দিনাজপুরের বিরামপুরে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবকের মারামারি থামাতে গিয়ে এক সরকারি কর্মকর্তা ছুরিকাহত হয়েছেন। আজ বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে উপজেলার ৪ নম্বর দিওড় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

আহত রাকিবুল হাসান (৩৭) বিরামপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আজ তিনি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বিনা মূল্যে ভিজিএফ খাদ্যশস্য (চাল) বিতরণকাজে দিওড় ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার (তদারকি কর্মকর্তা) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। পরে তিনি বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

ভিজিএফের চাল বিতরণকালে মারামারির সময় ওই কর্মকর্তার মাথায় মনিরুল ইসলাম (২৭) নামের এক তরুণ আঘাত করেন বলে দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মণ্ডল নিশ্চিত করেন। ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, গ্রাম পুলিশসহ ভিজিএফের সুবিধাভোগীদের সামনেই ঘটে। অভিযুক্ত মনিরুল ওই ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে।

এ ঘটনায় বিকেল পাঁচটার দিকে শিয়ালা গ্রামের মনিরুল ইসলাম, মো.

রাকিব (২২) ও আঠারোজানি গ্রামের নজরুল ইসলামসহ (২৫) অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রাকিবুল হাসান।

সমবায় কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে দিওড় ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরণকাজে তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। বেলা পৌনে তিনটার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কয়েকজন যুবকের চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনতে পান। পরে অফিসকক্ষ থেকে বেরিয়ে বাইরে দুই তরুণকে হাতাহাতি করতে দেখেন। বিশৃঙ্খলা দেখে তিনি তাঁদের মারামারি থামাতে যান। তখন মনিরুল ইসলাম নামের একজন চাকু বা ছুরিজাতীয় কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।

দিওড় ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মণ্ডল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ চলছিল। মাঠে শিয়ালা গ্রামের ১০ থেকে ১৫ জন ছেলে মারামারি করছিলেন। তখন ওই কর্মকর্তা দ্রুত সেখানে গিয়ে মারামারি থামানোর চেষ্টা করেন। দুজনকে দুই দিকে সরিয়ে দেন। তখন একটা ছেলে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। সিগারেট চাওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁরা মারামারি করছিলেন বলে তিনি শুনেছেন।

বিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দিওড়ে ভিজিএফের চাল বিতরণের একদল যুবক উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার মাথায় আঘাত করে আহত করেন। এ ঘটনায় তিনি বিকেলে থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম ত কর ন মন র ল এ ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের যুদ্ধক্ষমতা সীমিত করতে চান মার্কিন সিনেটর

এক মার্কিন ডেমোক্র্যাট সিনেটর আজ সোমবার একটি আইন প্রস্তাব করেছেন, যাতে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে না পারেন। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।

ভার্জিনিয়ার সিনেটর টিম কেইন দীর্ঘদিন ধরেই হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা আবার কংগ্রেসের হাতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে আসছেন।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, ২০২০ সালে, সিনেটর কেইন ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় ট্রাম্পের ক্ষমতা সীমিত করার জন্য একই ধরনের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। সেই প্রস্তাব সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ—উভয় কক্ষেই পাস হয় এবং কিছু রিপাবলিকান সদস্যের সমর্থনও পেয়েছিল।

তবে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভেটো ঠেকানোর মতো প্রয়োজনীয় ভোট পাওয়া যায়নি বলে সেটি কার্যকর হয়নি।

আরও পড়ুনআরও ৩৬টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন১৯ ঘণ্টা আগে

কেইন বলেছেন, তাঁর সর্বশেষ যুদ্ধক্ষমতাসম্পর্কিত প্রস্তাবটি এ বিষয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী যুদ্ধ ঘোষণা করার একমাত্র ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে, প্রেসিডেন্টের হাতে নয়। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো ধরনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অবশ্যই যুদ্ধ ঘোষণা বা সামরিক শক্তি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট অনুমোদন থাকতে হবে।

এক বিবৃতিতে সিনেটর কেইন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করা উপযুক্ত নয়, যদি না সেই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য একেবারেই অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকটি অনন্তকাল চলা সংঘাতে জড়িয়ে ফেলতে পারে।’

মার্কিন আইনে যুদ্ধক্ষমতাসংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো ‘প্রিভিলেজড’ হিসেবে বিবেচিত হয়, অর্থাৎ সিনেট বাধ্য থাকবে বিষয়টি দ্রুত আলোচনায় আনতে এবং ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে।

গত শুক্রবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ইরানে হামলা চালায়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়া। অপর দিকে, ইরান, যাদের দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে, তারা ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে এর জবাব দেয়।

উভয় দেশই তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে। ফলে বেসামরিক নাগরিকেরা নিহত ও আহত হচ্ছেন। এতে কানাডায় চলমান বিশ্বনেতাদের বৈঠকে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে যে এই দুই পুরোনো শত্রুর মধ্যে চলমান সবচেয়ে বড় লড়াই বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

ট্রাম্প একদিকে ইসরায়েলের হামলাকে প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে ইরানের সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এ হামলায় অংশ নিয়েছে। তবে তিনি তেহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধের পরিধি বাড়ানো উচিত হবে না।

গতকাল রোববার কানাডায় সম্মেলনের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি পরিস্থিতি শান্ত করতে কী করছেন? তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আশা করি একটা সমঝোতা হবে। আমার মনে হয় এখন সমঝোতার সময় এসেছে। তবে কখনো কখনো ওদের নিজের মধ্যে লড়ে নিতে হয়।’

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে ‘নো কিংস’ ব্যানারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ