ভিনির শেষ মুহূর্তের গোলে নাটকীয় জয় ব্রাজিলের
Published: 21st, March 2025 GMT
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে ব্রাজিল। ২০২৬ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে জয় ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ছিল না সেলেকাওদের সামনে। ম্যাচের ৯৮ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ১-১ সমতায়। ঠিক সেই সময় নাটকীয় মোড় নেয় খেলা, ৯৯তম মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দুর্দান্ত গোলে কষ্টার্জিত তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে ব্রাজিল।
এই জয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে আসল দরিভাল জুনিয়রের দল। ১৩ ম্যাচে ব্রাজিলের পয়েন্ট এখন ২১। আর ব্রাজিলের কাছে হেরে কলম্বিয়া নেমে গেছে ৬ নম্বরে। ১৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৯। ২৬ মার্চ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর লক্ষ্যে এই জয় বড় প্রাপ্তি ব্রাজিলের জন্য।
বিআরবি গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বক্সের মধ্যে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে ফাউল করায় পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করে দলকে লিড এনে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বার্সেলোনা তারকা রাফিনহা। তবে সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ব্রাজিল। ৪১ মিনিটে লুইস দিয়াজের দারুণ এক ফিনিশিংয়ে সমতায় ফেরে কলম্বিয়া। ১-১ স্কোরলাইনে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে দু’দলের খেলায় ছিল ছন্দহীনতা, সুযোগ তৈরির অভাব। ম্যাচ তখন এগিয়ে যাচ্ছিল ড্রয়ের দিকে। রেফারি নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করেন আরও ১০ মিনিট। গারিঞ্চা স্টেডিয়ামের দর্শকরাও যখন হতাশা নিয়ে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় তখনই জ্বলে উঠলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। শেষ বাঁশি বাজার এক মিনিট আগে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে বলে জাল জড়ান এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়েই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ২৬ মার্চের সুপার ক্লাসিকোর আগে প্রস্তুতিটা সেরে রাখলেন তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কলম ব য় ব শ বক প ব ছ ই
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।