এমএসএফ ও সোফেনের উদ্যোগে আলোচনা সভা
Published: 10th, March 2025 GMT
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এবং সোফেনের যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা: চ্যালেঞ্জ এবং করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভাটি রোববার বিকেলে এমএসএফ এর নিজস্ব কার্যালয় ধানমন্ডির সাঁঝের মায়াতে অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এমএসএফর প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড.
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চারুশিল্পী সাঈদা কামাল এবং দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ।
আলোচনা সভার শুরুতে কবি ও মানবাধিকার কর্মী সুফিয়া কামালের নারীর অধিকার বিষয়ক একটি ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করা হয়। এরপর প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে নারীর ওপর সহিংসতার একটি কনসেপ্ট নোট পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করা হয়।
এতে বলা হয়- সহিংসতার ঘটনা অনলাইনে হলেও তার প্রভাব এতোই মারাত্মক যে, বাস্তব জীবনে নারী ও শিশুরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে অনলাইনে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ১৯টি খবর প্রকাশিত হয়েছে। যার মধ্যে ১৭টি ঘটনায় নারী ও শিশু এবং দুটি ঘটনায় পুরুষ সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৩টি ঘটনায় একজন কিশোরী, একজন নারী ও দুই সন্তানের জননীসহ মোট ৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মোবাইলে সাবেক প্রেমিক ও স্বামী আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার অপমানে তারা আত্মহত্যা করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বারোটি ঘটনায় সাবেক স্বামী ও প্রেমিক, একটি ঘটনায় বর্তমান স্বামী, একটি ঘটনায় চাকরি ও মডেল হওয়ার প্রলোভন দেখানো কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থী, একটি ঘটনা চুরি সংক্রান্ত, একটি ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং একটি ঘটনায় শিশু সাহিত্যিকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আর পুরুষদের অনলাইনে হয়রানির দুটি ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে একটিতে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র এবং অন্যটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। এছাড়াও চলতি বছরের ৯ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে নারীর প্রতি সহিংসতার ৭টি ঘটনা ঘটেছে।
অনলাইনে নারী ও শিশু হয়রানির ক্ষেত্রে অধ্যাপক তানিয়া হক মনে করেন নারীর উন্নয়ন যতোখানি হয়েছে ক্ষমতায়ন ততোটা হয়নি। যার অন্যতম কারণ নারীর প্রতি সহিংসতা। এ সহিংসতা থেকে পরিত্রাণের জন্য তিনি পিতৃতান্ত্রিকতা যে পুরুষের জন্যও ক্ষতিকর গবেষণার মাধ্যমে বিষয়টি সামনে আনার পরামর্শ দেন, কারণ শুধুমাত্র নারী নয়, সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত পুরুষও সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে তিনি পরিবারের ভূমিকার উপর গুরুত্ব দেন। একইসঙ্গে তিনি সংখ্যাতাত্ত্বিক উন্নয়নের চেয়ে গুনগত উন্নয়নের উপর জোর দেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মাগুরার শিশু ধর্ষণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সমকালের সহকারী সম্পাদক সাইফুর রহমান তপন বলেন, নারীরা নিরাপদ নয় বিষয়টি যেমন সত্য, পাশাপাশি আশার কথা হলো তারা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিবাদ করছে, আন্দোলন করছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনলাইনে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতেনতামূলক কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান এডিসি নাসরিন সুলতানা।
তিনি আরও বলেন, সিআইডিতে সাইবার সংক্রান্ত সেল থাকলেও বর্তমানে সেবা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আলাদাভাবে সাইবার সংক্রান্ত সেল করার কথা ভাবছে সরকার।
আলোচনা সভায় বক্তারা অনলাইনে নারী ও শিশুর প্রতি হয়রানি বন্ধে ব্যক্তিগত ও জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।
গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।
অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।
ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”
হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।
ঢাকা/আমিনুল