ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শিক্ষকের নাম মোজাম্মেল হক ওরফে মানিক (৫০)। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক মোজাম্মেল পবিত্র রমজান মাসের ছুটিতে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীকে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। গতকাল ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে যায়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে মোজাম্মেল তাদের ছুটি দেন। কিন্তু বাড়িতে আসার সময় মোজাম্মেল ভুক্তভোগী ওই শিশুশিক্ষার্থীকে আবার বিদ্যালয়ে ডেকে নেন। পরে বিদ্যালয়ের কক্ষে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি দেখান। বাড়িতে গিয়ে শিশুটি তার মাকে সব বলে দেয়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযুক্ত মোজাম্মেল হককে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ভূল্লি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার সকালে মোজাম্মেলকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালতে তোলার সময় মোজাম্মেলকে দেখেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ ঘটনার আজ বেলা ১১টায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে ঠাকুরগাঁও শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেয়।

ভূল্লি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, আজ সকালে ধর্ষণ মামলার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে টেক্সটাইল কারখানায় গ্যাসের মিটার বিস্ফোরণে চারজন দগ্ধ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি টেক্সটাইল কারখানায় গ্যাসের মিটার বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডে চার নিরাপত্তা প্রহরী দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রূপসী কাজীপাড়া এলাকার জৈনপুরী আশরাফিয়া টেক্সটাইল কারখানায় (মঞ্জু টেক্সটাইল) এ ঘটনা ঘটে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মে দিবসের কারণে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ। এ জন্য লাইনে গ্যাসের উচ্চ চাপ সৃষ্টি হয়ে মিটারে বিস্ফোরণ হয়। সেখান থেকে আগুন ধরে চারজন নিরাপত্তা প্রহরী দগ্ধ হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই কারখানার লোকজন ও স্থানীয় লোকজন মিলে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

এ ঘটনায় দগ্ধ আবদুল হান্নান (৫০), কবির হোসেন (৪৫) ও সাইফুল ইসলামকে (২৫) রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ অন্যজনের নাম জানা যায়নি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

হাসপাতালের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। আঘাত গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনের শরীরের ৩৪ থেকে ৫৩ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, রাতের ডিউটি (দায়িত্ব) শেষে সকাল আটটার দিকে শ্রমিকেরা কারখানা ছেড়ে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর তিতাস গ্যাস সংযোগের আরএমএস কক্ষে বিকট শব্দে একটি দেয়াল ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। তখনই চারজন দগ্ধ হন। পরে কারখানার লোকজন ও স্থানীয় লোকজন মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ঘটনাটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ দাবি করে কারখানার মালিক মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার পর আপাতত কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের সব চিকিৎসার ব্যয় কারখানা থেকে বহন করা হবে। তাঁদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ