বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা কাজ করছেন; তাদের সম্মানিত করতে বিগত বছরের মতো ‘দেশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০২৪’ দেবে দেশ পাবলিকেশন্স। এ লক্ষে পাণ্ডুলিপি আহ্বান করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। আহ্বানে ২ শতাধিক পাণ্ডুলিপি জমা হয়। এরই মধ্য থেকে জুরি বোর্ডের মাধ্যমে প্রতিটি বিষয়ে দুই প্রজন্মের দুইজন করে ১০ বিষয়ে ২০ জনকে চূড়ান্ত নির্বাচন করা হয়।

২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ বছর পুরস্কারের জন্য বিভিন্ন শাখায় মনোনীত হয়েছেন ২০ গুণীজন। বিজ্ঞপ্তিতে একজন করে দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও পরে ১০টি বিষয়ে ২০ গুণীজনকে পুরস্কার দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় কর্তৃপক্ষ। দেশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার দেওয়া হবে উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, গবেষণা, মৌলিক প্রবন্ধ, অনুবাদ, থ্রিলার উপন্যাস, নাটক ও কিশোর উপন্যাস, শিশুতোষ গল্প এবং ছড়া বিভাগে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীজন হলেন- কবিতায় ‘অর্ধশতদল’ পাণ্ডুলিপির জন্য কবি রহমান হেনরী। ‘হাতিমের শহর’ পাণ্ডুলিপির জন্য ফেরদৌস মাহমুদ। প্রবন্ধে ‘কবিতা নিয়ে আলাপ’র জন্য তারেক রেজা, ‘কথাসাহিত্যে আন্তর্জাতিকতা’র জন্য শাহমুব জুয়েল। উপন্যাস ‘বাউল’র জন্য সৈয়দা আঁখি হক, ‘হেরেমের আধেক চাঁদ’র জন্য মাইনুল ইসলাম মানিক। ছোটগল্প ‘পরিযায়ী প্রাণ’র জন্য রুমা বসু, ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’র জন্য নূরে জান্নাত। গবেষণায় ‘গোয়ালগ্রাম গণহত্যা’র জন্য ইমাম মেহেদী এবং ‘চল্লিশের দশকের লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতি’র জন্য বঙ্গ রাখাল।

অনুবাদ সাহিত্যে সোহরাব সুমন ও সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি। থ্রিলার উপন্যাসে ‘কাজলরেখা রহস্য’র জন্য বিশ্বজিৎ দাস, ‘পরীতমা’র জন্য ফরিদুল ইসলাম নির্জন। নাটকে ‘পথনাটকগুচ্ছ’র জন্য স্বপন ভট্টাচার্য্য, ‘বুক পকেটে জীবন ও অন্যান্য নাটক’র জন্য আহমেদ তাওকীর। কিশোর উপন্যাস ‘কুটিচাচার গোয়েন্দা অভিযান’র জন্য দীপু মাহমুদ ও ছোটগল্প ‘স্কুলে জাদুকর এসেছিল’র জন্য নুরুল ইসলাম বাবুল। ছড়া উপন্যাসে ‘লাল বক সাদা বক’র জন্য মাসুম আওয়াল। ছড়ার পাণ্ডুলিপি ‘আলোর পাখি নাম জোনাকি’র জন্য দেওয়ান বাদল।

প্রকাশক অচিন্ত্য চয়ন বলেন, ‘জানুয়ারিতে ঘোষণা দেওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত হয়নি। সে জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। ‘চেতনায় ঐতিহ্য’ স্লোগানকে ধারণ করে সুনামের সঙ্গেই যুগ পেরিয়ে তেরো বছরে পদার্পণ করেছে ‘দেশ’। এ সময়ের মধ্যেই প্রকাশনা শিল্পে পাণ্ডুলিপির নান্দনিক পরিচর্যায় একটি স্বতন্ত্রধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের সহযাত্রী হতে আমাদের এ প্রয়াস। মার্চ মাসে দেশ সাহিত্য উৎসবে মনোনীতদের হাতে পুরস্কার হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

এর আগে যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন; তাদের পুরস্কার চলতি বছরের সঙ্গে দেওয়া হবে বলে জানান এই প্রকাশক। তিনি আরও জানান, দেশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কারের জন্য মনোনীত পাণ্ডুলিপি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পাঠানো যাবে না। এমন প্রমাণ মিললে পুরস্কার বাতিল বলে গণ্য হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র উপন য স র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ