Risingbd:
2025-09-18@03:37:33 GMT

ডাস্টবিন সল্পতায় পাবিপ্রবি

Published: 13th, March 2025 GMT

ডাস্টবিন সল্পতায় পাবিপ্রবি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) প্রতিদিনই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ প্রচুর বহিরাগত আসেন। তাদের ব্যবহৃত উচ্ছিষ্ট ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় ডাস্টবিন নেই বললেই চলে। এতে প্রতিনিয়ত নোংরা হচ্ছে ক্যাম্পাসটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, একাডেমিক ভবন, ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একটি করে স্থায়ী ডাস্টবিন এবং মাঠ সংলগ্ন লেকের পাশে ছোট ও মাঝারি চারটি, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সামনে একটি করে ছোট ডাস্টবিন রয়েছে। এছাড়া একাডেমিক ভবনে ও এলিভেটরে কোন ডাস্টবিন পাওয়া যায়নি।

মোছা.

নুরুন্নাহার ইয়াসমিন নুপুর নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “ক্যাম্পাসের মাঠ থেকে শুরু করে সব স্থানেই ডাস্টবিনের স্বল্পতা রয়েছে। ফলে চারপাশে ময়লা পড়ে থাকে, যা অস্বস্তিকর এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে। মেয়েদের ওয়াশরুমগুলোতেও পর্যাপ্ত ডাস্টবিন নেই। ওয়াশরুমের সামনে ও ভেতরের মেঝেতে টিস্যু পড়ে থাকতে দেখা যায়। শ্রেণিকক্ষগুলোতেও  ময়লা ফেলার ঝুড়ি না থাকায় মেঝে ও বারান্দায় অসংখ্য কাগজের টুকরো দেখা যায়। এ সমস্যার দ্রুত নিরসন প্রয়োজন।”

আরেক শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, “দিনদিন আমাদের ক্যাম্পাস নোংরা বেশি হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় ডাস্টবিন নেই বললেই চলে। আর যেগুলো আছে সেগুলো সবসময় ময়লা আবর্জনা দিয়ে পূর্ণ থাকে। ফলে সবাই ডাস্টবিনের আশেপাশে ময়লা ফেলে। সেগুলো আবার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, যা চরম দৃষ্টিকটু দেখায়। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।”

তিনি আরো বলেন, “মাঠে প্রতিদিন বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের ইফতার মাহফিল হচ্ছে। ইফতার শেষে ডাস্টবিনের সংকটে ময়লা মাঠের সাইডে জমা করে রাখা হচ্ছে। ফলে বিভিন্নভাবে ময়লা এদিক সেদিকে চলে যাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।”

এ বিষয়ে এস্টেট শাখার প্রধান ডেপুটি রেজিস্টার সুজা উদ্দিন বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্ট ডাস্টবিন বসানোর চিন্তা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় পৌরসভার বাহিরে হওয়ায় পৌরসভার থেকে সপ্তাহে একদিন ময়লা নিয়ে যাচ্ছে। ফলে ময়লা আবর্জনা বিভিন্ন জায়গায় জমা হচ্ছে। তবে এ বিষয়টি সমাধানের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।”

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।

জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।

পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।

মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ