Prothomalo:
2025-06-15@23:49:26 GMT

কোনো অপরাধী যাতে ছাড় না পায়

Published: 1st, March 2025 GMT

অপরাধীদের ধরতে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ঢাকায় যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। সেদিন দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি টের পাবেন।’ গত কয়েক দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে এ কথা জোর দিয়ে বলা যায়, অবনতি হয়নি। এর অর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভাষায়, অপরাধীরা কিছুটা টের পেয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বরাতে প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, রাজধানীতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৭৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ৬৫টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনার পাশাপাশি ৫৫০টি টহল দল দায়িত্ব পালন করেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পরিচালিত অপারেশন ডেভিল হান্টে ১৯ দিনে ১১ হাজারের বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে। 

অভিযান শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই হালনাগাদ খবর জানাচ্ছে ডিএমপি। এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাত তিনটায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে নজির সৃষ্টি করেছিলেন। পরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও রাতে সাংবাদিকদের ডেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য জানিয়েছেন।

গত কয়েক দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না হলেও ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। যে অপরাধীরা পাড়ায় পাড়ায় মানুষের আতঙ্কের কারণ ছিল, তারাই এখন আতঙ্কের মধ্যে আছে। অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ হবে অপরাধীরা যেখানেই পালিয়ে থাকুক না কেন, খুঁজে বের করে বিচারে সোপর্দ করা।

পবিত্র রমজান মাস প্রায় সমাগত। রোজার সময় কেনাকাটা ও ইফতার, সাহ্‌রি উপলক্ষে রাতে মানুষের চলাচল বাড়বে। ফলে ছিনতাই, ডাকাতি ও চুরির আশঙ্কাও বেশি থাকবে। সে ক্ষেত্রে রোজার মাসে রাতে অভিযানও জোরদার করতে হবে। 

এখানে আরও একটি কথা জরুরি মনে করি। অপরাধীদের কতজন ধরা পড়েছে, কেবল তা নিয়ে অভিযানের সাফল্য নিরূপণ করা যাবে না। যারা ধরা পড়েনি, তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে। কোনো এলাকায় অভিযান জোরদার করে কোনো এলাকায় শিথিল করা যাবে না। দেশের সব এলাকায় একযোগে অভিযান পরিচালিত হলে অপরাধীরা ধরা পড়তে বাধ্য। 

অতীতে এ ধরনের অভিযান ব্যর্থ হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। অনেক সময় দেখা গেছে, সরকার অপরাধী হিসেবে যাদের ধরেছে, তারা ক্ষমতাসীন দলের লোক। এরপর নানা প্রভাব খাটিয়ে তাদের বের করে আনা হয়েছে। যেহেতু বর্তমান সরকার পুরোপুরি অরাজনৈতিক, ফলে তাদের ‘নিজস্ব লোক’ থাকার কথা নয়। প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে। দেখতে হবে যাতে নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার না হয় কিংবা অপরাধ করে কেউ পার পেয়ে না যায়।

জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন জরুরি। 

আইনশৃঙ্খলার উন্নতি না হলে অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ, সেটা বাস্তবায়ন করাও কঠিন হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বাইরে আমরা আরেকজন উপদেষ্টাকেও দেখলাম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে সবাই এগিয়ে আসবেন আশা করি। অন্তত ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কেবল নির্দেশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ না করে টহল তদারকির কাজটি সরেজমিনে দেখতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত র অপর ধ র সরক র ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা 
  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • বিএনপি ও গণ অধিকারের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পটুয়াখালীর ২ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি
  • দীর্ঘ ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছে মানুষ