সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত টানা দেড় ঘণ্টা ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম চলে। দেশের ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ৩টা থেকে এ-১ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে ‘বি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে দুটি প্রশ্ন করা হয়েছে। ভর্তি–ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ‘মানবিক ও বাণিজ্য’ শাখার ভর্তি–ইচ্ছুকদের জন্য একরকম প্রশ্ন এবং বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মানবিকে পরীক্ষার জন্য ভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের প্রশ্নপত্রে ‘সাধারণ জ্ঞান’ অংশে (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ অংশ) জুলাই বিপ্লবের স্লোগান নিয়ে একটি প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রশ্নে বলা হয়েছে ‘জুলাই আন্দোলনের অন্যতম স্লোগান কোনটি? চারটি অপশনের মধ্যে ছিল ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক; চল চল ঢাকা চল; কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙে ফেল কর রে লোপাট; কোটা না মেধা, মেধা মেধা।’

অপর দিকে, ‘বি’ ইউনিটের বিজ্ঞান শাখার প্রশ্নে ‘জুলাই বিপ্লব ২০২৪-এর প্রথম শহীদ কে?’ এই প্রশ্ন করা হয়। সেখানে অপশনে আবু সাঈদের পাশাপাশি আরও তিনটি অপশন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনশাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, ৫ কেন্দ্রে আসনবণ্টন, অনলাইনে প্রবেশপত্র প্রকাশ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হবিগঞ্জ থেকে শাবিপ্রবিকেন্দ্রে বি ইউনিটের পরীক্ষা দিতে আসেন সামিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন সহজ হয়েছে। অনেক প্রশ্নই কমন পেয়েছি। জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ নিয়ে প্রশ্ন আসাতে ভালো লাগল।’

শাবিপ্রবির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি কমিটির সূত্রে জানা যায়, শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা মোট ১০০ নম্বরের। এর মধ্যে প্রশ্নপত্রে ৮০টি প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি প্রশ্নে মান ১ নম্বর। তবে প্রতি চারটি প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য ১ নম্বর কর্তন করা হবে। প্রশ্নের ৮০ নম্বর ছাড়া বাকি ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে নম্বর দেওয়া হবে।

গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এবার স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে শাবিপ্রবি। এবার ভর্তি পরীক্ষার জন্য দুই ইউনিটে মোট আবেদন পড়েছিল ৮৬ হাজার ৪১৬টি। দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্র নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ‘বি’ ইউনিটে (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ) শাবিপ্রবি কেন্দ্রে ৬ হাজার ৯৮৩ জন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ হাজার ৬৩৬, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৫৬, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ৩ হাজার ১৪ ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ১ হাজার ৪২৭ জনসহ মোট ২৯ হাজার ১১৬ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য আবেদন করেন।

বেলা ৩টা থেকে অনুষ্ঠিত এ-১ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষায় শাবিপ্রবি কেন্দ্রে ৬ হাজার ২৭০ জন, ঢাকা বিশ্ববদ্যিালয়ে ৩৪ হাজার ৩৬৯, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ হাজার ১২, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ৩ হাজার ৭৮০ ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৬২৭ জনসহ মোট ৫৬ হাজার ৫৮ জন আবেদন করেন। এ ছাড়া এ-২ (স্থাপত্য) ইউনিটের ১ হাজার ২৪২ জন আবেদনকারীর পরীক্ষা শাবিপ্রবি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুনপ্রথম আলোয় সংবাদপ্রকাশ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি কমল ৫০০ টাকা০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হজ ল ল ব পর ক ষ র ইউন ট র র জন য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • আবু সাঈদের মামলায় ৪ জনসহ ১১ আসামি ট্রাইব্যুনালে হাজির
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ