Prothomalo:
2025-07-31@21:45:07 GMT

মেলায় শেষ বিকেলে ভাবসংগীত

Published: 26th, February 2025 GMT

বইমেলার শিশু কর্নারে রক্তিম ফুলে ফুলে ভরে আছে পলাশের শাখা। তার পাশেই খোলা মঞ্চে চর্যাপদের পদগুলো পরিবেশন করছিলেন সাধক শিল্পীরা, ‘কায়া তরুবর পঞ্চবি ডাল...।’ বসন্তের শেষ বিকেলে মেলায় আসা শিশু আর তাদের অভিভাবকেরা আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করছিলেন সেই গান। আজ বুধবার মেলায় প্রবেশ করতেই এ দৃশ্য চোখে পড়ল।

ভাবনগর সাধুসঙ্গ এখানে প্রতি বুধবার বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চর্যাপদের গানের আসর করে থাকে বলে জানালেন লোক–গবেষক ও ভাবনগর ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাইমন জাকারিয়া। আজ ছিল ৫৩৭তম আসর, ১২ বছর ধরে চলছে এ আয়োজন। শাহ আলম দেওয়ান, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, বাউল অন্তরসহ অনেকে শ্রোতাদের গানে গানে মাতিয়ে রেখেছিলেন সন্ধ্যা অবধি।

শেষ পর্যায়ে এসে আজ বিক্রিতে কিছুটা গতির সঞ্চার হয়েছে। বেড়েছে লোকসমাগম আর নতুন বইয়ের প্রকাশনাও। মোড়ক উন্মোচন চলছে নতুন বইয়ের। ইতি প্রকাশন তাদের প্যাভিলিয়নের নাম দিয়েছে ‘জিয়া বাড়ি’। সেখানেই সন্ধ্যায় শামা ওবায়েদের তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করতে এসেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইতি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বই তিনটি হলো ‘হৃদয় জুড়ে একটি নাম: জিয়াউর রহমান’, ‘জিয়াউর রহমানের নির্বাচিত ভাষণ’ এবং ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নির্বাচিত ভাষণ’। অনুষ্ঠানে লেখিকাসহ আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমসহ বিএনপির নেতারা।

তথ্যকেন্দ্রে আজ ১৬৬টি নতুন বইয়ের নাম জমা পড়েছে। বাংলা একাডেমি এনেছে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আবদুল হকের রচনাবলি’র প্রথম খণ্ড। সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন সৈয়দ আজিজুল হক। অন্যপ্রকাশ এনেছে শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের ‘ছোটকাকু’ সিরিজের ৪০টি কিশোর উপন্যাসের সংগ্রহ ‘ছোটকাকু চল্লিশ’, প্রথমা এনেছে মো.

তৌহিদ হোসেনের ভ্রমণগদ্য ‘আফ্রিকা দক্ষিণ’। ইউপিএল এনেছে শওকত হোসেন মাসুমের ‘কেলেঙ্কারির অর্থনীতি: বাংলাদেশের অর্থনীতির পেছনের অর্থনীতি’, নবযুগ এনেছে কামরুল হায়দারের গবেষণা গ্রন্থ‘নজরুল সঙ্গীতের ভাবসন্ধান’, স্বপ্ন’৭১ এনেছে মোহিত কামাল সম্পাদিত ‘শতবর্ষ পেরিয়ে নজরুলের ধূমকেতু’, ঐতিহ্য এনেছে আবুল আহসান চৌধুরীর প্রবন্ধ ‘আমার মীর মশাররফ’, উৎস এনেছে লোকসংগীতবিষয়ক বই সুমনকুমার দাশ সংগৃহীত ও সম্পাদিত ‘শফিকুন্নূর সমগ্র’, কাকাতুয়া এনেছে আবদুল মান্নান সৈয়দের ‘ছোটদের রচনা সমগ্র’, পাঞ্জেরী এনেছে দন্ত্যস রওসনের ‘প্রেমের অণুকাব্য-২’, পাঠক সমাবেশ এনেছে প্রত্নতত্ত্ববিষয়ক স্থপতি ড. সাজিদ বিন দোজার ‘রেখাচিত্রে প্রাচীন পুণ্ড্রনগর’, অ্যাডর্ন এনেছে হারুন-উজ-জামানের ইতিহাসবিষয়ক ‘জিন্নাহ্‌র প্রেম: বাংলা ও ভারত ভাগ’, সুচয়নী এনেছে এস এম শামসুদ্দিনের ছড়ার বই ‘গাঁয়ের নামটি মেষ্টা’, মাওলা ব্রাদার্স এনেছে মুরাদুল ইসলামের জীবনী–বিষয়ক ‘ফকির ফয়জুল্লাহ’, বেঙ্গল পাবলিকেশন এনেছে পাপড়ি রহমানের উপন্যাস ‘ঊষর দিন ধূসর রাত’, ঋদ্ধি এনেছে আলমগীর সাত্তারের শিশুতোষ ‘ছোটদের এরোপ্লেন আবিষ্কারের কাহিনি’, জ্ঞানকোষ এনেছে শাহাদুজ্জামানের ‘নির্বাচিত গল্প’ ও সুপর্ণা এলিস গমেজের মুক্তিযুদ্ধের গল্প ‘নয় মাস’। আগামী এনেছে পলাশ মাহমুদ অনূদিত ও সাখাওয়াত টিপু সম্পাদিত ‘নির্বাচিত নোবেল বক্তৃতা’, অবসর এনেছে ড. এম দেলোয়ার হোসেনের ইতিহাসবিষয়ক ‘ইতিহাসচর্চার প্রবেশপথ’, পুণ্ড্র এনেছে সালেহা চৌধুরীর গল্প ‘ঈশ্বর মানুষ ও জীবনযাপন’।

তথ্যকেন্দ্রের হিসাব অনুসারে আজ পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২ হাজর ৭৮৮টি। মেলার দুই দিন বাকি। নতুন বই যেমন আসবে, তেমনি বইয়ের অনুরাগীরাও কেনাকাটায় গতির সঞ্চার করবেন—এ আশা প্রকাশকদের।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ষয়ক বইয় র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ