দেশে মবক্রেসি চলছে, জানমালের নিরাপত্তা নেই: জিএম কাদের
Published: 9th, March 2025 GMT
জানমালের নিরাপত্তা নেই। দেশে মবক্রেসি চলছে বলে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। প্রতিদিন এই অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। বাড়ছে বেকারত্ব। এরই মধ্যে প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হচ্ছে। এ কারণেই, দেশে অভুক্ত ও অর্ধভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।”
আরো পড়ুন:
আইন-শৃঙ্খলার এত নাজুক অবস্থা স্মরণকালে নেই: জিএম কাদের
নির্বাচনের আগে সংস্কারের প্রয়োজন নেই: জিএম কাদের
দেশে মবক্রেসি বা মবতন্ত্র চলছে অভিযোগ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “রাজনীতির নামে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের জন্য উশৃঙ্খল জনতার অভাব হয় না। সরকার ঘনিষ্ঠ মহল ভাবাদর্শের এসব জনতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বাধা দিচ্ছে না, অনেক ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে বা করতে বাধ্য হচ্ছে। এই সুযোগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বাহিনী যে কাউকে আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগের দোসর ট্যাগ দিয়ে তার সহায় সম্পদ লুটপাট করতে পারছে। বিনা বাধায় মানুষকে অত্যাচার, নির্যাতন ও হেনস্তা করার যেন লাইসেন্স পেয়ে গেছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
“সম্প্রতি গুলশানের একটি বাসায় লুটপাটের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে, অথচ লুটের ঘটনায় ৮০/৯০ জন মানুষ উপস্থিত ছিল বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। বাকি মানুষ কি কারনে দায় মুক্তি পেল, বোঝা গেল না। ঢালাওভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিগত সরকারের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এতে করে তাদের মনোবল দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে। তারা দায়িত্ব পালনকে অনেক ক্ষেত্রেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে, সে কারণে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে না। এভাবে বেশি দিন চলতে থাকলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় দলের মহাসচিব মো.
ঢাকা/রাইজিংবিডি/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ এম ক দ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।”
উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।”
তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।”
তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।”
উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”
পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।”
তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস