বিএনপির দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে বন্ধ সাড়ে তিনশ বছরের মেলা
Published: 22nd, March 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে বন্ধ হয়ে গেল সাড়ে তিনশ বছরের ঐতিহ্যবাহী কাটাগড় দেওয়ান শাগির শাহর মেলা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় প্রশাসন মেলার অনুমতি দেয়নি।
প্রতিবছর ২৬ মার্চ আধ্যাত্মিক সাধক দেওয়ান শাগির শাহর তিরোধান দিবসে উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রামে এ মেলা হয়ে থাকে। এর আগের দিন থেকে শুরু হয়ে সপ্তাহব্যাপী চলে এ মেলা। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের কয়েক হাজার দোকান বসে। থাকে নাগরদোলা, জাদু প্রদর্শনী, মোটরসাইকেল খেলা, পুতুল নাচ। মেলায় কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। মেলা উপলক্ষে এলাকার ১০-১২ গ্রামে শুরু হয় আনন্দ উৎসব।
স্থানীয়দের দাবি, কয়েকশ বছরের মধ্যে কোনো কারণেই মেলাটি বন্ধ হয়নি। এমনকি ১৯৭১ সাল এবং করোনা মহামারিতেও স্বল্প পরিসরে মেলাটি চালু ছিল। দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউল আজম বাবু মিয়া কমিটির সভাপতি হয়ে মেলা পরিচালনা করেছেন। পট পরিবর্তনের কারণে তারা দৃশ্যপটের বাইরে চলে গেছেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ১৫ মার্চ স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষ থানায় দুটি মামলা করে। দুই পক্ষ মেলা পরিচালনার জন্য দুটি কমিটি জমা দেয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় প্রশাসন মেলার অনুমতি না দিয়ে বন্ধ করে দেয়। মেলার এক সপ্তাহ আগেই বিভিন্ন পণ্যের দোকান নিয়ে দোকানিরা চলে আসেন মেলা চত্বরে। এ বছর অনেকে দোকানপাট নিয়ে এসেও ফিরে গেছেন।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দেওয়ান শাগির শাহর ৩৫১তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে গ্রামীণ মেলাটি আগামী ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত অনুমোদনের জন্য রূপাপাত ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আক্কাচ মন্টু ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিচুর রহমান টিটু ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর গত ৫ মার্চ আবেদন করেন। অপরদিকে ১৬ মার্চ সাত দিনের অনুমোদনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন কাটাগড় দেওয়ান শাগির শাহর মাজারের খাদেম ইরাদত ফকির।
আনিচুর রহমান টিটু পক্ষের প্রস্তাবিত মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজাদ মোল্যা বলেন, সাড়ে তিনশ বছর ধরে এ মেলা হচ্ছে। এ বছর স্থানীয়দের মধ্যে কোন্দলের কারণে দুই পক্ষ মেলার কমিটি বানিয়ে অনুমতির জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করে। মেলা কমিটি নিয়ে দুই পক্ষে মারামারি হয়। মারামারির ঘটনায় মামলাও হয়। অনেকেই জেলে আছেন। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রশাসন জানিয়েছিল, যদি দুই পক্ষ মিলেমিশে মেলা করতে পারেন, তাহলে অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু দুই পক্ষ এক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এ বছর মেলা বন্ধ থাকবে।
প্রস্তাবিত মেলা কমিটির এক পক্ষের সভাপতি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আক্কাচ মন্টু বলেন, অপর পক্ষ বিএনপি নামধারী আওয়ামী লীগ। তারা চায় না এবার মেলা হোক। তাদের কারণেই মেলা বন্ধ হয়ে গেল। খাদেমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক শুধু ওরস মাহফিলের অনুমোদন দিয়েছেন। দোকানপাট বসবে না।
বোয়ালমারী থানার ওসি মাহামুদুল হাসান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে– এই আশঙ্কায় মেলার অনুমোদন না দেওয়ার জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বোয়ালমারীর ইউএনও তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, স্থানীয় দুটি পক্ষের হানাহানির কারণে নেতিবাচক প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় পক্ষগুলোই চায় না মেলা হোক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ল র অন ম ব এনপ র কম ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে বন্দরে প্রস্তুুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত
শারদীয় দুর্গোৎসব -২০২৫ ইং উদযাপন উপলক্ষে বন্দরে প্রস্তুুতি মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় উপজেলা মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সহকারি ভূমি কমিশনার রহিমা আক্তার ইতির সঞ্চালনায় প্রস্তুতি মূলক সভায় বক্তব্য রাখে বন্দর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টিন আশিকুর রহমান বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনিছুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শিখন সরকার, বন্দর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র বিশ্বাস, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মঞ্জুর হাসান মঞ্জু, বন্দর উপজেলা জামায়াত ইসলামী আমির মাওলানা খোরশেদ আলম, বন্দর উপজেলা জামায়াত ইসলামী রাজনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা রেজাউল করিম, ও বন্দর থানা ২২ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি শিবু দাস প্রমুখ।
এ ছাড়াও প্রস্তুতি মূলক সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বন্দরে ২৮টি পূজামন্ডপের সভাপতি/ সাধারন সম্পাদকসহ বন্দর ফায়ার সার্ভিস ও বন্দর পল্লী বিদ্যুৎ এর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রস্তুতি মূলক সভায় বক্তরা বলেন, বন্দরে প্রতিটি পূজামন্ডপে সিসি ক্যামেরা আওতায় আনার জন্য সভায় একমত পোষন করা হয়।
এ ছাড়াও পূজা শুরু পূর্বে রাস্তার পাশে ল্যাম্পপোষ্ট গুলো সচল করার প্রতি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অবগত করা হয় । ২৮টি পূজামন্ডপে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন।