তরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসী
Published: 11th, March 2025 GMT
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক তরুণের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীর এক মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জেরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই তরুণের বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার মেয়েটি (১১) ইফতার শেষে সন্ধ্যায় ঘরের পাশে থাকা টয়লেটে যাচ্ছিল। এ সময় প্রতিবেশী হবিকুল ইসলাম (২৩) মেয়েটির মুখ চেপে ধরে জোর করে পাশের জঙ্গলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। মেয়েটির চিৎকার শুনে তার মা এগিয়ে আসেন। তাদের ডাক-চিৎচারে আশপাশে লোকজন ছুটে এসে হবিকুলকে ঘিরে ধরেন। তবে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। পরে হবিকুলের পক্ষ থেকে গ্রামের কয়েকজন বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন এবং বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয় দেখান। তবে ওই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষ অভিযুক্ত হবিকুলের বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় হবিকুলের পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
মেয়েটির বাবা বলেন, তিনি দরিদ্র মানুষ। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে রাতে বাড়িতে আসেন। পরে হবিকুলের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের কাছে এ ঘটনার বিচার চান। তখন তাঁকে ভয়ভীতি দেখানোসহ কাউকে জানাতে নিষেধ করা হয়। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। জানাজানি হওয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের লোকজন মিছিল নিয়ে হবিকুলের বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। মেয়ের ওপর নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
ঘটনার পর থেকে হবিকুল আত্মগোপনে আছেন। তাঁর পরিবারের লোকজনও বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। হবিকুলের এক চাচা বলেন, ‘শুনেছি গত শনিবার ইফতারের পর আমার ভাতিজা মেয়েটির হাত ধরে টানাটানি করেছে। পরে মেয়েটির মা কাছে এলে হবিকুল দৌড়ে পালিয়ে গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষ মিছিল বের করে আমাদের বাড়িঘরে এসে হবিকুলের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।’
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গতক ল স ল কজন ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?