বিরামপুরে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় মারামারি থামাতে গিয়ে ছুরিকাহত সমবায় কর্মকর্তা
Published: 19th, March 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরামপুরে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবকের মারামারি থামাতে গিয়ে এক সরকারি কর্মকর্তা ছুরিকাহত হয়েছেন। আজ বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে উপজেলার ৪ নম্বর দিওড় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত রাকিবুল হাসান (৩৭) বিরামপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আজ তিনি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বিনা মূল্যে ভিজিএফ খাদ্যশস্য (চাল) বিতরণকাজে দিওড় ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার (তদারকি কর্মকর্তা) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। পরে তিনি বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
ভিজিএফের চাল বিতরণকালে মারামারির সময় ওই কর্মকর্তার মাথায় মনিরুল ইসলাম (২৭) নামের এক তরুণ আঘাত করেন বলে দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মণ্ডল নিশ্চিত করেন। ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, গ্রাম পুলিশসহ ভিজিএফের সুবিধাভোগীদের সামনেই ঘটে। অভিযুক্ত মনিরুল ওই ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে।
এ ঘটনায় বিকেল পাঁচটার দিকে শিয়ালা গ্রামের মনিরুল ইসলাম, মো.
সমবায় কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে দিওড় ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরণকাজে তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। বেলা পৌনে তিনটার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কয়েকজন যুবকের চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনতে পান। পরে অফিসকক্ষ থেকে বেরিয়ে বাইরে দুই তরুণকে হাতাহাতি করতে দেখেন। বিশৃঙ্খলা দেখে তিনি তাঁদের মারামারি থামাতে যান। তখন মনিরুল ইসলাম নামের একজন চাকু বা ছুরিজাতীয় কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।
দিওড় ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মণ্ডল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ চলছিল। মাঠে শিয়ালা গ্রামের ১০ থেকে ১৫ জন ছেলে মারামারি করছিলেন। তখন ওই কর্মকর্তা দ্রুত সেখানে গিয়ে মারামারি থামানোর চেষ্টা করেন। দুজনকে দুই দিকে সরিয়ে দেন। তখন একটা ছেলে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। সিগারেট চাওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁরা মারামারি করছিলেন বলে তিনি শুনেছেন।
বিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দিওড়ে ভিজিএফের চাল বিতরণের একদল যুবক উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার মাথায় আঘাত করে আহত করেন। এ ঘটনায় তিনি বিকেলে থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম ত কর ন মন র ল এ ঘটন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি