গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠগুলোর সহাবস্থান লক্ষ্য করছি। এই রাজনৈতিক সহনশীলতার সংস্কৃতি জারি রাখতে হবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) ইফতার মাহফিল ও ‘গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান এ কথাগুলো বলেন।

শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডুজার সদস্যদের জুলাই আন্দোলনে যে নির্ভীক ভূমিকা ছিল তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি। তিনি আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের জন্য ডুজার সদস্যরাসহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সামিতির আয়োজনে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে যে সহাবস্থান ও সহনশীলতার পরিচয় পেয়েছি, সেটি ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। উপস্থিত ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে আমি সে সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।’

উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডুজা সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে ছাত্রসংগঠনগুলোর যে একতা আমরা দেখেছি, সেটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ভয় ছিল, সেটি দূর করতে আপনাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন। যেকোনো সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়িয়ে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে।

সভায় ছাত্রনেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, বাংলাদেশ ইমলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাগীব নাঈম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এবং স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ।

বক্তব্যে ছাত্রনেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 

জাতীয় নির্বাচনে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে।”

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসায় সমসাময়িক ইস্যুতে কথা বলার সময় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

আরো পড়ুন:

বাগেরহাটে হরতাল প্রত্যাহার, নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের ঘোষণা

নড়াইলে বিএনপি নেতা বহিষ্কার

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে বা কিছু আসন বেশি পাওয়ার লোভে জাতীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে কেউ যদি পিআর চায় সেটা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে।”

তিনি আরো বলেন, “উচ্চ-নিম্ন সবক্ষেত্রেই আমরা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে। তারা ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যাক, ম্যান্ডেট নিয়ে তারা তাদের ভাবনা বাস্তবায়ন করুক।”

জামায়াতসহ কয়েকটি দলের আন্দোলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন,“যারা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের দাবি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন। বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি আলোচনাধীন। এমন সময় আন্দোলন করা কতটা উচিত, সেটা জনগণ দেখবে।”

স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, “নির্বাহী আদেশে নয়, বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সমাধান হোক।”

নির্বাহী আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পরিণাম ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর চর্চায় রূপ নিবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাহী আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে গেলে স্বৈরাচারের সঙ্গে যুক্ত ২৮টি দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাচন কাদের নিয়ে হবে? এটার উদ্দেশ্য এমন হতে পারে যে, নিজেদের অতিরিক্ত সুবিধা নিতে আন্দোলনকারীরা আরো দলের নিষিদ্ধের দাবি জানাতে পারে। এতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে। এ সূত্র ধরে পতিত শক্তি সুযোগ নেবে।”

স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে না পারলে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • শাকসু নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক শর্তে ছাত্ররাজনীতি চালুর সুপারিশ
  • ভিন্ন পরিবেশে নির্বাচন, সবারই প্রথম অভিজ্ঞতা
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • রাকসু নির্বাচনে বামদের প্যানেলে নারী একজন, শক্তি ‘ধারাবাহিক লড়াই’
  • শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কেমন ছাত্ররাজনীতি দেখতে চান
  • সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে ‘সহযাত্রী’