সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

কয়েক দিন আগে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ বৈঠকের পর পরই তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের কিছু দাবিকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে তিনি ঢাকাকে কিছুটা সতর্কবার্তাও দিয়েছেন। খবর এনডিটিভি

জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ না কেউ প্রতিদিনই সব ঘটনার জন্য ভারতকে দায়ী করে যাচ্ছে। যা পুরোপুরি হাস্যকর। আবার তারা একই সঙ্গে ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার কথা বলছে। সুতরাং ঢাকাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়।

নয়াদিল্লির প্রতি ঢাকার ক্রমাগত অবন্ধুত্বপূর্ণ আচারণের অভিযোগ তুলে এস জয়শঙ্কর সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন, ঢাকাকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা আমাদের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়।

ঢাকার বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশ একই সময়ে তাদের অভ্যন্তরীণ ঘটনার জন্য ভারতকে দায়ী করে আবার আমাদের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রাখার প্রত্যাশা করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে নয়া দিল্লির সঙ্গে তারা কী ধরনের সম্পর্ক রাখতে চায়। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যা আমাদের ১৯৭১ সালের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

জয়শঙ্কর বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তার দুটি দিক রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো সংখ্যালঘুদের প্রতি সাম্প্রদায়িক হামলা। যা ভারতের জন্য খুবই উদ্বেগজনক বিষয়। এটি অবশ্যই আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করছে। এ বিষয়ে আমরা সব সময়ই কথা বলে যাচ্ছি।

দ্বিতীয় বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ রাজনীতি রয়েছে। যার সঙ্গে চাইলে আপনি সম্মত বা অসম্মত হতে পারেন। কিন্তু দিন শেষে আমরা তাদের প্রতিবেশী। এজন্য আমাদের প্রতি তাদের মনোভাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

জয়শঙ্কর বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চায়, যে ঢাকার পরিস্থিতি শান্ত হোক এবং ভারতের প্রতি তাদের যে ক্রমাগত অভিযোগ সেটি বন্ধ হোক।

এম জি

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: আম দ র র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ এপ্রিল থেকে ১৭ জুনের মধ্যে ট্রাম্প–মোদির কোনো কথা হয়নি: জয়শঙ্কর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, তিনিই ভারত–পাকিস্তানের যুদ্ধ থামিয়েছেন। বাণিজ্য চুক্তির কথা বলে দুই দেশকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছিলেন। গতকাল সোমবার ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ প্রসঙ্গে বলেন, ২২ এপ্রিল পেহেলগামের হামলার পর থেকে ১৭ জুনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কোনো ফোনালাপ হয়নি।

পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের বদলায় ভারতের অপারেশন সিঁদুর অভিযান চার দিনের মাথায় বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্রমাগত বলে চলেছেন, তিনিই যুদ্ধবিরতিতে দুই দেশকে রাজি করিয়েছেন। দুই দেশকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করতে গেলে যুদ্ধ থামাতে হবে। এই মধ্যস্থতা নিয়ে ভারতে প্রশ্ন উঠেই চলেছে; কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্তত ২৪ বার এই দাবি করেছেন। অথচ ভারতের প্রধানমন্ত্রী একবারও বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট অসত্য বলছেন। ভারতের বক্তব্য, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাকিস্তানের কাছ থেকে এসেছিল। ভারত তা গ্রহণ করেছে।

গত সোমবার সন্ধ্যায় লোকসভায় অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনায় ভাষণ দেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এই বিতর্ক প্রসঙ্গে বলেন, ২২ এপ্রিল পেহেলগামকাণ্ডের পর সহানুভূতি জানাতে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর পর তিনি ফোন করেন ১৭ জুন। কেন মোদির সঙ্গে কানাডায় তাঁর দেখা হচ্ছে না, তা ব্যাখ্যা করতে। এই দুই তারিখ, অর্থাৎ ২২ এপ্রিল ও ১৭ জুনের মধ্যে একবারও মোদি–ট্রাম্প ফোনালাপ হয়নি। জয়শঙ্কর আরও বলেন, যদ্ধবিরতির সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার কোনো সম্পর্কও নেই।

জয়শঙ্কর বলেন, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা কীভাবে করা হবে, সে বিষয়ে অপারেশন সিঁদুর এক ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ (নিউ নর্মাল) সৃষ্টি করেছে। এই নতুন স্বাভাবিকতার পাঁচটি দিক। এক, সন্ত্রাসবাদীদের আর ঢাল হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে না। দুই, সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদী হামলার যোগ্য জবাব সব সময় দেওয়া হবে। চুপ করে বসে থাকার দিন শেষ। তিন, সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলবে না। সন্ত্রাসের আবহে আলোচনায় বসার উদ্দেশ্য একটাই, কী করে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা হবে। চার, পরমাণু অস্ত্রের ব্ল্যাকমেলের কাছে ভারত মাথা নোয়াবে না। পাঁচ, সন্ত্রাস ও সুপ্রতিবেশীমূলক মনোভাব পাশাপাশি চলবে না। রক্ত ও পানি একসঙ্গে বইতে পারে না। এ পাঁচ বিষয়ে ভারতের মনোভাব সুস্পষ্ট।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। পররাষ্ট্রনীতি সফল বলেই লস্কর–ই–তাইয়েবার ছায়া–সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে (টিআরএফ) যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে। পররাষ্ট্রনীতি সফল বলেই মাত্র তিনটি দেশ (চীন, তুরস্ক, আজারবাইজান) অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করেছে। শত্রুতা ও বিরোধিতার লাল রেখা (রেড লাইন) অতিক্রম করার শাস্তি কী, তা বোঝানোই ছিল অপারেশন সিঁদুরের উদ্দেশ্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ এপ্রিল থেকে ১৭ জুনের মধ্যে ট্রাম্প–মোদির কোনো কথা হয়নি: জয়শঙ্কর