মাইকেল জ্যাকসন। ‘কিং অব পপ’খ্যাত আমেরিকান মিউজিক লেজেন্ড। সর্বকালের সেরা এই মিউজিশিয়ানের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক

বই পড়তে বড্ড ভালোবাসি আমি। কেননা, আমি মনে করি, বইয়ের ভেতর দিয়ে আলাদা একটা জগতের দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে স্টেজে আমাকে যা যা করতে দেখেন, তার সবটাই আমার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া। এর কোনোটাই পূর্বপরিকল্পিত নয়। এ কেবলই আমার অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। আমার গায়কি পুরোটাই যথাসম্ভব সিম্পল; এ স্রেফ এক ঈশ্বরপ্রদত্ত ব্যাপার। যখন ছোট ছিলাম, একদমই জানতাম না কী করে যাচ্ছি। স্রেফ গান গেয়ে যেতাম। এর সঙ্গে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার কোনো রকমই সম্পর্ক নেই। ফলে এর ব্যাখ্যা দাঁড় করানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এ স্রেফ আপনা-আপনিই হয়ে যাওয়া!
যোগ্যতার চেয়েও বেশি
পৃথিবীতে অনেক মানুষই যোগ্যতার চেয়েও বেশি পেয়েছে। প্রার্থনা করেছি, আমার ক্ষেত্রে যেন এমনটি না হয়। একসঙ্গে অনেক জায়গায় অনেক কাজ করার স্বপ্ন দেখি না আমি; বরং যে কাজটিই করি না কেন, সেটি যেন নিখুঁত ও গভীর অর্থবহ হয়, সেদিকেই নজর আমার। আমি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস ও অনুভব করি, জনতার সামনে হাজির হয়ে পারফর্ম করার পেছনে যেন একটা যৌক্তিক কারণ থাকে। সে কাজটি যদি যথাযথভাবে করতে পারি, তাহলে সেটিই আমার পাওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার। 
জীবন থেকে পাঠ
জীবন থেকে পাঠ নেওয়ার সুযোগ কখনোই মিস করি না আমি। কেউ যদি তা থামিয়ে দেয়, তাহলে সে তো মৃত মানুষের সমতুল্য। ফলে চারপাশের মানুষ যা যা বলাবলি করে, মনোযোগ দিয়ে শুনি; তারপর নিজের মতো গ্রহণ করি পাঠ। মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য পারফর্ম করি আমি, ঠিক আছে; তাই বলে নিজেকে কখনোই পাপেটে রূপান্তর করতে চাই না। 
ময়ূরের জন্য ভালোবাসা
ময়ূর নিয়ে কথা বলতে অনেক শুনেছেন আমায়। এর কারণ, পাখি সম্প্রদায়ের মধ্যে ময়ূরই একমাত্র পাখি, যে কিনা নিজের শরীরে জগতের সব রং ধারণ করে আছে। মিউজিকে এটিই আমার মুখ্য উদ্দেশ্য। আমাদের কনসার্টে তাকালেই দেখবেন, সব দর্শক একসঙ্গে গেয়ে উঠছে, নেচে উঠছে। তাতে ছড়িয়ে পড়ছে জগতের সব রং। এটিই আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায়। 
কখনোই সন্তুষ্ট হতে পারি না
পারফেকশনের প্রতি গভীরতর অনুরাগ আছে আমার। ফলে কখনোই পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি জন্মায় না মনে। একেকটা গান তৈরি করার পর মনে হয়, নাহ, ঠিকমতো হলো না কাজটা! তারপর বারবার পরিবর্তন-পরিমার্জন শেষে, একটা পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, সর্বশেষ ভার্সনটি মেনে নিই। আমি মনে করি, নিজের কাজে নিজেই যদি তৃপ্ত হই, তাহলে আমার পক্ষে এক পাও এগোনো সম্ভব নয়। 
আমার যত দুর্বলতা
পেন্সিল ও ইঙ্ক পেন দিয়ে ড্রয়িং করতে বেশ ভালো লাগে আমার। আমি আর্টের ভক্ত। হল্যান্ড, জার্মানি কিংবা ইংল্যান্ড– যেখানেই যাই, আর্ট মিউজিয়াম ঘুরে দেখি। ভাস্কর্য কিংবা পেইন্টিং দেখলে তাতে বুঁদ হয়ে যাই আমি। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। আমার কান্না চলে আসে; আমার মন ছুঁয়ে যায়। একইভাবে আমি মনে করি, একজন অভিনেতা কিংবা পারফরমারেরও আসল কাজটা হলো, ব্যক্তিমানুষের অন্তরের অন্তস্তলের সত্যটাকে ছুঁয়ে যাওয়া। সেই বাস্তবতা ছুঁয়ে যেতে পারলে আপনিও হয়ে উঠবেন আপনার সৃষ্ট শিল্পের একটা প্রতিকৃতি। রিয়েলিজম বা বাস্তববাদের অনুরক্ত আমি। বানোয়াট জিনিস আমার ভালো লাগে না। অন্তরের অন্তস্তলে ডুব দিতে জানলে দেখবেন, পৃথিবীর সব মানুষই এক। আমাদের সবারই রয়েছে আবেগ। এর ফলে ‘ইটি’র মতো সিনেমা আমাদের সবারই মন ছুঁয়ে যায়। বলুন তো, পিটার প্যানের মতো উড়তে চায় না কে? মহাবিশ্বের বাইরে থেকে আসা কোনো জাদুকরি সৃষ্টি বা এলিয়েনের সঙ্গে উড়তে চায় না, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায় না– এমন মানুষ ক’টা আছে? 
ভালোলাগা সঙ্গ এবং অনুপ্রেরণায় যারা
অভিজ্ঞ মানুষের সঙ্গ আমার ভালো লাগে। ভালো লাগে সহজাত প্রতিভার অধিকারী মানুষদের। আরও ভালো লাগে, কঠোর পরিশ্রম করে যারা নিজেদের পৌঁছে দেয় নিজ ক্ষেত্রের নেতৃস্থানে। মানুষের সঙ্গে মেশা, তাদের সঙ্গে ভাবনা বিনিময় আর একসঙ্গে কাজ করা– এ আমার কাছে জাদুকরি ব্যাপার বলে মনে হয়। আমার প্রেরণার আরেকটি বড় নাম– চলচ্চিত্র নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গ। শিশুদের কাছ থেকেও বড় ধরনের প্রেরণা পাই আমি। যখন মন ভেঙে যায়, ছোটদের ছবি ভরা কোনো বই হাতে তুলে নিই; আর মুহূর্তেই মনটা ভরে যায় আমার। শিশুদের সান্নিধ্যে থাকার মধ্যে একটা জাদুকরি ব্যাপার আছে– বোধ করি আমি। এর অনুসরণ আপনার মনকেও নিশ্চয়ই ভালো করে তুলবে। আপনার, আপনাদের জীবন হোক কল্যাণকর! 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ই আম র ট ই আম আম র ক র সব র আম র প জগত র কখন ই

এছাড়াও পড়ুন:

একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল

একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদা আক্তারের ছয় সন্তানের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেল। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশু মারা যায়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে আরও চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. ফারুক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মোকসেদা আক্তার রোববার সকালে একসঙ্গে এই ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর স্বামী মো. হানিফ কাতারপ্রবাসী। মোকসেদা আক্তারের ননদ লিপি বেগম আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকের অবস্থাও বেশি ভালো নয়।

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোকসেদা তিন ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান প্রসব করেন। সন্তানেরা ২৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়। জন্মের সময় প্রত্যেকের ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামে মধ্যে। এ কারণে তাদের সবার অবস্থাই ছিল সংকটজনক।

আরও পড়ুনঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম, নবজাতকদের অবস্থা সংকটাপন্ন২২ ঘণ্টা আগে

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে আইসিইউতে পর্যাপ্ত শয্যা খালি না থাকায় তিনজনকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকটি বেসরকারি হাসপাতালে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • স্মার্ট সিটি হবে চট্টগ্রাম, একসঙ্গে কাজ করবে গ্রামীণফোন-চসিক
  • অনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে
  • তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন
  • প্রেমিকের সঙ্গে বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি!
  • একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল