তিতুমীর কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতার ওপর ছাত্রদলের হামলা
Published: 15th, March 2025 GMT
তিতুমীর কলেজের নাটোর জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের ইফতার মাহফিলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর সানির ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খাজা মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে সানিকে গুরুতরভাবে আঘাত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিদ মাহমুদ বলেন, “দুপুরে আমি গণিত বিভাগের দিকে গেলে সানি ভাই আমাকে ডাক দেয়। আমি সেখানে গিয়ে বসার কিছুক্ষণ পর আকিব এবং খাজা আসে। ওরা এসে বলে, তোমরা যে এখানে ইফতার মাহফিল করছো, কার থেকে অনুমতি নিয়েছো? এ কথা বলে তারা ব্যানার খুলতে যায়। সানি ভাই বাঁধা দিতে গেলে খাজা হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে।”
আরো পড়ুন:
বাকৃবি ও ইবি শাখা ছাত্রদলের গণইফতার
২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা
তিনি বলেন, “হামলার পর আহতাবস্থায় সানি ভাইকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার চিকিৎসার জন্য ছয়টি সেলাই দেওয়া লেগেছে।”
হামলার বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক খাজা মাইনুদ্দিন বলেন, “আমরা নাটোর জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের একটি ইফতার মাহফিল করেছি। কিন্তু আজ জাহাঙ্গীর সানির নেতৃত্বে নিষিদ্ব সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আমরা তাদের গিয়ে বাঁধা দিয়েছি। ব্যানার খুলতে গেলে জাহাঙ্গীর সানি আমার ওপর হামলা করে। সেখানে আমার ছোট ভাই আবিকও উপস্থিত ছিল।”
কিন্তু জাহাঙ্গীর সানির ওপর হামলার সময় উপস্থিত না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে আবিক বলেন, “কলেজে নাটোর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ একটাই আছে। আমি আজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখতে পাই, নাটোর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নামে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন হচ্ছে। বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির সঙ্গে আমার পূর্বের বিরোধ ছিল।”
তিনি বলেন, “বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিকে ক্যাম্পাসে পেয়ে আমি তাকে থানায় দিতে চাই, তখন সে আমার ওপর হামলা করে। পরে শুনতে পারি, জাহাঙ্গীর সানি হাতুড়ি নিয়ে খাজা মঈনুদ্দিন ভাইকে হামলা করতে আসে। তখন জাহাঙ্গীর সানির ঘুষিতে খাজা মঈনুদ্দিন আহত হয়।”
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, “এটা তাদের জেলা ছাত্র কল্যাণের বিষয়। এতে ছাত্রদলের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তবে সংগঠন যদি তার বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (১৫ মার্চ) মাগরিবের নামাজ শেষে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তিতুমীর কলেজ শাখা। এ সময় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঢাকা/হাফছা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ত ত ম র কল জ ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি