বিমান পরিচালনা পর্ষদ বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল যেদিন থেকে চালু হবে, সেদিন থেকেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজ করবে বিমান। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে বিমানের। 

গতকাল বুধবার বিমানবন্দর এলাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জিএসই বিভাগ আয়োজিত নতুন গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট কমিশনিং-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার পরীক্ষামূলকভাবে দুই বছরের জন্য বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজ করার অনুমতি দিয়েছে বিমানকে। আশা করি, আন্তর্জাতিক মানে দক্ষ জনবল দ্বারা দক্ষতার সঙ্গে এ কাজ করবেন বিমান কর্মীরা। মুয়ীদ বলেন, বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে জাইকা সন্ধিহান থাকলেও, আশা করি তাদের সহযোগিতায় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নত করবে বিমান। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো.

মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা নিয়ে সন্ধিহান জাইকা। এ বিষয়ে জাইকার প্রশ্ন– আন্তর্জাতিক মানে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার ক্ষেত্রে বিমান কতটুকু সক্ষম; সে ধরনের জনবল ও ইকুইপমেন্ট আছে কিনা। তিনি বলেন, থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিমান যেসব ইকুইপমেন্ট বিদেশ থেকে আমদানি করছে, তাতে বিমান আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারবে।

অনুষ্ঠানে বিমান কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে আমরা তৃতীয় টার্মিনালের পরিচালনার দ্বারপ্রান্তে। সুষ্ঠুভাবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দেওয়ার জন্য বিমান কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এক বছরে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩টি ইকুইপমেন্ট জিএসই বহরে সংযোজিত হয়েছে। বুধবার যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও ৩২টি ইকুইপমেন্ট, যার মোট মূল্য ৫৪ কোটি টাকা। অচিরেই আরও ৩৪টি নতুন ইকুইপমেন্ট আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্ত হয়ে ফ্লিট সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়ক হবে। 
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিমানে এমডি ও সিইও ড. মো. সাফিকুর রহমান, বিমানের পরিচালক গ্রাহকসেবা মো. রাশদেুল করিমসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে ওষুধ নেই, চিকিৎসক নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। ফলে তেমন একটা রোগীও নেই। এই ‘নাই নাই’ হাসপাতালটির নাম মাস্টারদা সূর্য সেন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়ার এমন নমুনা আমাদের হতাশ করে। দেশজুড়ে এ রকম আরও চিত্র আমরা দেখতে পাই, যা আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেয় না।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ১০ শয্যার হাসপাতালটির মূল সমস্যা জনবলসংকট। ১৬টি পদের ১টিতেও স্থায়ী জনবল পদায়ন করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে প্রেষণে এসে মাত্র তিনজন কর্মচারী (একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন মিডওয়াইফ ও একজন আয়া) সপ্তাহে কয়েক দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি জরুরি প্রসূতিসেবাকেন্দ্র, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, ডাক্তার নেই এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম এখন প্রায় স্থবির।

হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় মাস ধরে। এ পরিস্থিতিতে একজন রোগী কীভাবে এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবেন? যেখানে হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডে জরুরি প্রসূতিসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা লেখা, সেখানে মূল ফটকে তালা ঝোলানো। এটি জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। হাসপাতালটি চালু না থাকায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল বা চট্টগ্রাম শহরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয় তো বটেই, চরম ভোগান্তিরও শিকার হতে হয় মানুষকে।

যে মিডওয়াইফরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা জানান, এখন মাসে মাত্র চার-পাঁচজন প্রসূতি সেবা নিতে আসেন, যেখানে আগে শতাধিক প্রসূতি সেবা পেতেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তবু নিয়মিত বেতন পাওয়ার আশায় তাঁরা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, তাঁরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবলসংকটের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।

একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিতে হবে? জনবল নিয়োগ, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বিদ্যুতের ব্যবস্থা কার্যকর করা—সব ধরনের সংকট দূর করতে হাসপাতালটির দিকে আন্তরিক মনোযোগ দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনবল নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পদ ৪৩০
  • হাতে ভোট গণনাসহ ছাত্রদলের ৬ দাবি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত
  • ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে
  • যে হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ, বিদ্যুৎ–সংযোগ কিছুই নেই