৯ হত্যা মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে কৃষকলীগ নেতা নাজিম চেয়ারম্যান
Published: 3rd, March 2025 GMT
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক হত্যা মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন ওরফে নাজিম চেয়ারম্যান। তারে বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলাসহ হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে। তারপরও তাকে ধরতে প্রশাসনের নেই কোন তৎপরতা।
৫ আগস্ট স্বৈরশাসকের পতনের পর কিছুদিন পালিয়ে থাকলেও সম্প্রতি আবার প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে তাকে। নিজের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ফতুল্লার ভুইগড়ে রূপায়ণ হাউজিংয়ের পক্ষে মানুষের জায়গা দখল করতে গিয়েছিলেন রূপায়ণের আনসার সদস্যদের নিয়ে।
পরে আশেপাশের লোকজন জড়ো হলে নাজিম উদ্দিন দ্রুত গাড়িতে উঠে পালিয়ে যান ঘটনাস্থল থেকে। তবে মাঝে মধ্যে প্রকাশ্যে এসে ইন্টারনেট ও ডিস সহ অন্যান্য ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদারকি করার চেস্টা করছেন তিনি।
নাজিম চেয়ারম্যান এর যত কুকীর্তি : অভিযোগ রয়েছে রুপায়ণের বর্ধিত প্রকল্প ফেইজ ১ ও ফেইজ ২ বাস্তবায়নের জন্য আশেপাশের জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উপযুক্ত মুল্যের কম মুল্যে রূপায়ণকে জমি কিনে দিতেন তিনি। জমির মালিকরা রাজি না হলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করতেন।
রূপায়ণের জন্য জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে রাসেল নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যার নেপথ্যে কলকাঠি নাড়েন নাজিম উদ্দীন। রাসেল হত্যা মামলা আদালতে এখনো চলমান।
অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতায় থাকাকালীন ভুইগড়ে গিরিধারা জিরো পয়েন্টের পাশে ভুয়া দলিল করে এক নিরীহ ব্যক্তির জায়গা দখল করেন নাজিম উদ্দিন। ভুক্তভোগী মামলা করতে চাইলে তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হয়। ভয়ে ওই ভুক্তভোগী মামলা করতে পারেননি।
ভুইগড় শিকদার পেট্রোল পাম্পের পাশে জমির হোসেন নামের এক লোকের দুই তলা বাড়ি ভুয়া দলিল বানিয়ে দখল করে নেন নাজিম উদ্দিন। অভিযোগ রয়েছে, জেলা পরিষদ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ভুইগড় কবরস্থানের ২০ লাখ টাকা নাজিম উদ্দিন আত্নসাৎ করেন। একাধিক নারী কেলেংকারীতেও জড়িয়েছেন নাজিম উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এক পতিতার সাথে আমোদ ফুর্তি করতে গিয়ে ধরা খেয়ে ওই পতিতাকে বিয়ে করতে বাধ্য হন তিনি। সেই ঘরে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। পরিবারের চাপে ঘরে তুলতে না পেরে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে তাকে রাখতেন। পরে ছাড়াছাড়ি হয় সে সংসার।
আওয়ামী সরকারের আমলে ক্ষমতায় থাকাকালীন রূপায়ণের ফ্ল্যাট মালিকরা ফ্ল্যাট রেজিষ্ট্রেশন, গ্যাস বিল বিদ্যুৎ বিল ডিস ইন্টারনেট সার্ভিস নিয়ে বৈষম্যের শিকার হয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নাজিম উদ্দীন তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাদের হুমকি ধামকি দিতেন। এ নিয়ে রূপায়ণ টাউনবাসী তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। তারা নাজিম উদ্দীনের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ২০১৯ সালে রুপায়ণ টাউনবাসীর উপর হামলা করে নাজিম উদ্দিন বাহিনী।
এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আবু সাঈদ পাটোয়ারীসহ ৪ জন। ওই ঘটনায় আবু সাঈদ পাটোয়ারী রাসেল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় নাজিম উদ্দীনকে প্রধান আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলা নং ৬৯/১৯ যা এখনো আদালতে চলমান। ক্ষমতায় থাকাকালীন সাইনবোর্ডে পরিবহন সেক্টরে তার চাঁদাবাজি ছিল ওপেন সিক্রেট। জুলাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় ফতুল্লা সহ বিভিন্ন থানায় নাজিম উদ্দিনকে ৯টি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে।
তারপরও চাঁদাবাজি ও ভূমিদস্যু নাজিম উদ্দিন প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর সাহস পান, তা নিয়ে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী। তারা অবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃংখলাবাহিনীর কাছে দাবী জানান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এই সরকারও পুরোনো পথে, প্রশাসনে পদ ছাড়াই পদোন্নতি
জনপ্রশাসনে এখন নিয়মিত উপসচিব পদ রয়েছে এক হাজারের মতো। কিন্তু এই পদে কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৬ জন। পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা আগে থেকেই বেশি ছিল। তারপরও গত মাসে ২৬৮ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
পদোন্নতি দেওয়ার পর কর্মকর্তাদের দ্রুত পদায়ন করা যায় না। কারণ, পদায়নের মতো জায়গা কম, খালিও থাকে না। তখন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে আগের পদেই রেখে দেওয়া হয়, তাঁরা আগের কাজই করেন। শুধু বাড়ে বেতন ও ভাতা। পাশাপাশি উপসচিব পদে তিন বছর চাকরির পর গাড়ি কেনার জন্য বিনা সুদের ঋণসুবিধা পাওয়া যায়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ৫২ জন কর্মকর্তাকে আগের পদেই পদায়ন (ইনসিটু) করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ২৮ আগস্ট উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া এ রকম ২৬৮ জন কর্মকর্তার বেশির ভাগের দায়িত্বে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা আগে থেকেই বেশি ছিল। তারপরও গত মাসে ২৬৮ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।বাংলাদেশ সচিবালয়