রমজানে মহানবী (সা.) যেভাবে বক্তব্য রাখতেন
Published: 22nd, March 2025 GMT
রমজান মাসে মহানবী (সা.) সাহাবিদের বিভিন্নভাবে উপদেশ দিতেন, ছোট ছোট সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের সত্য ও ন্যায়ের পথ বাতলে দিতেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশ দিনে ইতেকাফ পালন করতেন, মসজিদে খেজুর গাছের শাখায় বানানো তাঁবু টানাতেন। আমরা একদিন তার তাঁবুর পাশে উপস্থিত হলাম। তিনি মুখমণ্ডল বের করে বললেন, ‘নামাজ আদায়কারী তার প্রতিপালকের কাছে একান্তে প্রার্থনা করে, তোমাদের প্রত্যেকের ভাবা উচিত, কীভাবে সে তার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করবে। (অন্যকে কষ্ট দেয় এমন) উচ্চ স্বরে তোমাদের কেউ যেন তিলাওয়াত না করে।’’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৫,৩৫৯)
আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫
ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন, ‘তিনি খুব যত্নসহকারে রমজানের দিনগুলোতে আমাদের উপদেশ দিতেন এবং আমরা বিরক্ত হচ্ছি কি না তার প্রতিও খেয়াল রাখতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৮)
এ-সময় রাসুল (সা.) ছোট ছোট বাক্যে সাহাবিদের সৎকর্মের আহ্বান জানাতেন। যেমন তিনি বলতেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ, রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ মেশকের তুলনায় আল্লাহ তাআলার নিকট অধিক প্রিয়। (আল্লাহ বলেন) রোজাদার সে আমার উদ্দেশ্যে তার পানাহার ও প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করে, রোজা আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান। পুণ্যকর্মের প্রতিদান দশগুণ।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৮৯৪)
কিংবা বলতেন, ‘রোজাদারের আনন্দের মুহূর্ত দুটি—ইফতার এবং প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫১)
অপর হাদিসে এসেছে, আবু হোরাইরা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলকে রমজানের রাত যাপনে উৎসাহ দিতে শুনেছি। তিনি বলছিলেন, ‘প্রতি ইফতারকালে আল্লাহ তাআলা অনেককে মুক্তি প্রদান করেন, আর তা প্রতি রাতে ঘটে থাকে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৬৪৩)
রমজান মাসে নামাজের পরে রাসুল (সা.) সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘ফজরের নামাজের জন্য তিনি বেরোলেন; নামাজ সমাপ্ত করে মানুষের দিকে ফিরে তাশাহ্হুদ পাঠ করে বললেন, আমি তোমাদের অবস্থান আমার জানা, কিন্তু আমার ভয় হয় তোমাদের ওপর তারাবি ফরজ করে দেওয়া হবে এবং তোমরা তা পালনে অক্ষম হয়ে পড়বে। (বুখারি, হাদিস: ৯২৪)
আরও পড়ুনযেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার১০ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।
অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।