এক-এগারোর সময়কার মতো বিএনপির বিরুদ্ধে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’–এর প্রেক্ষাপট তৈরির চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচনে জেতার জন্য বিএনপির যত বেশি সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, তত বেশি বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের মুখোমুখি করা হচ্ছে।

আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিএনপির ‘অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট’–দের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। তিনি লন্ডন থেকে এই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। ‘জিয়া সাইবার ফোর্স’ (অনলাইনভিত্তিক সংগঠন)–এর উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, একটি মহল, যারা ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে, তারা একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা মিডিয়া হাউসের মাধ্যমে ঠিক এক-এগারোর সময় বিএনপির বিরুদ্ধে যেভাবে মিডিয়া ট্রায়াল করা হয়েছিল, ঠিক একই রকম একটি প্রেক্ষাপট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের কথা উল্লেখ করে অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সতর্ক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় অফিসে খোঁজ নিয়েছি, বিষয়টি এক রকম অথচ পত্রিকায় এসেছে আরেক রকম। সে জন্য আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা (অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট) এগুলো যুক্তিতর্ক দিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরবেন। মানুষের কাছে এসব নিয়ে যেতে হবে। আপনারা যুক্তিতর্ক দিয়ে তরুণ ভোটারসহ ভোটারদের আগ্রহী করতে বিএনপির ৩১ দফা তুলে ধরবেন এবং বিএনপির পক্ষে জনমত গড়ে তুলবেন। অতীতেও আপনারা করেছেন, সামনেও আপনাদেরই করতে হবে। আপনারাই সুন্দর করে করতে পারবেন।’

তারেক রহমান বলেন, অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও সবাই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ নিয়ে কাজ করছেন। এখন আগের চেয়ে বেশি কাজ করতে হবে।
অতীতে বিএনপির অবদানের কথা উল্লেখ করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বিএনপি যতবারই সরকার পরিচালনা করেছে, ততবারই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, কৃষি এবং শিল্পে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। দল হিসেবে একমাত্র বিএনপিই ভবিষ্যতে সরকারে গিয়ে কী করবে সে রোডম্যাপ (পথনকশা) দিয়েছে, আর কেউ কি তা দিয়েছে? বিএনপি দুই বছর আগেই সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে।

ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। ৫ আগস্ট আমরা নতুন করে বিজয় অর্জন করেছি। এখন নতুন করে আবারও যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এ যুদ্ধ আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার, আমাদের রাজনীতির, এ যুদ্ধ হচ্ছে জনগণকে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে সাইবার যোদ্ধারা লড়াই করেছে। তাদের এখন আবারও নতুন করে লড়াই করতে হবে। ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমাদের যোদ্ধারা জয়ী হবেন, এ বিশ্বাস আমার আছে।’
ইফতার মাহফিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের মধ্যে হুমায়ুন কবির, সোনিয়া আক্তার, মোস্তফা কামাল পলাশ, নাহিদ ওয়াসিফ ফাইজান, ওয়াহিদ-উন নবী বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন অন ষ ঠ ন ব এনপ র আম দ র ন বল ন আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।

লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।

আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা