যমুনা সার কারখানার উৎপাদন শুরু, গ্যাসের চাপ কম
Published: 9th, March 2025 GMT
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় যমুনা সার কারখানার (জেএফসিএল) উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে গ্যাসের চাপ কম থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
১১ দিনের মাথায় আবার সার উৎপাদন শুরু হওয়ার বিষয়টি আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন যমুনা সার কারখানা কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন।
গ্যাস-সংকটের কারণে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে দেশের সবচেয়ে বড় ইউরিয়া সার কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ ছিল। এ বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি কারখানায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাস সরবরাহ শুরু করে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কারখানায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। ত্রুটি মেরামতের পর ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছিল। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আবার সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে হঠাৎ কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর পর্যন্ত ত্রুটি মেরামতের চেষ্টা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঠিক না হওয়ায় কারখানার উৎপাদন বন্ধের বিষয়টি ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয়। অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টের যান্ত্রিক ত্রুটির মেরামত কাজ শেষ হওয়ার পর আজ সকাল থেকে কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টের যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামতের পর উৎপাদন শুরু হয়েছে। সকালের দিকে মোটামুটি গ্যাসের প্রেশার ছিল। দুপুরের দিকে প্রেশার একদম কমে গেছে। ফলে কারখানায় সার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের প্রেশার বাড়বে। প্রেশার বাড়লেই পুরোপুরি উৎপাদন করা যাবে।’
সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দিতে দেশের বৃহত্তম দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা অবস্থিত। প্রতিদিন ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন উৎপাদনসক্ষমতা নিয়ে ১৯৯১ সালে এই কারখানায় সার উৎপাদন শুরু হয়। এই কারখানা থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ মোট ১৯ জেলায় সার সরবরাহ করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।