সব দেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
Published: 13th, March 2025 GMT
গতকাল বুধবার নতুন নির্বাহী আদেশ সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যত ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্য আসছে, তাতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে ট্রাম্প কানাডার অ্যালুমিনিয়াম ও ধাতব পণ্যে শুল্ক দ্বিগুণ করার আদেশ দিয়েও পরে বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন।
এর মধ্য দিয়ে মার্কিন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনকারীদের সুবিধা দিতে চান ট্রাম্প। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এতে বিপুল পরিমাণ ভোক্তা ও শিল্পপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। এতে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা কমতে পারে কিন্তু বাস্তবতা হলো, এর মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক পরিসরে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।
এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যেও শুল্ক আরোপ হলো—ট্রাম্প ২.
ডোনাল্ড ট্রাম্প এতেই ক্ষান্ত দেবেন না, গতকাল তিনি বলেই দিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার এই পাল্টা শুল্ক আরোপের জবাবেও তিনি বাড়তি শুল্ক আরোপ করবেন। তবে কবে ও কখন কী পরিমাণে এই শুল্ক আরোপ করা হবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। বলেন, ‘অবশ্যই—আমি এর জবাব দেব।’
এত দিন ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছেন। ট্রাম্প ২.০ জমানায় এটাই পাইকারিভাবে অর্থাৎ সব দেশের পণ্যে একযোগে শুল্ক আরোপ করার ঘটনা।
ট্রাম্পের প্রথম জমানায়ও এ ধরনের শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ট্রাম্প ইস্পাতে যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তাতে সে দেশে গাড়ি, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ইস্পাত উপকরণের দাম বেড়ে গিয়েছিল; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন বেড়েছিল সামান্য। ২০২১ সালে এসব শিল্পের সম্মিলিত উৎপাদন বেড়েছিল মাত্র ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলারের বেশি।
আবার ট্রাম্প যেসব শিল্প রক্ষা করতে চান, সেসব শিল্পে এর উল্টো প্রভাব পড়তে পারে। এই শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এক লাখ মানুষের কাজ চলে যেতে পারে। এর মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম শিল্পে কাজ যেতে পারে ২০ হাজার মানুষের। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালকোয়ার প্রধান নির্বাহী উইলিয়াম ওপলিঞ্জার গত মাসে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন।
তবে ট্রাম্প একাধিকবার শুল্ক বাড়িয়ে বা নতুন শুল্ক আরোপ করে পিছিয়ে এসেছেন। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেন, একাধিক মার্কিন দুগ্ধ পণ্যে কানাডা যেভাবে একতরফা ২৫০ থেকে ৩৯০ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক চাপায়, তা মার্কিন কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থী। বহু বছর ধরে চলে আসা এ ধরনের অত্যাচার আর সহ্য করা হবে না।
এখানেই শেষ নয়। তার সঙ্গেই ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, একাধিক খাতে মার্কিন পণ্যে বহু বছর ধরে অবিশ্বাস্য হারে শুল্ক আরোপ করে রেখেছে কানাডা সরকার। অতি দ্রুত যদি তারা তা তুলে না নেয়, সে ক্ষেত্রে আগামী ২ এপ্রিল কানাডার গাড়িতে ‘উল্লেখযোগ্য’ হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। যদিও ট্রাম্পের এই হুমকির কারণে নিজেদের অবস্থান বদলানো হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কানাডার শীর্ষ প্রশাসন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১
খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।