ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না: গোলাম পরওয়ার
Published: 14th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে। এ দেশে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। দেশপ্রেমিক জনতাকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে। মাহে রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় ঐক্য অটুট রেখে দেশে ইসলামি জাগরণ তৈরির সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।’
শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরের বালুচর এলাকার একটি অভিজাত কনভেনশন সেন্টারে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘রমজান হচ্ছে বদরের মাস, কদরের মাস। এ মাসে ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের শপথ নিতে হবে। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিতে হবে।’
সিলেটের বিশিষ্টজনদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
দেশ-জাতির মঙ্গল ও জাতীয় নেতাদের মুক্তি-সুস্থতা কামনা করে ইফতার মাহফিলে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান। মাহফিলের আগে দারসুল কোরআন ও মাহে রমজানের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন হাফিজ মিফতাহুদ্দীন আহমদ।
উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইসমাইল পাটোয়ারী, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য তাজ উদ্দিন, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুকতাবিস-উন-নূর, সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল হান্নান ও আনোয়ার হোসাইন খান, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি নেতা সালেহ আহমদ, জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা এহসান উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মাহে রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সমাজের সব স্তরে ন্যায় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার শপথ নিতে হবে। জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আত্মশুদ্ধির মাস মাহে রমজান থেকে শিক্ষা নিয়ে ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের শপথ নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শপথ ন ত ব এনপ র রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। আজ (সোমবার) তাদের লাইসেন্স আবেদন অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশে বিগ টেক জায়ান্ট আসার যাত্রাটা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরেই শুরু হলো। এভাবে আসবে আরও অনেকেই।
চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে একই পোস্টে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, আজ আমরা চায়নিজ জায়ান্ট টেনসেন্টের সঙ্গে অফিশিয়ালি বসেছি। তারাও বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের দ্রুততম সময়ে পলিসি সাপোর্টের আশ্বাস দিয়েছি।
অসাইরিস গ্রুপও বাংলাদেশে আসছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে হাইপার স্কেলার ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার হবে বাংলাদেশি ডাটা ও ক্লাউড কোম্পানি যাত্রার হাত ধরে। এখানে হচ্ছে বিগ জায়ান্টদের জন্য বিশ্বমানের সিকিউরড ক্লাউড সে-আপ, যেখানে আসতে পারে মেটা, গুগলের পেলোড। এমন অভাবনীয় সব উপহার বাংলাদেশকে দিতে চলছেন অধ্যাপক ইউনূস।
কী ব্যবসা করে টেনসেন্ট
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য মতে, চীনের শেনজেনভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। টেনসেন্ট নিজেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তারা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ভিডিও গেমসহ অন্যান্য উচ্চমানের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে।
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকদের ডিজিটাল রূপান্তর ও ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য তারা ক্লাউড কম্পিউটিং, বিজ্ঞাপন, ফিনটেক ও অন্যান্য এন্টারপ্রাইজ সেবা দিয়ে থাকে। চীনের জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদানকারী অ্যাপ (ম্যাসেজিং অ্যাপ) উইচ্যাটের মালিক টেনসেন্ট। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়েও কাজ করে কোম্পানিটি।
টেনসেন্ট ২০০৪ সাল থেকে হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফরচুন সাময়িকীর ২০২৪ সালের ‘ফরচুন গ্লোবাল ৫০০’ কোম্পানির তালিকায় টেনসেন্টের অবস্থান ছিল ১৪১তম।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বের গেমশিল্পের বাজার ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা সমন্বিতভাবে সংগীত ও সিনেমাশিল্পের থেকেও বেশি। এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও গেমশিল্পে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই শিল্পের বিকাশ হলে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আর তাই বাংলাদেশের গেমশিল্প ও ডিজিটাল খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীনের অন্যতম বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট।
২০২১ সালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সে সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের ভিডিও গেমশিল্পের বাজার নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। তবে শিল্পের সঙ্গে জড়িত দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা তখন বলছিলেন, এ বাজার ৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৪২৮ কোটি টাকার মতো হবে।