উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে আমার বা পরিবারের নামে জমি-ফ্ল্যাট কেনা হয়নি: নাহিদ ইসলাম
Published: 26th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাঁর বা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যের নামে দেশের কোথাও জমি বা ফ্ল্যাট নেই এবং কেনাও হয়নি।
আজ বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন নাহিদ ইসলাম। নতুন রাজনৈতিক দলে অংশ নিতে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
নাহিদ ইসলাম ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘উপদেষ্টা পদে যোগদানের আগে আমার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল না। ২১ আগস্ট উপদেষ্টা পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্মানী গ্রহণের লক্ষ্যে সরকারিভাবে সোনালী ব্যাংকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলি। উক্ত অ্যাকাউন্টে ২১ আগস্ট ২০২৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত লেনদেনের হিসাব জনগণের কাছে উপস্থাপন করছি। উক্ত হিসাবে ১০,০৬, ৮৮৬ (দশ লাখ ছয় হাজার আট শত ছিয়াশি) টাকা জমা হয়েছে এবং ৯,৯৬, ১৮৮ (নয় লাখ ছিয়ানব্বই হাজার এক শত আটাশি) টাকা উত্তোলিত হয়েছে। উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের এই অ্যাকাউন্টটি ছাড়া আমার অন্য কোনো অ্যাকাউন্ট নেই।’
নাহিদ ইসলাম আরও লেখেন, ‘উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন আমার বা আমার পরিবারের কোনো সদস্যের (স্ত্রী, মা, বাবা) নামে বাংলাদেশের কোথাও জমি বা ফ্ল্যাট নেই বা আমার বা আমার পরিবার কর্তৃক ক্রয় করা হয়নি।’
নাহিদ ইসলাম লেখেন, তাঁর একান্ত সচিবের ইসলামী ব্যাংকের হিসাবে ৩৬ হাজার ২৮ টাকা রয়েছে। একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর নিজের নামে বা তাঁর পরিবারের (স্ত্রী, মা, বাবা) কারও নামে বাংলাদেশের কোথাও কোনো সম্পত্তি কেনা হয়নি। এ ছাড়া তাঁর (নাহিদ ইসলাম) ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট যে কারও সম্পদের স্বচ্ছ হিসাব রয়েছে। প্রয়োজনে উন্মুক্ত করা হবে।
ফেসবুক পোস্টে সোনালী ব্যাংকের হিসাব বিবরণী দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি দপ্তরে এই তথ্য যাচাইযোগ্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম র পর ব র পর ব র র উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।