শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব ছাড়ার দিনে এমপিওভুক্ত (সরকার থেকে বেতন পান) বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর জানালেন উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা এবং বিনোদন ভাতা বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ঈদুল আজহা থেকে এই সুবিধা কার্যকর হবে।

এত দিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। আজ বুধবার শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। এখন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শুধু পরিকল্পনা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বঙ্গভবনে সি আর আবরারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো.

সাহাবুদ্দিন। এরপর সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসেন সি আর আবরার। এ সময় সদ্য সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। দুজনকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

বেসরকারি শিক্ষকদের বিষয়ে বলতে গিয়ে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছরের বঞ্চনা ১-২ বছরের বাজেট দিয়ে মেটানো যায় না। এটা বোঝানো খুব কঠিন। আজকেই সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে-এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কী করে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা তাঁরা করে দিয়ে যাচ্ছেন।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'তাদের (এমপিওভুক্ত শিক্ষক) উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারব। এখানে আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কত বাড়াব। আমি জানি এ বছর বাজেটের মধ্যে সেটুকু এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে সেটির বিধান রাখা হচ্ছে।'

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটি তহবিলের কিছুটা এ বছরই তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, 'এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরও রাখা হবে। তবে পুরো তহবিলটি টেকসই করতে হলে ১–২ বাজেটে হবে না,৩-৪ বাজেটে আশা করি ভবিষ্যতে এটির সমাধান হয়ে যাবে।'

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র ব জ ট উপদ ষ ট ব সরক র এ বছর আবর র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে। 

এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। 

এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব। 

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।

রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”

চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”

গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়