গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ইফতার মাহফিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছে জামায়াতে ইসলামী। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জামায়াতের দুই কর্মীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর সদরে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন ঈশ্বরপুর এলাকার আসলাম (২৬) ও খলাপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দিন (৩৫)। এ ছাড়া জামায়াতের আর তিন কর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন খলাপাড়া এলাকার মোবারক সরকার (২৬), কাজী আবদুল্লাহ (২৪) এবং দক্ষিণ খলাপাড়ার আজিজুল হক (৪১)। এ ঘটনায় জামায়াতের এক নেতা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে গতকাল খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় একটি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুমন মিয়া জানান, ইফতারের আগে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আপেল, নুর ইসলাম, আকরামসহ ১০ থেকে ১৫ জন সেখানে গিয়ে জানান, এলাকাটিতে কোনো ইফতার মাহফিল করা যাবে না। এরপর কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁরা ইফতারের খাবার ফেলে দেন এবং কিছু খাবার নিয়ে চলে যান। জামায়াতের কর্মীরা অন্য স্থানে ইফতার ও নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান বিএনপির কর্মীরা।

এ বিষয়ে বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালান, তাহলে কি আমরা রক্ষা করব না? জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন, এতে আমাদের প্রায় সাত থেকে আটজন আহত হয়েছেন।’ তবে তাৎক্ষণিক তিনি আহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় দিতে পারেননি।

কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম জানান, গতকাল রাত ৯টার দিকে জামায়াতের পাঁচজন কর্মীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুজনকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় জামায়াতের স্থানীয় নেতা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আলাউদ্দিন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র র কর ম ইফত র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ