কাদের জন্য রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ

যাঁরা দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগী, যাঁদের কিডনি বিকল হয়ে পঞ্চম ধাপে আছেন, যাঁদের নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে, যাঁদের মূত্রনালির ইনফেকশনের চিকিৎসা চলছে, আকস্মিক কিডনি বিকল রোগী, যাঁর কিডনির কোনো জরুরি অপারেশন করাতে হচ্ছে, তাঁদের জন্য রোজা রাখা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তা ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগীদের রক্তের উপাদানে কোনো জটিলতা দেখা দিলে বা রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তাঁদের এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে রোজা রাখতে হবে।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগী

যাঁরা কিডনির রোগের প্রথম থেকে পঞ্চম ধাপ পর্যন্ত আছেন, কিন্তু কোনো জটিলতা নেই, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখতে পারবেন। তবে আমিষ–জাতীয় খাবার, যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ পরিমিতভাবে খেতে হবে। ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ও ঝাল-মসলা এড়িয়ে চলতে হবে। পটাশিয়ামযুক্ত শাকসবজি ও ফল সীমিত পরিমাণ খাবেন। চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তের উপাদান মাঝেমধ্যে পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। যাঁদের শরীরে অতিরিক্ত পানি আছে বা শরীর ফোলা, তাঁরা একবারে অনেক বেশি পানি খাবেন না। সাহ্‌রির সময় ভাত-রুটি, মাছ-মাংস, ডিম, দুধ পরিমিত খেতে পারেন। ইফতারে খেজুর, চিড়া, দই, ডিমের পুডিং, সেমাই, পায়েস, পিঠা ইত্যাদি খেতে পারেন।

আরও পড়ুনডায়াবেটিসে রোজা রাখা কাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঘন ঘন প্রস্রাবে ইনফেকশন

প্রস্রাবে ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহ্‌রির সময় ও ইফতারের পরপর বেশি পানি পান করবেন। কমপক্ষে তিন লিটার প্রতিদিন। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন।

কিডনিতে পাথর

পানি কম পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। কাজেই যাঁদের পাথর হওয়ার প্রবণতা আছে, তাঁদের ইফতার থেকে শুরু করে সাহ্‌রি পর্যন্ত ৩-৪ লিটার পানি পান করতে হবে। সেই সঙ্গে কাঁচা লবণ পরিহার করতে হবে এবং আমিষ–জাতীয় খাবার, বিশেষ করে গরু-খাসির মাংস কম খেতে হবে।

আরও পড়ুনরোজা রেখে পর্যাপ্ত না ঘুমালে কী হয়০৬ মার্চ ২০২৫

দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগীদের খাদ্যতালিকা

মাছ-মাংস: মুরগির মাংস, বিভিন্ন ধরনের মাছ পরিমিত।

শাক: লালশাক, ডাঁটাশাক, কলমিশাক, মিষ্টিকুমড়ার শাক, লাউশাক, শর্ষেশাক ও কচুশাক।

সবজি: ডাঁটা, পটোল, করলা, ঝিঙে, কাঁকরোল, লাউ, শসা, চালকুমড়া, বিচি ছাড়া শিম, ধুন্দুল, বেগুন, গাজর, চিচিঙ্গা ও আলু (সামান্য)।

ফল: আপেল, পাকা পেঁপে, পাকা পেয়ারা, আনারস, নাশপাতি, জামরুল, পাকা বেল।

অন্যান্য: চাল, আটা, ময়দা, মুড়ি, চিড়া, মুগ ডাল (অল্প পরিমাণ), সেমাই, সুজি, বার্লি, কর্নফ্লেক্স, ভুট্টা, কর্নফ্লাওয়ার ইত্যাদি।

কিডনি সংযোজনের রোগী

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, কিডনি সংযোজিত রোগীরা রোজা রাখতে পারেন। তবে তাঁদের ওষুধ নিয়মিত খেতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত।

ডা.

সুরাইয়া আক্তার, মেডিসিনবিশেষজ্ঞ, এ কে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আজম খান ফাউন্ডেশন লিমিটেড, গাজীপুর

আরও পড়ুনক্যানসারের রোগীরা কি রোজা রাখতে পারবেন১০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কারা বেশি কাঁদেন? 

কান্না একটি এমন একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর মানসিক প্রক্রিয়া যা শরীরকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।  গবেষণায় দেখা গেছে যে, ‘‘যারা বেশি কাঁদেন তাদের মধ্যে কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এর কারণ কখনও মানসিক কখনও শারীরিক আবার কখনও পারিপার্শ্বিক বিষয়।’’ বেশি কান্না করা মানুষের আচরণে বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।

উচ্চ মানসিক সংবেদনশীলতা 
এই ব্যক্তিরা সাধারণত অন্যের আবেগ ও অনুভূতি খুব সহজেই বুঝতে পারেন এবং গভীরভাবে অনুভব করেন। সামান্য ঘটনায় তারা বেশি প্রভাবিত হন। 

আরো পড়ুন:

যেসব কারণে মানুষ স্বর্ণ জমায়

বিশ্বে কারা বেশি পড়েন, কোন বই বেশি পড়েন?

সহানুভূতির প্রবণতা 
যাদের মধ্যে সহানুভূতির মাত্রা বেশি, তারা প্রায়শই বেশি কাঁদেন। তারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যের কষ্টেও সহজে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। 

মানসিক চাপ বা বিষণ্নতা 
দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্নতার কারণে মানুষ বেশি কাঁদতে পারে। কান্না এক্ষেত্রে জমে থাকা মানসিক চাপ কমানোর একটি উপায় হিসেবে কাজ করে। 

হরমোনের প্রভাব 
হরমোনের তারতম্য, বিশেষ করে নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে, কান্নার প্রবণতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মতো হরমোনের মাত্রা কান্নার সাথে সম্পর্কিত।

অতীত অভিজ্ঞতা 
অতীতের কোনো দুঃখজনক বা আঘাতমূলক ঘটনা মানুষের মধ্যে সহজে কেঁদে ফেলার প্রবণতা তৈরি করতে পারে।

যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কান্না
কিছু মানুষের জন্য কান্না হল নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করার একটি উপায়, কারণ তারা হয়তো কথা বলে তা প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। 

উল্লেখ্য, যদি অতিরিক্ত কান্না দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে বা বিষণ্নতার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়, তাহলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারা বেশি কাঁদেন? 
  • তিন কারণে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে, অক্টোবরের বৃষ্টিও ভোগাবে