নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রীকে (২৩) যৌন হয়রানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার নাজিরপুর এলাকার নূর হোসেনের বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তরুণেরা হলেন নাজিরপুর এলাকার মো. রাজুর ছেলে মো.

রবিন (২০) এবং আলাইয়াপুর ইউনিয়নের শহীদুল ইসলামের ছেলে আরাফাত হোসেন ওরফে অন্তর (২৩)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

র‌্যাব জানায়, কলেজে ইফতার মাহফিল শেষে গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ওই কলেজছাত্রী জেলা শহর মাইজদীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে কলেজের সামনে থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠছেন। ওই ছাত্রী অটোরিকশায় ওঠার পরই পেছনে থাকা ছিনতাইকারীরা তাঁর মুখ চেপে ধরে তাঁকে যৌন হয়রানি করে এবং তাঁর চোখে রাসায়নিকজাতীয় কিছু লাগিয়ে সঙ্গে থাকা মুঠোফোন, নগদ টাকা ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়। একই সময় তারা ছাত্রীর কাছ থেকে মুঠোফোনের পাসওয়ার্ড ও বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন কোডও জোরপূর্বক হাতিয়ে নেয়।

র‌্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছিনতাইকারী চক্র ওই ছাত্রীকে প্রায় ৩০ মিনিট চৌমুহনী-মাইজদী সড়কের ইউটার্নের মধ্যে ঘুরিয়ে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে ছিনতাইকারীরা একই সড়কের একলাশপুর বাজারের উত্তরে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নেওয়ার চেষ্টাকালে ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসতে দেখে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন।

ছাত্রী যৌন হয়রানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার প্রতিবাদে ওই দিন রাতে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হন।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু সন্দেহভাজন দুই আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই র‌্যাবের পক্ষ থেকে অপরাধীদের শনাক্ত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রবিন ও আরাফাত নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ন হয়র ন ওই ছ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩

অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।  

সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীতে গুলি করে হত্যা: থানায় মামলা, অস্ত্র উদ্ধার
  • নোয়াখালীতে যুবককে গুলি করে হত্যা, ৩ জনকে আটক করে গণধোলাই
  • যুবককে তুলে নিতে বাধা, গুলিতে প্রাণ গেল যুবদল কর্মীর
  • অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩