ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে শুরু হওয়া বিশেষ অভিযানে এক মাসে ৩৩ হাজার ১৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডেভিল হান্ট অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১২ হাজার ৫০০ জন। একই সময়ে অন্যান্য ও ওয়ারেন্টমূলে ১৯ হাজার ৫৩১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ডেভিল হান্ট নাম নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় তা বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে রমজান ও ঈদ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব বাহিনীর সমন্বয়ে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে এই অভিযান আরও জোরদার করা হবে এবং নতুন অভিযান চালানো হবে।

জননিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগরে পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৫০টি থানা এলাকায় দুই পালায় ৬৬৭টি টহল দল দায়িত্ব পালন করছে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০ ও দিনে ৩২৭টি দল দায়িত্ব পালন করেছে। ডিএমপির পাশাপাশি মহানগরীর অপরাধপ্রবণ স্থানে দুই পালায় সিটিটিসি, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ), র‍্যাব ও এপিবিএন চেকপোস্ট পরিচালনা করেছে।

গত আট দিনে মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১ হাজার ৫৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছে ডাকাত, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, চোর, মাদক কারবারি ও  পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এ সময়ে তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার ৫০ থানায় ৪৯১টি মামলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো.

নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। শহরে বড় কোনো অপরাধের ঘটনা নেই। এর মধ্যে দু-একটা ঘটনা ঘটে। সেগুলো শনাক্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিকে চুরি-ছিনতাইয়ের বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’ 

রমজান ও ঈদ ঘিরে মহানগর এলাকার নিরাপত্তায় অতিরিক্ত ফোর্স রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে সচেতনভাবে পুলিশি সহায়তা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সব মার্কেট ও শপিংমলে অভিযান চালানো হচ্ছে। এবার ঈদ পরবর্তী সময় পর্যন্ত ঢাকায় টহল ও চেকপোস্টসহ অভিযান জোরদার থাকবে। ঈদের সময় ফাঁকা ঢাকায় অপরাধ করে পার পাবে না অপরাধীরা।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এমপ পর স থ ত অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা 
  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • বিএনপি ও গণ অধিকারের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পটুয়াখালীর ২ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি
  • দীর্ঘ ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছে মানুষ