মালদ্বীপে অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধতা দেওয়ার আহ্বান
Published: 25th, February 2025 GMT
মালদ্বীপে বসবাসরত অনিয়মিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধকরণ ও কর্মীদের নিয়োগ বাড়াতে দেশটির সরকারের প্রতি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনিন রাশেদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় হাইকমিশনার প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে মালদ্বীপের অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, বিশেষত চিকিৎসা শিক্ষায় অধ্যয়নরত রয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ মালদ্বীপের আরো শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।”
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
রিয়াদে মহান শহীদ দিবস পালিত
প্রধান উপদেষ্টা হাইকমিশনারকে শুভেচ্ছা জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, তার দায়িত্বকালীন বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।
হাইকমিশনার শিউনিন উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আমাদের আমদানি বেড়েছে, বিশেষত ওষুধ শিল্পের ক্ষেত্রে। আগামীতে দুই দেশের মধ্যে আরো সহযোগিতার সুযোগ তৈরি হবে। কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে মালদ্বীপে ব্যবসা শুরু করেছে। মালদ্বীপে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।”
প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যে প্রচারণা চালাচ্ছেন, সেজন্য হাইকমিশনার তাকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, “জলবায়ু কর্মসূচিতে আপনার প্রতিশ্রুতি দেখে আমরা অনুপ্রাণিত। মালদ্বীপ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চায়।”
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫