দুই দশক পর যে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এল ছাত্রশিবির
Published: 24th, February 2025 GMT
সর্বশেষ ২০০৬ সালের দিকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে (সিপিআই) নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রকাশ্যে নবীনবরণ আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এলে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি সংগঠনটি। তবে প্রায় দুই দশক পর আজ সোমবার প্রকাশ্যে নবীনবরণ আয়োজন করেছে তারা। এর মধ্য দিয়ে সিপিআই শাখা শিবিরের নেতারাও প্রকাশ্যে এসেছেন।
আজ চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায় চট্টগ্রাম কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের নবীনবরণ আয়োজন করা হয়। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৬ সালের পর এটিই বড় পরিসরে আয়োজন করা নবীনবরণ অনুষ্ঠান। এর মধ্যে প্রতিবছরই নবীনবরণ আয়োজন করা হয়েছে, কমিটিও ছিল। তবে তাঁদের প্রকাশ্যে আসার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
সকাল ১০টায় শুরু হয় নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম। এতে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম নগরের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মো.
বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আল আমিন ভূঁইয়া ও সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আল নোমান। তাঁরা দুজনই ইনস্টিটিউটের পুরকৌশল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রশিবির নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে আলোচনা জোরালো হয় গত ২১ নভেম্বর। এদিন ছাত্রাবাসের আসন বরাদ্দের জেরে ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন আহত হন।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষটির দাবি ছিল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে তাঁদের ওপর হামলা করেন। অন্যদিকে ছাত্রদলের দাবি ছিল, ছাত্রশিবিরের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন। পরদিন বিকেলে নগরের ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম’–এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়।
১৯ বছর পর এ আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম নগর উত্তরের সভাপতি তানজির হোসেন বলেন, ‘বিগত সময়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ভুলভাবে ছাত্রসমাজের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমাদের দূরে রাখা হয়েছে। দেশব্যাপী একধরনের ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছিল। সেটি দূর করতে নবাগতদের বরণ করার আমাদের এ প্রয়াস।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন: মিন্টু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, “নির্বাচনে ফেনীর ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইনশাআল্লাহ এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। আমাদের দলের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন। নির্বাচন নিয়ে ফেনীতে কোনো চিন্তা নেই।”
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই যে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তবে, দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় তার আগেও নির্বাচন হয়ে যেতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। কারণ, সুপ্রিম কোর্টে কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে একটি মামলা চলমান আছে। যদি কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রবর্তন হয়, তাহলে এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেয়ারটেকার হবে না। কেয়ারটেকার সরকারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলা আছে।”
আরো পড়ুন:
প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে আমরা কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা
সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকলে ভালো কাজ করবে না, উল্লেখ করে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “বিগত ১৯ বছর আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি। কেউ যদি বলে, আমরা হঠাৎ করে নির্বাচন চাচ্ছি, বিষয়টি সঠিক নয়। বরং, ২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে, তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না। তাই, আমরা চাচ্ছি নির্বাচন হোক।”
বিএনপির এ সিনিয়র নেতা আরো বলেন, “আমরা বলে আসছি, ২০০৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটি অবাধ ও সুষ্ঠ হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে দেশে কোনো নির্বাচনকালীন সরকার নেই। দুই যুগ ধরে যদি নির্বাচিত সরকার না থাকে, তাহলে মানুষের অর্থনৈতিক বা জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে না। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত থাকে একটি সরকার, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে।”
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/রফিক