Prothomalo:
2025-05-01@02:59:26 GMT

ইফতারের পর ঘুম পায় কেন

Published: 9th, March 2025 GMT

রমজানে দীর্ঘ সময় না-খেয়ে থাকার পর ইফতার শরীরকে পুনরায় শক্তি ও উদ্যম ফিরিয়ে দেওয়ার একটি সুযোগ নিয়ে আসে। তবে ইফতারের পরপরই অনেকে ক্লান্তি, মাথাব্যথা বা ঘুম ঘুম ভাব অনুভব করেন এবং জেগে থাকতে রীতিমতো লড়াই করতে হয়। কেন ইফতারের পর হঠাৎ করে ঘুম পায়? কারণগুলো কী এবং কীভাবে এই ঘুম এড়ানো সম্ভব—তা নিয়ে আজ কথা বলব।

ইফতারের পর ঘুম আসার কারণ

খাবার খাওয়ার পর কিছুটা ক্লান্তি অনুভব করা স্বাভাবিক এবং এতে উদ্বেগের কিছু নেই। চিকিৎসা পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ইমান জামাল ব্যাখ্যা করেন, ‘ইফতারের পর শরীর আরাম অনুভব করে এবং অলসতা বেড়ে যায়, এর মূল কারণ অন্ত্রের হজম প্রক্রিয়া।’ তিনি বলেন, ‘ইফতারে হঠাৎ বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহণের ফলে আমাদের হজমের গতি দ্রুত বেড়ে যায়। তাই মস্তিষ্ক অন্ত্রের দিকে বেশি পরিমাণে রক্ত সরবরাহ করে, যাতে হজম প্রক্রিয়াটি সহজ হয়। ফলে শরীরের অন্যান্য অংশ, বিশেষ করে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই ইফতারের পর আমরা ক্লান্তি ও তন্দ্রাচ্ছন্ন অনুভব করি।’

আরও পড়ুনসুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত০৭ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘মেডিকেল নিউজ টুডে’র তথ্য অনুযায়ী, ইফতারের পর শরীরে ক্লান্তির অন্যতম কারণ হলো ‘সেরোটোনিন’ নামক রাসায়নিকের উৎপাদন বৃদ্ধি, যা ঘুম ও প্রশান্তি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। ‘ট্রিপটোফ্যান’ নামে একটি অ্যামিনো অ্যাসিড, যা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারে পাওয়া যায়, এটি সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়তা করে। আবার কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার শরীরে ট্রিপটোফ্যান শোষণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে যদি ইফতারে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তবে এটি ঘুমের প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্ভাবনা

 ‘হেলথ লাইন’ ওয়েবসাইটের মতে, কিছু ক্ষেত্রে ইফতারের পর ক্লান্তি বা সারা দিন ঘুম ঘুম অনুভব করা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। যেমন: ডায়াবেটিস, খাবারে অ্যালার্জি, রক্তাল্পতা, থাইরয়েডজনিত সমস্যা ইত্যাদি। 

আরও পড়ুনশয়তানের ধোঁকার কাহিনি০৭ মার্চ ২০২৫

ঘুম এড়াতে

 ১.

কিছু খাবার এড়িয়ে চলুন: পুষ্টিবিদ ইমান জামাল পরামর্শ দেন, ইফতারে কিছু খাবার পরিহার করলে বা কম খেলে ঘুমের সমস্যা কমানো যেতে পারে। যেমন ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার ও ফলের জুস (যা রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়), সাদা চালের ভাত, পাস্তা, সাদা আটার তৈরি খাবার (যেমন সাদা পাউরুটি ও অন্যান্য বেকারি আইটেম), সাদা চিনি ও উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার ইত্যাদি।

 ২. স্বাস্থ্যকর উপায়ে ইফতার করুন: ইমান জামাল বলেন, ‘ইফতার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে করলে আকস্মিক ঘুম ঘুম ভাব এড়ানো সম্ভব।’ তার মতে ইফতারের সঠিক পদ্ধতি হলো:

 ক) একটি খেজুর ও এক গ্লাস পানি দিয়ে রোজা ভাঙা,

 খ) এরপর মাগরিবের নামাজ আদায় করা

 গ) নামাজের পর প্রথমে স্যুপ দিয়ে মূল খাবার শুরু করা।

 তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘খেজুর খেলে শরীর প্রয়োজনীয় ফাইবার ও প্রাকৃতিক চিনি পায়, যা দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে। স্যুপ খাওয়া হজমের জন্য উপকারী, কারণ এটি পাকস্থলীকে খাবার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করে।’

 ৩. ‘প্লেট রুল’ অনুসরণ করুন: পুষ্টিবিদরা ইফতারের সময় সুষম খাবার গ্রহণের গুরুত্ব ওপর জোর দেন। পুষ্টিবিদ ইমান জামাল পরামর্শ দেন, ‘কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি, এবং ইফতারের শুরুতেই পর্যাপ্ত পরিমাণে সালাদ খাওয়া উচিত।’ তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘সালাদ শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও লবণ সরবরাহ করে, যা দীর্ঘ সময় রোজা রাখার ফলে শরীরে ঘাটতি দেখা দেয়। এটি পাকস্থলী ভরিয়ে রাখার অনুভূতি দেয়, ফলে কার্বোহাইড্রেট ও অন্যান্য ভারী খাবার গ্রহণ কমানো সম্ভব হয়।’ তাই তার মতে ‘প্লেট রুল’ অনুসরণ করা যেতে পারে। প্লেট রুল হলো, প্লেটের অর্ধেক অংশ সবজি বা সালাদ দিয়ে পূরণ করতে হবে এবং বাকি অর্ধেক দুই ভাগে বিভক্ত হবে—এক ভাগ প্রোটিন, আর অন্য ভাগ স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট (যেমন গমের রুটি বা লাল চাল)।

 ৪. চা-কফি খাওয়ার সময় ঠিক করুন: পুষ্টিবিদদের মতে, ‘ইফতারের পরপরই চা বা কফি পান না করাই ভালো।’ কারণ চা ও কফিতে থাকা ‘ট্যানিন’ উপাদান আয়রনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শরীরের আয়রন শোষণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, যা দীর্ঘ মেয়াদে রক্তাল্পতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই ইফতারের এক থেকে দুই ঘণ্টা পর চা বা কফি পান করা উচিত।

আরও পড়ুনযে সাহাবির মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল ০৮ মার্চ ২০২৫

৫. ইফতার ধাপে ধাপে করুন: ইফতার করার ধরনও ঘুমের প্রভাব কমাতে পারে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, ইফতারের মূল খাবার খানিকটা দেরিতে খেলে শরীরকে খাবার ও পানীয় গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করার সুযোগ পাওয়া যায়। যেমন:

 ক) প্রথমে একটি খেজুর ও এক গ্লাস পানি পান করুন।

 খ) তারপর ১০-১৫ মিনিট বিরতি নিন, নামাজ আদায় করুন।

 গ) এরপর ধীরে ধীরে ইফতার করুন, শুরুতে হালকা খাবার বা স্যুপ খাওয়া উত্তম।

 ধাপে ধাপে ইফতার গ্রহণ করলে হজমতন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে না এবং শরীরে রক্তপ্রবাহের ভারসাম্য বজায় থাকে, ফলে ইফতারের পর হঠাৎ ঘুম ঘুম ভাব কম হয়।

 ৬. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: পর্যাপ্ত ঘুম না পাওয়াও ইফতারের পর ঘুম ঘুম ভাবের অন্যতম কারণ। ইফতারের পর শরীর আরাম অনুভব করে এবং পরিপূর্ণ পাকস্থলীর কারণে অলসতা বেড়ে যায়, বিশেষত যদি আগের রাতে ভালো ঘুম না হয়। তাই ঘুমের রুটিন ঠিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুনআল্লাহ যেভাবে গুনাহ ক্ষমা করেন১৫ ঘণ্টা আগে

৭. ব্যায়াম করতে ভুলবেন না: ব্যায়াম শরীরকে দিনের মধ্যে চাঙা রাখতেও সাহায্য করে। ফলে খাবারের পর অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অলসতা কম হয়। এছাড়া, সক্রিয় না থাকলে শরীর সংরক্ষিত শক্তি জমিয়ে রাখে, যা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা কঠিন হয়ে যায়। অন্যদিকে, ব্যায়াম করলে শরীরে শক্তির প্রবাহ নিশ্চিত হয়, যা সারা দিন চাঙা থাকতে সহায়তা করে।

 সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও শরীরচর্চা নিশ্চিত করলে রমজানে ইফতারের পর ঘুম ঘুম ভাব কমিয়ে শরীরকে আরও সক্রিয় রাখা সম্ভব।

 সূত্র: আল জাজিরা ডট নেট

আরও পড়ুনউয়ায়েস করনির কাহিনি১০ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খ ব র গ রহণ পর য প ত অন য ন য গ রহণ র র অন য পর ম ণ সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

নেই নিয়োগপত্র, আইডি কার্ড ও ছুটি

নিয়োগপত্র নেই। এ কারণে চাকরির নিশ্চয়তাও নেই। দেওয়া হয় না পরিচয়পত্র। নেই কর্ম ঘণ্টার হিসাব। তবে রয়েছে মজুরিবৈষম্য ও জীবনের ঝুঁকি। এ চিত্র খুলনার বরফকলে কর্মরত বরফ শ্রমিকদের।

অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত বরফকলের শ্রমিকেরা জানেন না মে দিবসের অর্থ। তারা শুধু এটুকু জানেন, কাজ থাকলে মজুরি পাবেন, অন্যথায় জুটবে না কিছু। খুলনার নতুন বাজার, রূপসা, শিপইয়ার্ড ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বরফ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে উঠে এসেছে ঝুঁকি ও বৈষম্যের এই চিত্র।

সরেজমিনে জানা গেছে, লবণ পানি এবং অ্যামোনিয়া গ্যাসের সংমিশ্রণে বরফের প্রতিটি ক্যান তৈরি হয়। এ কাজে প্রচণ্ড ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার লিকেজ হলে মৃত্যুসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা। এছাড়াও অধিকাংশ সময় হাত-পা ভিজে ঠান্ডা থাকায় ক্ষত থেকে ইনফেকশন হয়। এর বাইরে বুকে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ভোগেন এখানকার শ্রমিকেরা। পাতলা বরফে অনেক সময় হাত-পা কেটে যায়। কিন্তু মালিক বা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জন্য কোন ধরনের অ্যাপ্রোন বা নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করেন না। তবে দুর্ঘটনায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

আরো পড়ুন:

ফুড ডেলিভারিম্যান: খাবারের রাজ্যে অতৃপ্ত দিনরাত

মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার, নিউমার্কেট, শিপইয়ার্ড, রায়েরমহল এবং রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসা এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টি বরফকল রয়েছে। এর মধ্যে নতুন বাজার ও পূর্ব রূপসায় সর্বাধিক বরফকল রয়েছে। এসব কলে গড়ে দশ জন হিসেবে দেড় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন।

রূপসার নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’ কাজ করেন মোহাম্মদ রাসেল হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি হলেও পরিবার নিয়ে রূপসার জাবুসা এলাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘ সাত বছর ধরে এই বরফকলে কাজ করছেন তিনি। রাসেল জানান, তাদের মাসিক বেতন নেই। নেই নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র। মূলত উৎপাদনের উপর প্রতি পিস বরফের ক্যান অনুযায়ী ১২ টাকা হারে মজুরি পান। নামমাত্র এ মজুরিতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার ঠিকমতো চলে না।

‘‘তিন বছর আগে নির্ধারণ করা মজুরি এখনো চলছে। লোকসানের অজুহাতে মালিকপক্ষ মজুরি বাড়াতে চান না। তাদের মতো শ্রমিকদের কোন বেতন-বোনাস নেই। নো ওয়ার্ক, নো পে অর্থাৎ কাজ থাকলে মজুরি আছে কাজ না থাকলে নেই। মালিকদের এ সিদ্ধান্ত না মানলে চাকরিও থাকে না।’’ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন রাসেল হোসেন।

একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘গড়ে প্রতিমাসে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা মজুরি পাই। কিন্তু মাসিক খাবার খরচ প্রায় ৩ হাজার টাকা। বাসা ভাড়া বাবদ ৩ হাজার টাকা চলে যায়।’’

তবে জাকির হোসেন ব্যাচেলর হওয়ায় কারখানার মধ্যেই থাকেন। বিয়ের পর এ কাজ করার ইচ্ছা নেই বলে জানান তিনি।

বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ-১-এ অপারেটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন মোঃ সেলিম শেখ। তার জন্ম নড়াইলের লক্ষ্মীপাশা হলেও কর্মসংস্থানের কারণে রুপসার বাগমারা গ্রামে বসবাস করছেন। তিনি জানান, বর্তমান বয়স ৮৪। ২০ বছর বয়স থেকেই বরফ কারখানার সঙ্গে জড়িত। প্রথমে হেলপার হিসেবে ২৫০০ টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে অপারেটর হিসেবে মাসিক ১৫ হাজার টাকা পান। প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে কাজ শুরু করতে হয়। তবে সবসময় উৎপাদন না থাকলেও ২৪ ঘণ্টা কারখানায় থাকতে হয়। ছুটি পান না।

‘অ্যামোনিয়া গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের কারণে সিলিন্ডার লিকেজ হলে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। তবে তিনি কখনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হননি বলে জানান তিনি।

‘মায়ের দোয়া আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজে’র শ্রমিক জাকারিয়া হাওলাদার বলেন, ‘‘চার বছর বরফকলে কাজ করছি। চাকরির ভবিষ্যৎ নেই। শ্রম দিতে পারলে মজুরি হয়, না হলে হয় না। নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেন না মালিকপক্ষ। বেতন বাড়ানোর কথা বললে তারা আমলে নেন না।’’

একই এলাকার ‘ব্রাইট অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’ কাজ করছেন মোঃ মুন্না গাজী ও মোঃ হাসান শেখ। তারা নগরীর জিন্নাপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। তারা দুজনেই মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন পান। এর বাইরে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নেই।

‘ব্রাইট অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’র ম্যানেজার আশিকুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সুরক্ষায় উদাসীন। এখানে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার মাঝেমধ্যেই লিক হয়। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৩২টি আইস উৎপাদনের ক্যানের প্লান্ট রয়েছে। তবে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ ক্যান বরফ উৎপাদন হয়। ছয়জন শ্রমিক কাজ করে বলে জানান তিনি।

‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ- ২'র ম্যানেজার জামাল উদ্দিন বলেন, ‘‘বরফের মূল ক্রেতা চিংড়ি ও সাদা মাছের ব্যবসায়ীরা। এর বাইরে গ্রীষ্ম মৌসুমে ভ্রাম্যমাণ ও দোকানে শরবত বিক্রেতারাও কারখানা থেকে বরফ কিনে নেন। গ্রীষ্ম মৌসুমের ৬ মাস চাহিদা থাকে এবং কিছুটা লাভের মুখ দেখা যায়। তবে শীত মৌসুমের ছয় মাস বরফের চাহিদা কম থাকে। তখন কারখানা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ও মজুরি দিয়ে লোকসান গুণতে হয়।’’

জামাল উদ্দিন স্বীকার করেন কারখানায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকলেও তা এড়াতে কোন সরঞ্জাম নেই। তবে অপারেটরদের অ্যামোনিয়া গ্যাসের ঝুঁকি প্রতিরোধে মাক্স সরবরাহ করা হয়।

‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ-১'র মালিকপক্ষের প্রতিনিধি রিয়াদ-উল-জান্নাত সৈকত বলেন, ‘‘ব্যবসা খুব ভালো যাচ্ছে না। কখনো লাভ, কখনো লোকসান এভাবেই চলছে। গত বছর কারখানা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৯ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।’’

তবে লাভ হলে শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে শ্রমিকদের সংগঠন রূপসা বেড়িবাঁধ হ্যান্ডলিং শ্রমজীবী ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিপন শেখ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘‘নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি বরফকলের ৪০ জন শ্রমিক তাদের ইউনিয়নের সদস্য। বিগত দেড় বছর আগে মজুরির সমস্যা নিয়ে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে দুই একজন শ্রমিক অভিযোগ করলে ইউনিয়নের মাধ্যমে সেটির সমাধান করে দেন তারা। কিন্তু বর্তমানে অভিযোগ নিয়ে কেউ আসে না।’’

বরফকলের শ্রমিকদের নিয়ে তারা মে দিবসের কর্মসূচি পালন করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তারা//

সম্পর্কিত নিবন্ধ