Prothomalo:
2025-05-01@03:34:35 GMT

কোনো অপরাধী যাতে ছাড় না পায়

Published: 1st, March 2025 GMT

অপরাধীদের ধরতে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ঢাকায় যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। সেদিন দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি টের পাবেন।’ গত কয়েক দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে এ কথা জোর দিয়ে বলা যায়, অবনতি হয়নি। এর অর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভাষায়, অপরাধীরা কিছুটা টের পেয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বরাতে প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, রাজধানীতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৭৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ৬৫টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনার পাশাপাশি ৫৫০টি টহল দল দায়িত্ব পালন করেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পরিচালিত অপারেশন ডেভিল হান্টে ১৯ দিনে ১১ হাজারের বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে। 

অভিযান শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই হালনাগাদ খবর জানাচ্ছে ডিএমপি। এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাত তিনটায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে নজির সৃষ্টি করেছিলেন। পরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও রাতে সাংবাদিকদের ডেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য জানিয়েছেন।

গত কয়েক দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না হলেও ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। যে অপরাধীরা পাড়ায় পাড়ায় মানুষের আতঙ্কের কারণ ছিল, তারাই এখন আতঙ্কের মধ্যে আছে। অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ হবে অপরাধীরা যেখানেই পালিয়ে থাকুক না কেন, খুঁজে বের করে বিচারে সোপর্দ করা।

পবিত্র রমজান মাস প্রায় সমাগত। রোজার সময় কেনাকাটা ও ইফতার, সাহ্‌রি উপলক্ষে রাতে মানুষের চলাচল বাড়বে। ফলে ছিনতাই, ডাকাতি ও চুরির আশঙ্কাও বেশি থাকবে। সে ক্ষেত্রে রোজার মাসে রাতে অভিযানও জোরদার করতে হবে। 

এখানে আরও একটি কথা জরুরি মনে করি। অপরাধীদের কতজন ধরা পড়েছে, কেবল তা নিয়ে অভিযানের সাফল্য নিরূপণ করা যাবে না। যারা ধরা পড়েনি, তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে। কোনো এলাকায় অভিযান জোরদার করে কোনো এলাকায় শিথিল করা যাবে না। দেশের সব এলাকায় একযোগে অভিযান পরিচালিত হলে অপরাধীরা ধরা পড়তে বাধ্য। 

অতীতে এ ধরনের অভিযান ব্যর্থ হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। অনেক সময় দেখা গেছে, সরকার অপরাধী হিসেবে যাদের ধরেছে, তারা ক্ষমতাসীন দলের লোক। এরপর নানা প্রভাব খাটিয়ে তাদের বের করে আনা হয়েছে। যেহেতু বর্তমান সরকার পুরোপুরি অরাজনৈতিক, ফলে তাদের ‘নিজস্ব লোক’ থাকার কথা নয়। প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে। দেখতে হবে যাতে নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার না হয় কিংবা অপরাধ করে কেউ পার পেয়ে না যায়।

জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন জরুরি। 

আইনশৃঙ্খলার উন্নতি না হলে অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ, সেটা বাস্তবায়ন করাও কঠিন হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাইরে আমরা আরেকজন উপদেষ্টাকেও দেখলাম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে সবাই এগিয়ে আসবেন আশা করি। অন্তত ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কেবল নির্দেশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ না করে টহল তদারকির কাজটি সরেজমিনে দেখতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত র অপর ধ র সরক র ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।” 

উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।” 

তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।” 

তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।” 

উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।” 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”

পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।” 

তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। 

রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
  • নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • ডিবির অভিযানে আ.লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
  • পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা ব
  • সাবেক আইজিপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আবার বাড়ল