ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের গানের রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা-২০২৪’ মৌসুমে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দেয়াশিনী রায় ও অতনু মিশ্রা। রবিবার (২ মার্চ) রাতে অনুষ্ঠিত হয় এ আসরের গ্র্যান্ড ফিনালে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এ প্রতিযোগিতায় বড়দের মধ্যে প্রথম হয়েছেন দেয়াশিনী রায়। যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন ময়ূরী দারানি ও সাই শাস্ত্রী। তৃতীয় হয়েছেন সত্যজিৎ দেব রায়। অন্যদিকে ছোটদের মধ্যে প্রথম হয়েছে অতনু মিশ্রা। দ্বিতীয় স্থানে আছে ঐশী চক্রবর্তী। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অনীক জানা, সৃজিতা চতুর্থ অবস্থানে হয়েছে।

ট্রফির পাশাপাশি সানরাইজের পক্ষ থেকে দেয়াশিনী পেয়েছেন পাঁচ লাখ রুপির (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকার বেশি) চেক, অতনু চক্রবর্তী পেয়েছে দুই লাখ রুপির (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ ৭৮ হাজার টাকার বেশি) চেক। তা ছাড়াও দুই বিজয়ী যুগ্মভাবে পেয়েছেন শ্যাম স্টিলের পক্ষ ৫ লাখ রুপি, বার্জারের পক্ষ থেকে বাড়ি রং করার সুযোগসহ পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের সোনার গহনা এবং গ্যাসোফাস্টের পক্ষ থেকে ৫ লাখ রুপি।

আরো পড়ুন:

শ্রীময়ী আমাকে সংসারী করেছে: কাঞ্চন মল্লিক

শরীর থেকে যীশুর শেষ চিহ্ন মুছে ফেললেন নীলাঞ্জনা

আনমোল মারির দিয়েছে ৩ লাখ রুপি, শালিমার দিয়েছে ২ লাখ রুপি, আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের ১ লাখ ৫০ হাজার রুপি, খুকুমণি আলতা সিঁদুরের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে ২ লাখ রুপি, মুখরোচকের দিয়েছে ৩ লাখ রুপি এবং গিফট হ্যাম্পার যা পেয়েছেন তা দুজনেই ভাগ করে নেবেন। গ্ল্যামার দুই বিজয়ীকে দিয়েছে ২০ হাজার রুপি করে। আর জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন অর্থাৎ অতনু আশীর্বাদের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার রুপি পেয়েছে। বাকি খুদে ফাইনালিস্টরা ১ লাখ রুপি করে পেয়েছে।

এ প্রতিযোগতিার তিন ফার্স্ট রানার আপ ময়ূরী দারানি, সাই মিশ্রা এবং ঐশী আনমোলের পক্ষ থেকে ২ লাখ, শালিমারের পক্ষ থেকে ১ লাখ রুপি এবং গিফট হ্যাম্পার, আদি ঢাকেশ্বরী দিয়েছে ১ লাখ এবং খুকুমণি আলতা সিঁদুর দিয়েছে ১ লাখ রুপি করে। এছাড়া গ্ল্যামার সবাইকে দেবে ১০ হাজার রুপি।

সেকেন্ড রানার আপ নির্বাচিত হয়েছেন সত্যজিৎ ও অনীক। তারা  আনমোলের পক্ষ থেকে পেয়েছেন ১ লাখ, শালিমারের পক্ষ থেকে ১ লাখ রুপি এবং গিফট হ্যাম্পার। গ্ল্যামারের দিয়েছে ১০ হাজার রুপি করে। আর বাকি ফাইনালিস্টরা পাবেন গ্ল্যামারের পক্ষ থেকে ৫ হাজার রুপি করে।

অভিনেতা আবীর চ্যাটার্জি সঞ্চালিত ‘সারেগামাপা’র গ্র্যান্ড ফিনালে বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আদনান সামি ও হৈমন্তী শুক্লা। এবারের আসরে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন— শান্তনু মৈত্র, অন্তরা মিত্র, জাভেদ আলী, জোজো মুখার্জি, কৌশিকী চক্রবর্তী, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, রাঘব চ্যাটার্জি, ইমন চক্রবর্তী ছিলেন।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হয় ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে বছর শেষে বাড়ছে ডেঙ্গু, কমেছে চিকুনগুনিয়া

চট্টগ্রামে বছরের শেষে এসে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দুই দিনেই ৮৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা একটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। গত বছরও এই সময়ে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়েছিল। এদিকে বছরের শেষ দিকে এসে চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ কমেছে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য।

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া—দুটিই মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। দুটিই এডিস মশার কামড়ে হয়। এডিসের বংশ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, নভেম্বরের শুরুতে লঘুচাপের কারণে বৃষ্টি হতে পারে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চট্টগ্রামে বছরের শুরু থেকে গতকাল বেলা একটা পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৯২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে গত অক্টোবর মাসে। পুরো জেলায় ওই মাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৯০ জন। এর আগের মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩৫। চলতি নভেম্বর মাসে এ সংখ্যা নির্ভর করছে বৃষ্টির ওপর। কারণ, শীত শুরু হলে এডিসের বংশবৃদ্ধির আশঙ্কা কম। তবে বৃষ্টি হলে সেটি বাড়তে পারে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে সর্বশেষ মৃত্যু গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয় তারা (১৬) নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নিহতের সংখ্যা ২০।

এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত কমেছে। গতকাল পর্যন্ত জেলায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৬৯। তবে চিকুনগুনিয়ায় মাসভিত্তিক তথ্য দেয়নি সিভিল সার্জন কার্যালয়। যদিও প্রতিদিনের আক্রান্তের হিসাব দেয় তারা। প্রাথমিক হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর মাসে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭০৪। গত অক্টোবর মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২১ জন। এ মাসে কেবল একজন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে সর্বশেষ মৃত্যু গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয় তারা (১৬) নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নিহতের সংখ্যা ২০।

এদিকে গত বছরের তুলনায় এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের উপসর্গগুলোও কিছুটা ভিন্ন বলে জানা গেছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৪১ জন রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন ভর্তি হয়েছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) এবং ১২ জন ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

আমাদের হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। ডায়রিয়া ও বমি হলো ডেঙ্গু ওয়ার্নিং সাইন (সতর্ক সংকেত)। এগুলো দেখলে বোঝা যায় রোগীর অবস্থা গুরুতর হচ্ছে।এ এস এম লুৎফুল কবির, মেডিসিন বিভাগের প্রধান, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা গেছে। তবে এ বছর যাঁরা আসছেন, তাঁদের মধ্যে শক সিনড্রোম বেশি। পাশাপাশি ডায়রিয়ার উপসর্গও আছে। শক সিনড্রোম হলে রোগীর রক্তচাপ বোঝা যায় না। এই দুটি উপসর্গ গুরুতর। কারণ, সময়মতো ফ্লুইড (তরল খাবার) না পেলে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হতে পারে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান এ এস এম লুৎফুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। ডায়রিয়া ও বমি হলো ডেঙ্গু ওয়ার্নিং সাইন (সতর্ক সংকেত)। এগুলো দেখলে বোঝা যায় রোগীর অবস্থা গুরুতর হচ্ছে।’

চলতি বছর এপ্রিল থেকে মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে। জুনে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হলেও পরের মাসগুলোয় স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়। আর থেমে থেমে বৃষ্টির সঙ্গে গরম কিন্তু কমেনি। এই বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রা চলতি বছর ডেঙ্গুর বিস্তারে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন কীটতত্ত্ববিদেরা। তবে সংক্রমণ কমাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নগরের ২৫টি এলাকাকে ডেঙ্গু ও ২৫টি এলাকাকে চিকুনগুনিয়ার জন্য হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এর মধ্যে বন্দর, ইপিজেড, হালিশহর, কোতোয়ালি, বায়েজিদ, পাহাড়তলী, কাট্টলী, খুলশী, ডবলমুরিং, লালখান বাজার, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, দেওয়ানহাট, আন্দরকিল্লা, মুরাদপুর, সদরঘাট—এসব এলাকায় ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এসব এলাকায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সরফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিশেষ দল করা হয়েছে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার জন্য। নিয়ম করে এলাকা ভাগ করে রুটিন অনুযায়ী ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত বৃষ্টি হওয়ার ২৮ দিন পর্যন্ত মশার প্রকোপ থাকে বলে ধারণা করা হয়। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এ মাসে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে ডেঙ্গু বাড়তে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ