সাইনবোর্ড লাগিয়ে বিএনপি নেতার জমি দখল
Published: 13th, March 2025 GMT
কুয়াকাটা পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের বিরুদ্ধে দলটির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জমিতে সাইনবোর্ড-পিলার বসিয়ে জমি দখল ও বাণিজ্যের অভিযোগ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে কুয়াকাটা প্রেস ক্লাবের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ মুসুল্লি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রশিদ মোল্লা গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জমিতে সাইনবোর্ড-পিলার স্থাপন করে বাণিজ্য করছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক লোক আত্মগোপনে চলে গেলেও রশিদ মোল্লারা বিভিন্নভাবে এলাকায় থেকে তাঁর ছেলে কুয়াকাটা পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক (২) আবুবকর সিদ্দিক মোল্লাকে সঙ্গে নিয়ে ফের সাইনবোর্ড বাণিজ্য শুরু করেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ কাজ করায় বিএনপির সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল আজিজ বলেন, বাবা-ছেলে মিলে অন্যায়ভাবে দখলবাণিজ্য করায় সম্প্রতি মহিপুর থানা পুলিশের অনুরোধে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পেট্রোল পাম্পের পেছনের এক টুকরো জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়েছিলেন তিনি (আজিজ)। সেখানে পৌর বিএনপি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকটি গোপনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভিডিও করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এতে তাঁর ও দলের সম্মানহানি ঘটছে।
গত সোমবার রাতে ওই বিরোধ নিষ্পত্তির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সহসভাপতি হাবিবুর রহমান হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুবকর সিদ্দিক মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁর ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আওয়ামী লীগের কমিটিতে বাবার নাম আছে কিনা তাঁর জানা নেই। তবে তিনি কখনও আওয়ামী লীগের কোনো অনুষ্ঠানে যাননি। এছাড়া যে জমি নিয়ে তাঁর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ওই জমিতে তারা সাইনবোর্ড দেননি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ প র ব এনপ র স ইনব র ড আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’