ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে বারবার ধর্ষণ
Published: 13th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পারিবারিক কলহের জেরে করা মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কৌশলে সেই ঘটনার ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার জালাল হোসেন (৪০) নামের প্রধান অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর আগে গত বুধবার রাতে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলো উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের সখের গাঁও গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে জালাল হোসেন (৪০), জামাল মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (৩৫) ও একই এলাকার সেলিম মিয়া (৪২)।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার প্রধান আসামি জালাল হোসেন ওই গৃহবধূর স্বামীর চাচাতো ভাই। ২০২৪ সালের মে মাসে পারিবারিক কলহে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জালাল ওই গৃহবধূর স্বামীর নামে মামলা করে। পরে মামলা থেকে তাঁর স্বামীর নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। ১৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে নরসিংদীর একটি হোটেলে নিয়ে আবার ধর্ষণ করে এবং গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে আরও একাধিবার ধর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে জালাল সোহেল ও সেলিমকে সেই ভিডিও দেয়। তারা গৃহবধূকে ভিডিও দেখিয়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে গৃহবধূ থানায় মামলা করেন।
এদিকে, খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মনির বিরুদ্ধে তাঁর সৎভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সিদ্দিকিয়া মহল্লার বাসিন্দা গৃহবধূ খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ মামলার আবেদন করেছেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রণয় কুমার দাস আবেদনটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী নারী। বৃহস্পতিবার মামলার বিষয়টি জানাজানি হয়।
বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মনি বলেন, পারিবারিক বৈঠকে খারাপ ব্যবহার করায় অভিভাবক হিসেবে আমি তাকে দুটি চড় দিয়েছি। আদালতে যেসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে, তা আমার জন্য লজ্জার।
ফুল কুড়াতে যাওয়া শিশুকে ধর্ষণ, আদালতে আত্মসমর্পণ আসামির
রংপুরের মিঠাপুকুরে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর ফুল কুড়াতে যাওয়া শিশুকে ধর্ষণ করা সার্ভেয়ার রুহুল আমিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার রংপুরে মিঠাপুকুর আমলি আদালতের-৩ বিচারক কৃষ্ণ কমলের আদালতে তিনি গোপনে আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে গত বুধবার রুহুলের ভাই নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে দেওয়ার জন্য ফুল সংগ্রহ করতে পাশের বাড়িতে গিয়েছিল শিশুটি। ওই সময় রুহুল আমিন শিশুটিকে কৌশলে ঘরে ডেকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় শিশুটির মা মিঠাপুকুর থানায় মামলা করেন।
নেত্রকোনায় দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
ঢাকা জজ কোর্টের হাজতখানা থেকে পালিয়ে যাওয়া দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি শহিদুল ইসলামকে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বুধবার রাতে উপজেলার গোয়াতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শহিদুল কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সেকেন্দার নগর গ্রামের রোকন মিয়ার ছেলে। র্যাব জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার ১২ আসামিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়ার সময় শহিদুল কৌশলে পালিয়ে যায়।
সিদ্ধিরগঞ্জে শিশু সন্তানকে জিম্মি করে নারীকে ধর্ষণচেষ্টা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিশু সন্তানকে জিম্মি করে এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার জালকুড়ি উত্তরপাড়া পানি ট্যাঙ্কি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন আরিফ (৩২), ডালিম (৩৫) ও বেলাল (৩৫)। আরিফ ও ডালিম ভুক্তভোগীর স্বামীর প্রতিবেশী এবং বেলাল তাদের সহকর্মী।
কালীগঞ্জে প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, মামলা
ফেসবুকে প্রেমের সূত্র ধরে কুমিল্লা থেকে ডেকে এনে এক তরুণীকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে প্রেমিক। পরে বিয়ের দাবিতে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে গেলে ভুক্তভোগীকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রেমিককে প্রধান আসামি করে সাতজনের নামে গত বুধবার রাতে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের হরিদেবপুর গ্রামের ফরিদ পালোয়ান (২৫)।
রাবি ছাত্রীর পোশাক নিয়ে কটু মন্তব্যের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রীর পোশাক নিয়ে কটু মন্তব্য ও মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই ছাত্রীর বন্ধু ফারহান মাহমুদ স্বাধীন। বিকেলে এ ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনকে নগরের রাজপাড়া থানার হর্টিকালচার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন রাজশাহী নগরের মতিহার থানার ধরমপুর এলাকার তরিকুল ইসলামের ছেলে মো.
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্যুরো ও প্রতিনিধি]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর এ ঘটন য় উপজ ল র গ হবধ ক এল ক র রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
দখলদারদের কাছে প্রশাসনের আত্মসমর্পণ
বরিশালের আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলার কয়েক হাজার কৃষকের জীবন-জীবিকার উৎস ঐতিহ্যবাহী টরকী–বাশাইল খালটি করুণ মৃত্যুর প্রহর গুনছে। নাব্যতাসংকট, নির্বিচার দখল, দূষণ ও কর্তৃপক্ষের লাগাতার অবহেলার শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের এমন পরিণতি খুবই দুঃখজনক। এটি পরিবেশের ওপর কাঠামোগত আগ্রাসনের ধারাবাহিকতারই চিত্র।
খালটি যখন প্রবহমান ছিল, তখন তা ছিল দুই উপজেলার কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষকদের এখন সেচের
জন্য ‘ডাবল লিফটিং’ (দুবার পানি উত্তোলন) করতে হচ্ছে। প্রথমে পাম্প দিয়ে কোনোমতে খালে পানি আনতে হয়। এরপর সেই পানি আবার পাম্প দিয়ে জমিতে দিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় কৃষকের সেচ খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০ শতক জমিতে যেখানে খরচ হতো ৭০০ টাকা, সেখানে এখন গুনতে হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে অনেক কৃষক বোরো আবাদ ছেড়ে মাছের ঘের বা পানের বরজ তৈরি করতে বাধ্য হচ্ছেন, নয়তো আবাদি জমির পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্থানীয় খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষি অর্থনীতিতে মারাত্মক ধস নামতে বাধ্য।
এ বিপর্যয়ের মূল কারণটি অত্যন্ত স্পষ্ট—অবৈধ দখলদারত্ব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা। খালের উৎসমুখ, অর্থাৎ টরকী বন্দরসংলগ্ন পালরদী নদীর মোহনা দখলদারেরা পুরোপুরি রুদ্ধ করে দিয়েছেন। প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে খাল ভরাট করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পাকা ও আধা পাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গৌরনদী ভূমি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘খালের জমি কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি’—এমনটা বলা হলেও দখলদারেরা কীভাবে খালের জায়গাকে ‘রেকর্ডীয় সম্পত্তি’ বা ‘ইজারা নেওয়া জমি’ দাবি করেন? এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যেই সরকারি সম্পত্তি দখল করে অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণ করছেন।
এই দখলদারদের দাপট এতটাই বেশি যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) গত বছর খাল খননের আবেদন পেয়েও কাজ শুরু করতে পারেনি। বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সাহেদ আহমেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, অবৈধ স্থাপনার কারণে খননযন্ত্র চালানো বা খনন করা মাটি রাখার মতো সামান্য জায়গাও সেখানে নেই। অর্থাৎ মুষ্টিমেয় অবৈধ দখলদার একটি সরকারি উন্নয়ন সংস্থাকে তার আইনি দায়িত্ব পালনে পঙ্গু করে রেখেছেন এবং স্থানীয় প্রশাসন এই দখলদারত্বের সামনে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কেন এই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? কার ইশারায় এই দখলদারত্ব এত বছর ধরে চলতে দেওয়া হলো? টরকী–বাশাইল খালকে পুনরুদ্ধার করতে এখন কি কোনো আন্তরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, নাকি আমরা এ জলধারার উৎসের পুরোপুরি মৃত্যু নিশ্চিত হতে দেখব?