নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক তরুণের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীর এক মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জেরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই তরুণের বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার মেয়েটি (১১) ইফতার শেষে সন্ধ্যায় ঘরের পাশে থাকা টয়লেটে যাচ্ছিল। এ সময় প্রতিবেশী হবিকুল ইসলাম (২৩) মেয়েটির মুখ চেপে ধরে জোর করে পাশের জঙ্গলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। মেয়েটির চিৎকার শুনে তার মা এগিয়ে আসেন। তাদের ডাক-চিৎচারে আশপাশে লোকজন ছুটে এসে হবিকুলকে ঘিরে ধরেন। তবে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। পরে হবিকুলের পক্ষ থেকে গ্রামের কয়েকজন বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন এবং বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয় দেখান। তবে ওই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষ অভিযুক্ত হবিকুলের বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় হবিকুলের পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

মেয়েটির বাবা বলেন, তিনি দরিদ্র মানুষ। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে রাতে বাড়িতে আসেন। পরে হবিকুলের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের কাছে এ ঘটনার বিচার চান। তখন তাঁকে ভয়ভীতি দেখানোসহ কাউকে জানাতে নিষেধ করা হয়। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। জানাজানি হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের লোকজন মিছিল নিয়ে হবিকুলের বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। মেয়ের ওপর নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।

ঘটনার পর থেকে হবিকুল আত্মগোপনে আছেন। তাঁর পরিবারের লোকজনও বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। হবিকুলের এক চাচা বলেন, ‘শুনেছি গত শনিবার ইফতারের পর আমার ভাতিজা মেয়েটির হাত ধরে টানাটানি করেছে। পরে মেয়েটির মা কাছে এলে হবিকুল দৌড়ে পালিয়ে গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষ মিছিল বের করে আমাদের বাড়িঘরে এসে হবিকুলের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।’

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল স ল কজন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ

চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ