জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজার সফরে গিয়ে সেখানকার একটি জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার দুপুর ১২টার কিছু সময় পর ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট কক্সবাজার অবতরণ করে। সেখান থেকে গুতেরেস চলে যান উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে। আর প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস যান কক্সবাজারে নির্মাণাধীন বিমানবন্দরের অগ্রগতির খোঁজ নিতে।

পরিদর্শনকালে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইউনূস। প্রকল্পের ঘর কাদের দেওয়া হয়েছে, কী প্রক্রিয়ায় দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন তিনি। তালিকা করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং দায়িত্ব বণ্টন ও জবাবদিহি নিশ্চিতে জোর দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যাদেরকে পুনর্বাসন করার কথা তাঁরাই বাড়ি-ঘরগুলোতে উঠতে পারছে কি না, অন্য কেউ এসে নিয়ম না মেনে অসাধু উপায়ে উঠে পড়ছে কি না—এগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। ভবন তো টাকা দিলেই নির্মাণ হচ্ছে, কিন্তু যে লক্ষ্যে ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছি—সেটা পূরণ না হলে তো এসবের কোনো অর্থ নেই।’

প্রকল্পের একটি জমি ২০১৭ সাল থেকে বেক্সিমকো গ্রুপ দখলে রেখেছে বলেও সংশ্লিষ্টরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এটি নিয়ে আদালতের রায় হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এত দিন ধরে অসীম দুর্নীতি চলেছে। যাদের সুবিধা পাওয়ার কথা তাদের না দিয়ে নিজেদের পছন্দের লোকজনকে দিয়ে দিয়েছে, টাকা-পয়সারও লেনদেন হয়েছে। কিন্তু যাদের ন্যায্য পাওনা ছিল তারা পায়নি।’

‘কিন্তু এ ভুল আর করা যাবে না। প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে হবে যেন কোনো ধরনের দুর্নীতি হতে না পারে। তত্ত্বাবধান ঠিকমতো হতে হবে, কার কী দায়িত্ব পরিষ্কার হতে হবে,’ বলেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ