ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সেনা অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এ অভিযানে অঞ্চলটিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক এ তথ্য জানান।  

তিনি বলেন, আনরোয়া (ইউ এন রিলিফ এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইনিয়ান রেফিউজিস) মহাপরিচালক ফিলিপ ল্যাজারিনি’র একটি বক্তব্য আজ আমি আপনাদের জানাচ্ছি। সম্প্রতি তিনি আমাদের জানিয়েছেন, গত ৫ সপ্তাহ ধরে পশ্চিম তীরে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং এ অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি। এছাড়া পশ্চিমতীরের অনেক সরকারি স্থাপনা, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট বুলডোজার দিয়ে ধ্বংসও করা হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, যে ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাদের একটি বড় অংশই থাকতেন শরণার্থী শিবিরে। গত ৫ সপ্তাহে কয়েকটি শরণার্থী শিবির ধ্বংস করেছে আইডিএফ। মঙ্গলবার নাবালুস শহরে টানা ১৪ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। আমরা এখনও জানি না সেখানে কতজন নিহত বা আহত হয়েছেন। কারণ, এখনও নাবালুসের সমস্ত চেকপয়েন্ট বন্ধ রেখেছে আইডিএফ।

ইসরায়েলের সরকার এবং আইডিএফের উদ্দেশে ডুজারিক বলেন, আমরা আগেও বলেছি, আবারও বলছি— মানুষের জীবন রক্ষা করা সবচেয়ে জরুরি এবং নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কখনও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা ন্যায্য নয়।

২০২৩ সালে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। একই সময় পশ্চিম তীরেও শুরু হয় অভিযান, তবে তা গাজার মতো ব্যাপক আকারের ছিল না।

কিন্তু তারপরও ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গত ১৫ মাসে পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন ৯২৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭ হাজার জন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র ত হয় ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না

জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে  কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে আগাতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিনি-লবণের অনুপম পাঠ
  • মে দিবস ২০২৫ : শ্রমিক-মালিক ঐক্যে গড়বে নতুন বাংলাদেশ
  • বিদ্যালয়ের ১৮টি গাছ বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক 
  • কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • দেশে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি 
  • রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব
  • কানাডায় আবারও লিবারেল পার্টির সরকার গঠনের আভাস
  • আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তাদেরকেই নির্ধারণ করতে হবে
  • জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না
  • আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তাদেরকেই নির্ধারণ করতে হবে: ড. ইউনূস