নতুন কোয়ান্টাম সুপারকম্পিউটার তৈরি করেছে চীন। চীনের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (ইউএসটিসি) গবেষকদের তৈরি ‘জুচংঝি-৩’ নামের সুপারকম্পিউটারটি মূলত সুপারকন্ডাক্টিং কোয়ান্টাম কম্পিউটারের প্রোটোটাইপ বা আদিরূপ। গবেষকদের দাবি, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটারের চেয়ে কোয়াড্রিলিয়ন গুণ ও গুগলের সাইকামোর প্রসেসরের চেয়ে ১০ লাখ গুণ দ্রুতগতিতে গাণিতিক কাজ করতে পারে কোয়ান্টাম সুপারকম্পিউটারটি। ফিজিক্যাল রিভিউ লেটারসে এই কম্পিউটারের সক্ষমতা নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

কোয়ান্টাম সুপারকম্পিউটারটির বিষয়ে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ‘আমরা গুগলের চেয়ে বৃহত্তর পরিসরে র‍্যানডম সার্কিট স্যাম্পলিং সফলভাবে সম্পন্ন করেছি, যা ক্ল্যাসিক্যাল ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মধ্যে কম্পিউটেশনাল ক্ষমতার ব্যবধান আরও বড় করেছে। প্রসেসরের গতি ও তারের কনফিগারেশনের অপ্টিমাইজেশনের কারণে এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। আমাদের কাজ কেবল কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের সীমানাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নয়; বরং একটি নতুন যুগের ভিত্তি তৈরি করছি আমরা। এখানে কোয়ান্টাম প্রসেসর অত্যাধুনিক বাস্তব-বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’

কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কোয়ান্টাম মেকানিকসের নীতির মাধ্যমে কাজ করে। পদার্থবিজ্ঞানের এই শাখায় সাব–অ্যাটমিক স্তরে কণার অদ্ভুত আচরণ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। আরসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সক্ষমতা যাচাই করা হয়। আর এই আরসিএস পরীক্ষায় গুগলের সাইকামোর প্রসেসর ২০১৯ সালে ২০০ সেকেন্ডের মধ্যে একটি র‍্যানডম সার্কিট স্যাম্পলিং কাজ সম্পন্ন করে রেকর্ড তৈরি করেছিল। জুচংঝি-৩ সুপারকম্পিউটারটি গুগলের প্রকাশিত ফলাফলের চেয়েও দ্রুত কাজ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে।

কোয়ান্টাম সুপারকম্পিউটারটির বিষয়ে বিজ্ঞানী ঝু জিয়াওবো বলেন, সুপারকম্পিউটারটির কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের রিডআউট নির্ভুলতা ও নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই কম্পিউটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জীববিজ্ঞান, ওষুধ উৎপাদনসহ জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন কাজে প্রভাব ফেলবে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ