জাবির সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের স্থায়ী ভবন দাবি
Published: 17th, March 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের স্থায়ী ঠিকানা ও ক্লাসরুম সংকট নিরসনের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রশাসনিক ভবনের সামনে ইনস্টিটিউটটির শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় তারা ‘আর নয় বাহানা দিতে হবে ঠিকানা’, ‘দিতে হবে দিতে হবে স্থায়ী ভবন দিতে হবে’, ‘ভবন চাই ভবন চাই দিতে হবে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আরো পড়ুন:
জাবিতে শিবিরের ইফতারে শিক্ষার্থীদের ঢল
হলে হলে জাবি ছাত্রদলের ইফতার
বিকেল ৫টার দিকেও শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে দেখা গেছে। কর্মসূচির এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে তাকে সেখানে রেখে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৯তম আবর্তনের শিক্ষার্থী লুবাইনা ফাইয়াজ বলেন, “আমাদের ইনস্টিউটের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়কাল থেকে খুব গুরুতর একটা সমস্যায় আমরা ভুগছি, সেটা হচ্ছে আমাদের ক্লাসরুম সংকট। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে আমাদের প্রায় পুরো মাসই ক্লাস না করে হলে দিন কাটাতে হয়েছে এ সংকটের কারণে।”
তিনি বলেন, “আমাদের ওয়াশরুমসহ পারিপার্শ্বিক নানা বিষয়ে অন্য বিভাগে গিয়ে কার্যসম্পাদন করতে হয়। এ রকম একটি সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা শিক্ষার্থীরা খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের স্থায়ী ভবন দাবি করছি। আশা রাখছি, জাবি প্রশাসন আমাদের এ ন্যায্য দাবিতে পাশে থাকবেন।”
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে একই বিভাবগের ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের চাওয়া ক্লাসরুম সংকট নিরসন। সাতটি ব্যাচ চলে আসার পর কোনো একটি ব্যাচের পরীক্ষা শুরু হলে ক্লাস করা দুরূহ হয়ে যায়। ইনস্টিটিউট হিসেবে আমাদের যে অধিকার, সেটা আমরা চাই। আমরা আশা করি, বর্তমান প্রশাসন একটি স্বয়ং সম্পুর্ণ ভবনের ব্যবস্থা করে দিবেন এবং যতদিন আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হবে, শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।”
তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট ছাত্র সংসদের ভিপি সোহেল রানা বলেন, “তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের দীর্ঘদিনের ক্লাসরুম সংকট এবং স্থায়ী ঠিকানার দাবিতে আমাদের এ অবস্থান কর্মসূচি। আমরা ইতোপূর্বে উপাচার্য স্যারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি এবং গতকালও স্যারকে অবহিত করেছি, যাতে আজকের সিন্ডিকেট মিটিং থেকে আমাদের ক্লাসরুম সংকটের বিষয়ে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যে নতুন একাডেমিক ভবন করা হচ্ছে, সেখানে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের জন্য স্থায়ী ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করা হোক। সেটা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করা হোক।”
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম রাশেদুল আলম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা তোমাদের দাবিতে একমত পোষণ করছি। আমরা দ্রুততম সময়ে এ বিষয় নিয়ে আলোচনাপূর্বক সিদ্ধান্ত নেব।”
২০১৭ সালে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট নামে চালু হওয়া এ ইনস্টিটিউটের বয়স ৮ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু ক্লাসরুম সংকট কাটেনি। বর্তমানে সাতটি ব্যাচ আছে এ ইনস্টিটিউটে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?