রমজান মাস জুড়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ইফতারের আয়োজন থাকে চোখে পড়ার মতো। রমজানে একাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় প্রায় সব শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের খাবারের আয়োজন করা হয়। তবে গত বছর ২৬ মার্চ রমজান মাসে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়, যা উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। এবারো হলগুলোর পক্ষ থেকে এমন আয়োজন করবে বলে জানা গেছে।

পাশাপাশি রমজানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী, জেলা ও অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন এবং বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এভাবে রমজান জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে একের পর এক ইফতার উৎসব চলতে থাকে। 

আরো পড়ুন:

কুবিতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তদন্তে শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি

কুবিতে আপত্তিকর অবস্থায় ৪ বহিরাগত আটক

সারাদিন ক্লাস-পরীক্ষা ও টিউশনির ব্যস্ততা শেষে শিক্ষার্থীরা দলে দলে ভাগ হয়ে জড়ো হতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, কাঁঠালতলা, ক্যাফেটেরিয়ার ছাদ, বিভিন্ন বিভাগের করিডোর ও অনুষদের হলরুম এবং ছাদের আঙিনায়। তখন এসব স্থানগুলোর পরিবেশ হয়ে উঠে প্রাণোচ্ছল। 

পশ্চিমাকাশে সূর্য হেলে যাওয়ার মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর, কৃষ্ণচূড়া রোড শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। সবুজ বিস্তৃত মাঠে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে বন্ধুদের সঙ্গে কেউ ব্যস্ত গল্প-আড্ডায়। আবার কেউ ব্যস্ত ইফতার সাজাতে। তখন তাদের দেখলে মনে হবে সারাদিনের ক্লান্তি আর নেই। মসজিদে মোয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি শুনে খোলা আকাশের নিচে ইফতার করার ধুম পড়ে যায়। 

বন্ধুদের সঙ্গে ইফতারে অংশগ্রহণ করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মুনিরা আক্তার। তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে ইফতার মানেই বন্ধুদের সঙ্গে এক অন্যরকম আনন্দের মুহূর্ত। যেখানে রমজানের পবিত্রতা ও ইফতারের মাহাত্ম্য একসঙ্গে অনুভূত হয়। সারাদিনের সিয়াম সাধনার পর একসঙ্গে ইফতার করা শুধু আনন্দই নয়, বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও আত্মিক প্রশান্তির উপলব্ধি এনে দেয়। এই মিলনমেলা রমজানের শিক্ষা- সংযম, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধকে আরও গভীর করে তোলে।”

বাংলা বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রেদোয়ান আহমেদ বলেন, “সারাদিন ক্লাস করার পর যখন বন্ধুরা সবাই একসঙ্গে মিলে ইফতার করি, তখন নিজের মধ্যে একটা প্রশান্তি কাজ করে। পরিবার ছাড়া রমজানের সময়টুকু ভালোই যাচ্ছে। রুমে একা ইফতার করতে ভালো লাগে না। তাই বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিদিন ইফতার করি। ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার পর এই সময়টুকু মিস করবো।”

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কারও কোনো অপরাধ নাই

পিতার মস্তিষ্কে ঘর আমি তবু আলাদা কেউ
আছে সে নিশ্চিত জানি; দেখে না চোখ
না রূপ, না অরূপ
দল বেঁধে থাকি অসংখ্য ভাই-বোন
মা তার বুক পেতে ধরে রাখে
খণ্ড খণ্ড আমাকে, তাকে এবং তোকে

অন্ধকার ঘন হলে স্মৃতিরা ডানা মেলে—
চুপচাপ, খুব ধীরে
জেগে ওঠে হরেক জগৎ
রাজকন্যার রূপ নিয়ে বসে থাকে মা
কত স্বপ্ন, কত গল্পেরা মুহূর্তে মহিরুহ হয়
মা মেলে ধরে অপরূপ রূপ, বেহেশতের খুশবু
বাবা কামে
ঘামে
মায়ের পুকুর থেকে তুলে আনে চিতল হরিণ
আমাদের ঘুম ভাঙে
অসংখ্য কোটি বছরের ঘুম থেকে
আমরা অসংখ্য ভাই-বোন জেগে উঠি
এ আমাদের গেরিলা যুদ্ধ ছিল
পৃথিবীকে জানবার, মাটিতে সোনারোদ গন্ধ মেখে
কিছু প্রেম মানুষকে বিলাব, অথবা আমরা গোল হয়ে ঘুরি
মায়ের নাভিমূলে
মা বিস্তৃত হতে থাকে, মা প্রসারিত হতে থাকে
মা হেমন্তের নরম ভোর, অলৌকিক রোদ...

প্রতি রাতে বাবাকে হত্যা করে মা
ক্রমাগত বাবা জন্মাতে থাকে মায়ের পুষ্পিত জলাধার থেকে
আমরা বুঝতে পারি না, কে মা? কে বাবা?

মানুষ মূলত ভ্রমণে আছি
শুধু কি আমরা এই নদী–নক্ষত্র–আকাশ
ফেনিল আকাশগঙ্গা অজস্র মহাকাশ
অসংখ্য ধূলিকণা, গতির নিভৃত প্রাণ

পথে পথে যুদ্ধ হলো
ভীষণ
খানাখন্দ বাধা, ভাইয়ের চিৎকার
বোনের যন্ত্রণাকাতর মুখ, তবু
আমাকেই যেতে হয়েছে, পেছনে
কোটি কোটি ভাইবোনের মৃত্যুর মিছিল
যে যাচ্ছে, তার কোনো অপরাধ নাই
যে আসছে, তার কোনো অপরাধ নাই

কথা ছিল হাসিতে ফেটে পড়ি
এসেছি নতুন দেশে; দৃশ্যমান পেয়েছি শরীর
কেন তবে দিয়েছি হরেক চিৎকার?
কার ভয়ে?

অতীত হত্যার ছোপ ছোপ রক্ত, চিৎকার
কান্না-অভিমান
ভাইকে হত্যার অপরাধ?
বোনকে হত্যার অভিশাপ?
কিসের কান্না আমার?

স্মৃতি আমাকে কান্নার ভাষা দেয়
কান্না দেয় মুক্তি অথবা—
মানুষের কি কখনো মুক্তি হয়েছিল?
এত ধর্ম এল
দেবতা, মুনি, নবী এল বিশ্বমুক্তির বার্তা নিয়ে
তবু পৃথিবীতে শান্তি এল না
জন্মের মৃত্যু থাকে চলমান
হত্যা থাকে চলমান

আমরা মানুষেই ফিরে এসেছি বারবার
মানুষ হত্যা করে যে মানুষ টাকা নেয়
সে অর্থ সে ভালোবেসে মানুষে দেয়

এ বিশাল পৃথিবী
দখল নিয়েছে মানুষ
প্রতি ইঞ্চি জমি-পাথর-ঝরনা-বন
মানুষের পদচ্ছাপ সবর্ভূতে ব্যাপ্তিমান
দখল মানে যুদ্ধ
যুদ্ধ মানে মৃত্যু—হত্যা-লুট-মৃত্যু
এত বিপ্লব, রক্তপাত, যুদ্ধ, হানাহানি
তবু দিন শেষে ফিরে এসেছি মানুষের কাছে
মানুষের বোধ দিয়েছে নতুন পথ
গতি আর স্থিতি

হত্যা আমাদের করতে হয়
হত্যা–শান্তি
ধর্ম–হত্যা, সভ্যতা–হত্যা
পৃথিবীতে প্রতিদিন হত্যার উৎসব বসে
হাওয়াকে হত্যা করে তির ছুটে চলে সামনে
কারও কোনো অপরাধ থাকে না

কত কত মা তার সন্তানকে সমূহ হত্যা করে
নিভৃতে কান্নার উৎসব করে
কারও কোনো অপরাধ নাই

মানুষ ভালোবাসবে শুধু
সকল প্রাণীকে, পাহাড়, নদী, ঘাস
হাওয়াকে হত্যা করে তির ছুটে চলে সামনে
কারও কোনো অপরাধ থাকে না
না হাওয়ার, না তিরের...

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • স্মার্ট সিটি হবে চট্টগ্রাম, একসঙ্গে কাজ করবে গ্রামীণফোন-চসিক
  • অনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে
  • তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন
  • প্রেমিকের সঙ্গে বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি!
  • একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল