রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে (ডিএনসিসি) কারিগরি সহায়তা দেবে লন্ডনভিত্তিক পরিবহন সংস্থা ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (টিএফএল)। নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট, বাস অপারেশন ও নিরাপত্তা এই তিন বিষয়ে ডিএনসিসির সঙ্গে কাজ করবে টিএফএল।

এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন টিএফএলের একটি প্রতিনিধিদল।

যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট কার্যালয়ের (এফসিডিও) আর্থিক সহায়তায় ডিএনসিসিকে সহায়তা করবে টিএফএল। শুরুতে গুলশান-১ ও গুলশান-২ এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম শুরু করবে লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটি। গুলশান এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা ও বাস সার্ভিস ব্যবস্থাপনা সফল হলে পর্যায়ক্রমে অন্য এলাকায় এই মডেল ব্যবহার করা হবে।

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠিতে গাছে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, শিক্ষক নিহত 

ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি
নাইট কোচে উঠতে নারীদের ভয়

বৈঠকে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “লন্ডনের ট্রাফিক ব্যবস্থা সারা বিশ্বে রোল মডেল। ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (টিএফএল) তাদের শহরে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেছে যেটি বিশ্বে অত্যন্ত বিখ্যাত। গুলশান এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিশেষ করে গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে এবং জনসাধারণের নিরাপদ চলাচলে টিএফএল-এর অভিজ্ঞতা ও কারিগরি পরামর্শ কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।”

গুলশান নগর ভবনে ডিএনসিসির প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিএফএলের প্রতিনিধিদলে ছিলেন ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্ট রুথ স্যালমন, সিয়ান হুস্টন ও নিকোলা ব্র‍্যাডি।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.

মঈন উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম ও নির্বাহী প্রকৌশলী (ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেল) নাঈম রায়হান খান।

২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা, ট্রাফিক সিগন্যাল, যানজট নিরসনে কাজ করার লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও এফসিডিওর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।প্রথম ধাপে পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে সংস্থা দুটি।
 

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ড এনস স ড এনস স র এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা দম্পতিকে গুলি করে হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় অভিবাসী সংক্রান্ত ভোটের পর ডেমোক্র্যাটিক স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ মেলিসা হর্টম্যান ও তার স্বামী শনিবার ভোরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনাটিকে ‘রাজনৈতিক সহিংসতা’ বলে উল্লেখ করেছেন গভর্নর টিম ওয়ালজ। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সপ্তাহের শুরুতে মিনেসোটা হাউসে একটি বিতর্কিত প্রস্তাব এইচএফ১-এর পক্ষে একমাত্র ডিএফএল (ডেমোক্র্যাটিক–ফার্মার–লেবার) ভোট প্রদান করেন হর্টম্যান। এই বিলের মাধ্যমে মিনেসোটা কেয়ার প্রোগ্রামের যোগ্যতা পরিবর্তন করে শুধুমাত্র নাগরিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, যার ফলে প্রাপ্তবয়স্ক অনিবন্ধিত অভিবাসীরা আর রাষ্ট্র-অনুদানপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পাবেন না।

হর্টম্যান ও তার স্বামী মার্ককে শনিবার সকালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মৃত ঘোষণা করা হয়। একজন ব্যক্তি ভোরে তাদের বাড়িতে গিয়ে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে গুলি চালায়। গভর্নর ওয়ালজ এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বন্দুকধারী আগে একই রাতে আরেকজন ডেমোক্র্যাট স্টেট সিনেটর জন হফম্যানের বাড়িতেও হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল। হফম্যান ও তার স্ত্রী ইভেট একাধিকবার গুলিবিদ্ধ হন। তাদের অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।

ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ওয়ালজ বলেন, ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঘটেছে।

হাউসে ৬৮–৬৫ ভোটে বিলটি পাস হয়, যেখানে হর্টম্যানের একক ডেমোক্র্যাট ভোট রিপাবলিকানদের পক্ষে ভারসাম্য বজায় রাখে। ভোটের সময় তিনি কেঁদে ফেলেন। এই ভোট এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। লস অ্যাঞ্জেলসে বিক্ষোভ রূপ নেয় দাঙ্গায়। শনিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৭৯তম জন্মদিনে দেশজুড়ে ‘নো কিংস’ নামে বিক্ষোভের পরিকল্পনা ছিল।

মিনেসোটা স্টেট পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজনের গাড়িতে ‘নো কিংস’ লেখা প্রচারপত্র পাওয়া গেছে। রাজ্যজুড়ে এই বিক্ষোভ বাতিল করা হয়েছে। স্টেট প্যাট্রোল কর্নেল ক্রিস্টিনা বোগোইয়েভিক জনগণকে এসব বিক্ষোভে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানান।

মেলিসা হর্টম্যান কে ছিলেন?
হর্টম্যান ছিলেন মিনেসোটা হাউসের ডিএফএল ককাসের নেতা। ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের শুরু পর্যন্ত তিনি হাউস স্পিকার ছিলেন। ২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়ে তিনি ১১তম মেয়াদে ছিলেন। তিনি মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কেনেডি স্কুল থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। 

জন হফম্যান কে?
হফম্যান ২০১২ সাল থেকে মিনেসোটার ৩৪তম জেলা থেকে ডিএফএল সদস্য হিসেবে সিনেটে রয়েছেন। তিনি ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাইনোরিটি হুইপ ছিলেন। বর্তমানে হিউম্যান সার্ভিসেস কমিটির চেয়ার। ভোটের রেকর্ড অনুযায়ী, হফম্যান এই বিতর্কিত বিলের বিপক্ষে ভোট দেন। বিলটি ১২ জুন গভর্নর ওয়ালজের কাছে উপস্থাপন করা হয়। হফম্যান ও তার স্ত্রী তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান হোপের সঙ্গে বসবাস করেন। তিনি সেন্ট মেরিজ কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ইউনিভার্সিটি অব আইডাহো থেকে জ্বালানি নীতিতে একটি উচ্চতর সার্টিফিকেট অর্জন করেন।

কী ঘটেছিল সেই রাতে?
শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে ব্রুকলিন পার্ক পুলিশের কাছে একটি ফোন আসে। পুলিশ প্রধান মার্ক ব্রুলি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখে, বাড়ির সামনে পুলিশের এসইউভি গাড়ির মতো একটি গাড়ির আলো জ্বলছিল। একজন ব্যক্তি পুলিশ অফিসারের পোশাকে দরজায় ছিল। কিন্তু সেই ব্যক্তি ছিল একজন ছদ্মবেশী। আসলে তিনি পুলিশ নন। পুলিশের মুখোমুখি হলে ওই ব্যক্তি গুলি ছোড়ে, পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে সন্দেহভাজন ব্যক্তি বাড়ির পেছনের দিকে পালিয়ে যায়। 

গভর্নর ওয়ালজ বলেন, ‘স্পিকার হর্টম্যান ছিলেন একজন সেবাপরায়ণ, হৃদয়বান ও হাস্যরসসম্পন্ন নেত্রী। তিনি মিনেসোটার জন্য বিশাল অবদান রেখে গেছেন।’

মিনেসোটা ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির কমিশনার বব জ্যাকবসন বলেন, ‘এটি মিনেসোটা ও গণতন্ত্রের জন্য এক অন্ধকার দিন।’

ঘটনার আগে স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে সন্দেহভাজন ব্যক্তি প্রথমে হফম্যানের বাড়িতে গিয়েছিল। এ ব্যাপারে কমিশনার জ্যাকবসন বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি আমাদের ইউনিফর্মের প্রতি যে আস্থা জনগণের, তা ব্যবহার করেছে। এটি আমাদের জন্য গভীরভাবে ক্ষতিকর ও দুঃখজনক।’ এই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা দম্পতিকে গুলি করে হত্যা