নানকের সহযোগীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল দুর্বৃত্তরা
Published: 12th, March 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় পাঁচ মামলার আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (১২ মার্চ) মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে গোলাম মোস্তফা নামের ওই আসামির কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন মিলে তাঁকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে লালমাটিয়ার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের একটি দল আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরানোর সময় আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়।
গোলাম মোস্তফা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত। জুলাই আন্দোলনের সময় নানককে ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিষয়ে মোহাম্মদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন, ‘‘পুলিশ লালমাটিয়া এলাকায় গোলাম মোস্তফা নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে যায়। এ সময় তার কয়েকজন কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন মানবঢাল তৈরি করে তাকে গ্রেপ্তারে বাধা দেয়। পুলিশ আসামিকে নিয়ে আসতে চাইলে বাধা দেয় এবং পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়।’’
ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, ‘‘তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় বাকিদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’
তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, ‘‘মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের একটি দল একাধিক মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। কিন্তু সেখানে কিছু লোক আগে থেকেই থাকায় গ্রেপ্তার করতে বাধা দেয়।’’
ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র করত গ র প ত র কর ম হ ম মদপ র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?