টিং কানসাস সিটির মুখোমুখি হবে ইন্টার মায়ামি। রাউন্ড ওয়ান থেকে জয়ী দলগুলো নাম লেখাবে শেষ ষোলোয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ৪
কুমিল্লায় চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ বলেন, “গত দুইদিনে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আজ শনিবার আরো একজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।”
তিনি বলেন, “আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কুমিল্লা নগরের, কেউ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সবার নমুনা কুমিল্লা নগরের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করা হয়েছিল।”
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে আরো ১ জনের করোনা শনাক্ত
কিট সংকটে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা বন্ধ
ডা. বশির আহমেদ বলেন, “আক্রান্তদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। দুইজন ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। একজনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর বেশ কিছুদিন কুমিল্লায় নতুন করে সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। ফলে অনেকটাই স্বস্তিতে ছিলেন নগরবাসী। হঠাৎ একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জনমনে আবারো আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই মাস্ক পরছেন এবং সাবধানতা অবলম্বনের চেষ্টা করছেন। তবে, গণপরিবহন, বাজার কিংবা ওষুধের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন প্রবণতা দেখা যায়নি।
কুমিল্লা শহরের বাসিন্দা আমেনা আক্তার বলেন, “আবার যেন সেই দিনগুলো ফিরে আসছে। দোকান-বাজারে মাস্ক ছাড়া মানুষ চলাফেরা করছে। আমরা তো আরেক দফা লকডাউনের ভয়ে আছি।”
সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রচার অভিযান চালানো হবে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডাক্তার সানজিদুর রহমান বলেন , “করোনা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির ঘটনা অবহেলার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে অবস্থা জটিল হতে পারে।”
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কুশ বড়ুয়া বলেন, “করোনার বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ