সম্প্রতি দেশের আট জেলায় একাধিক কৃষি উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ করেছে শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)। দুই প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, পটুয়াখালী, পাবনা ও ফরিদপুরের কৃষকদের উন্নত মানের বীজ, যন্ত্রপাতি ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নত করা, টিকে থাকার সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং উৎপাদন বাড়ানো। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। 
ব্যাংকটি জানিয়েছে, এ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় এক লাখ কৃষক সরাসরি উপকৃত হয়েছেন। উচ্চমূল্যের চারা উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মোট ৩০০টি পলিহাউস স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া উন্নত মানের উপকরণ সহায়তা হিসেবে কৃষকদের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ কেজি সবজি বীজ এবং ৩০০ কেজি তরমুজের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। কর্মসূচির আওতায় ২৮০ হেক্টর পতিত জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য এবং ৩৩০ হেক্টর পতিত জমি সূর্যমুখী উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করতেও সাহায্য করেছে। এ ছাড়া কৃষকদের জীবিকা নির্বাহের জন্য মোট ১ লাখ ২৫ হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স এবং ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিংয়ের কান্ট্রি হেড বিটপী দাস চৌধুরী বলেন, ‘আটটি জেলার প্রায় এক লাখ কৃষককে আধুনিক প্রযুক্তি ও টেকসই কৃষিকাজ পদ্ধতিতে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এসব উদ্যোগ দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি এবং মানসম্পন্ন ইনপুট প্রদানের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়িয়েছে। কৃষিতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা কৃষকদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়াতে বিনিয়োগ করছি।’ 
প্রবৃদ্ধি ও টিকে থাকার যাত্রায় ১২০ বছর ধরে দেশের অবিচল সঙ্গী হিসেবে অবদান রেখে চলেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। বিশেষত, কৃষি খাতকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক উন্নয়ন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ দেশের অন্যতম ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থা। ১৯৮০ সালে অধ্যাপক ড.

হোসনে আরা বেগম সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সংস্থাটি দেশের ৬৪টি জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ষকদ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্‌রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ