বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চাপে থাকা ব্রাজিল দল আগামীকাল ভোরে মাঠে নামছে গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে। শুক্রবার (বাংলাদেশ সময়) সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ব্রাসিলিয়ার গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে সেলেকাওরা। 

ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, গ্যাব্রিয়েল, গিমারেস, রাফিনিয়ার মতো তারকারা ক্লাব ফুটবলে নিয়মিতই দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন। তবে জাতীয় দলের জার্সিতে যেন কিছুতেই কাঙ্ক্ষিত ছন্দ পাচ্ছে না ব্রাজিল। লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্বে ১০ দলের মধ্যে বর্তমানে পাঁচে অবস্থান করছে তারা। ১২ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ মাত্র ১৮ পয়েন্ট।  

শেষ দুই ম্যাচে জয় না পাওয়ায় এবার ঘরের মাঠে ভাগ্য ফেরানোর লক্ষ্যে মরিয়া সেলেকাওরা। কলম্বিয়ার বিপক্ষে নিজেদের মাঠে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত ব্রাজিল, ১৪ ম্যাচে একবারও হারেনি। তবে শেষ দুটি মুখোমুখি লড়াইয়ে জয় পায়নি তারা—একটিতে ২-১ গোলে হার এবং অন্যটি ১-১ ড্র। তাই এবার জয়ের বিকল্প নেই।  

বড় এই ম্যাচ সামনে রেখে সমর্থকদের মাঠে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন ব্রাজিল দলের ফুটবলাররা। ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন এক ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের প্রতি সেই আহ্বান ছড়িয়ে দেয়।

লিভারপুলের গোলরক্ষক আলিসন বলেন, 'হ্যালো ব্রাসিলিয়ার মানুষ, আমি আলিসন বেকার। কলম্বিয়ার বিপক্ষে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জের সামনে আপনাদের সমর্থন খুব দরকার। আসুন, গারিঞ্চায় একসঙ্গে জয় উদযাপন করি।'

নিউক্যাসল ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার জোয়েলিন্তন বলেন, 'আমি জোয়েলিন্তন। বৃহস্পতিবার সবাইকে গারিঞ্চায় আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আপনারা থাকলে আমাদের খেলার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে।'

দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন উলভারহ্যাম্পটনের ফরোয়ার্ড মাথেউস কুনিয়া। তিনি বলেন, 'আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিতে প্রস্তুত। গারিঞ্চায় দর্শকে ঠাসা গ্যালারি দেখার অপেক্ষায় আছি।' তবে ম্যাচের আগে চোট সমস্যা ভাবাচ্ছে ব্রাজিল শিবিরকে। নেইমার তো আগে থেকেই ছিটকে গেছেন, এবার দানিলো, মিলিতাও, ব্রিমার ও গোলরক্ষক এদেরসনও চোটের কারণে অনিশ্চিত।  

অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া বেশ আত্মবিশ্বাসী। তাদের মূল ভরসা লুইস দিয়াজ, যিনি আগের ম্যাচে ব্রাজিলকে কাঁদিয়েছিলেন। সাথে রয়েছেন ড্যানিয়েল মুনোজ, লিমা, রদ্রিগেজ, দুরানদের মতো ফুটবলাররা। এই ম্যাচের পর ব্রাজিলের সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ—চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে তারা। তাই কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে রওনা দিতে চায় সেলেকাও।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কলম ব য় র ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ইউনূস-তারেক সফল বৈঠকে স্বপ্নভঙ্গ হলো যাদের

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের বৈঠক দেশের রাজনীতির মোড়  অনেকটাই  ঘুরিয়ে দিয়েছে। নানা অনিশ্চয়তা, শঙ্কা, গুজব রাজনীতিকে ঘিরে ধরেছিল। একধরনের অনাস্থার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এ বৈঠক অনিশ্চয়তা, শঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে দিয়ে রাজনীতিতে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।

পারস্পরিক যে কাদা ছোড়াছুড়ি, দুর্নাম করার রাজনীতি, সেখান থেকে বেরিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরিতে সহায়তা করবে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চললেও বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে। এটা আমাদের রাজনীতিতে উদাহরণ হয়ে থাকবে।

বৈঠকটি সারা দেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। এখন মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। মানুষের ধারণাকে বাস্তবে রূপদান করার দায়িত্ব সরকারের।

বিএনপি এর আগে ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলেও কিছুটা সরে এসে ফেব্রুয়ারির সময়সীমাকে মেনে নিয়েছে। সরকারও এপ্রিল থেকে সরে এসে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে। উভয় পক্ষেরই কিছুটা সরে আসা, কিছুটা ছাড় দেওয়া—এটাই আমাদের রাজনীতি থেকে একদম হারিয়ে গিয়েছিল।

রাজনীতি মানেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে শত্রুতা করতে হবে, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের রাজনীতি পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু শুধু কথায় কথায় উদার হলে হবে না। কাজে-কর্মেও উদারতা দেখাতে হবে। লন্ডনের বৈঠকে সেই উদারতার কিছু নমুনা আমরা দেখতে পেলাম।

আরও পড়ুনলন্ডনে ইউনূস-তারেকের আলোচনায় বিএনপিরই কি জিত১৩ জুন ২০২৫

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে আলোচনার ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে। তা নিয়ে আপাতত আলোচনার কিছু নেই। আমরা বরং রাজনীতিতে এ বৈঠকের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি। প্রথমত, এ বৈঠক সারা দেশের মানুষকে আশান্বিত করলেও রাজনীতির কোনো কোনো পক্ষ বা ব্যক্তি হতাশ হয়েছেন।

এসব গোষ্ঠীর মূল কাজ যেন বিএনপিকে যে কোনোভাবে ঠেকানো। ব্যক্তি পর্যায়ে যারা হতাশ হয়েছেন তাদের মধ্যে  রাজনীতিবিদ ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা আছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্যই ছিল, যেকোনো প্রকারে বিএনপির রাজনীতিকে প্রতিহত করা। এ অংশ চাইছে না বিএনপির রাজনীতি সামনের দিকে এগিয়ে যাক। বিএনপির নেতৃত্বে নতুন করে বাংলাদেশের বিনির্মাণ হোক।

কেউ যদি সহজ রাজনীতির পথ পরিহার করে অহেতুক কুটিল ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তবে তারা নিজেরাই রাজনীতি থেকে হারিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও জাসদ আমাদের সামনে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

বিএনপি যে শত ভাগ শুদ্ধ ও সঠিক রাজনীতি করছে, এটা বলা যাবে না। ভুল-ত্রুটি বিএনপিরও আছে। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল, হত্যাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি নিজ দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এই পর্যন্ত চার হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে এসব কর্মকাণ্ডের জন্য। দেশের ইতিহাসে কোনো দল নিজেদের এতসংখ্যক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেনি। এ ধরনের অপরাধ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীরাই করছেন না। বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরাও এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এটা আমাদের রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।

এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা লাগবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের রাজনীতি এই অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তাই রাজনৈতিক সরকার লাগবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

এ ধরনের পরিস্থিতি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এর সঙ্গে রাজনৈতিক শক্তিরও প্রয়োজন হয়। বিকল্প অর্থনৈতিক কর্মসূচিও লাগে। এ জন্যই বিএনপি বারবার নির্বাচনের কথা বলে আসছে। আমরা মনে করি, নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক অবস্থান উন্নতি ঘটবে। বিএনপির বিকল্প অর্থনৈতিক পরিকল্পনা আছে।

বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণা

সম্পর্কিত নিবন্ধ